Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

যেসব কারণে খারকিভ থেকে পিছু হটল রাশিয়া (২০২২)

Share on Facebook

বিবিসি, আল–জাজিরা ও দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে লিখেছেন অনিন্দ্য সাইমুম ইমন।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ সাত মাসে গড়িয়েছে। যুদ্ধের শুরুর দিকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের বিশাল এলাকা দখল করে নিয়েছিল রুশ বাহিনী। তবে সময় যত গড়িয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার সাফল্য ততই ফিকে হয়েছে। সর্বশেষ ইউক্রেনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ থেকে পিছু হটতে হয়েছে রাশিয়ার সেনাদের।

পশ্চিমা অস্ত্রে সজ্জিত ইউক্রেনের বাহিনীর জন্য খারকিভের দখল ফিরে পাওয়া বড় অর্জন বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, খারকিভ থেকে পিছু হটা কি মস্কোর সামরিক ব্যর্থতা, নাকি কৌশল। তাই খারকিভে ইউক্রেনের সেনাদের আপাতসাফল্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন অনেকেই। এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের চেষ্টাও চলছে।

প্রত্যাশার তুলনায় কম সময়ে খারকিভ দখলমুক্ত করেছেন ইউক্রেনের সেনারা। সেখানকার ৩০টির বেশি শহর ও গ্রাম থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এসব খবরে বলা হয়েছে, ন্যূনতম প্রতিরোধ ছাড়াই পিছু হটেছে রুশ বাহিনী। অনেক জায়গায় গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জাম, সাঁজোয়া যান রেখে পালিয়েছে তারা।

খারকিভ দখলমুক্ত করাকে ইউক্রেনের বাহিনীর ‘বড় অর্জন’ বলছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব ব্রেমেনের রাশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক নিকোলাই মাইত্রোখিন। তিনি বলেন, ‘মাত্র চার দিনে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার চার মাসের সফলতাকে বাতিল করে দিয়েছেন। খারকিভে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে রুশ বাহিনী।’

নিকোলাই মাইত্রোখিনের মতে, খারকিভের ঘটনা বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে এনেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, রুশ সেনারা কেন পিছু হটলেন? তাঁর মতে, পিছু হটার বড় একটি কারণ পার্শ্ববর্তী মস্কোশাসিত এলাকা দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা। এ জন্য খারকিভের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে পিছপা হয়নি মস্কো।

এ বিষয়ে নিকোলাই বলেন, খারকিভ থেকে পিছু হটার সিদ্ধান্ত মস্কোর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই এসেছে। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া সেখানকার অবশিষ্ট রসদ ও যোদ্ধাদের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিরাপত্তায় মোতায়েন করেছে। মস্কো আগে থেকে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে।

খারকিভ থেকে পিছু হটার ঘটনা গত এপ্রিলের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয় বলেও মন্তব্য করেছেন নিকোলাই। তিনি বলেন, গত এপ্রিলে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল থেকে সেনাদের সরিয়ে নেয় মস্কো। মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় এবার খারকিভে একই ঘটনা ঘটেছে।

এপ্রিলে যখন চারটি অঞ্চল থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়, তখন রাশিয়া বলেছিল, তারা ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে রুশনিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেবে। কিন্তু এখন খারকিভ থেকেও সেনা সরিয়ে নিতে হয়েছে; যদিও ইউক্রেনে লক্ষ্য অর্জনে অবিচল থাকার কথা জানিয়েছে মস্কো। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ‘সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে, ততক্ষণ তা চলতে থাকবে।’

নিকোলাই মাইত্রোখিনের ভাষায়, রাশিয়ার পক্ষ থেকে যেটাই বলা হোক না কেন, খারকিভের নিয়ন্ত্রণ হারানো রুশ সেনাদের জন্য বড় একটি ধাক্কা। তিনি আরও বলেন, গত এপ্রিলের ঘটনাকে ইউক্রেনের সমরবিদ ও সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকেই রাশিয়ার যুদ্ধকৌশলের ‘গুরুতর ভুল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁদের মতে, এবারও তা–ই হয়েছে। খারকিভে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের প্রশিক্ষণে ঘাটতি ছিল।

অনেকটা একই মত রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ইউরি ফেদোরোভের। তিনি বলেন, খারকিভে যুদ্ধ করার জন্য পাশের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক থেকে অনেককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে বেসামরিক মানুষও ছিলেন। তাঁদের কাউকেই যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। অনেকের যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা ছিল না। অনেকেই বুঝতে পারেননি, তাঁরা কেন যুদ্ধ করতে এসেছেন। কেনইবা তাঁরা প্রাণ উৎসর্গ করতে চলেছেন। তাই তাঁদের সামনে পিছুহটা ছাড়া উপায় ছিল না।

শুধু কি বেসামরিক মানুষ, রাশিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদেরও মুক্তি দিয়ে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে বলেও খবর এসেছে। মানবাধিকারকর্মী ওগলা রোমানোভা গত শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, রাশিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত সাত থেকে দশ হাজার ব্যক্তিকে ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশ নিতে পাঠানো হয়েছে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের দুর্বলতা, মস্কোর ভুল কৌশল, সময়মতো অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনে ব্যর্থতা খারকিভে রুশ বাহিনীকে ডুবিয়েছে।

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আগেই অভিযোগ করা হয়েছিল, বেসামরিক মানুষকে জোর করে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োজিত করেছে মস্কো। এমনকি কারাগারে থাকা অনেক অপরাধীকেও মুক্তি কিংবা বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার শর্তে সম্মুখসমরে পাঠানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরি ফেদোরোভ ও ওগলা রোমানোভার মন্তব্যে ইউক্রেনের পুরোনো অভিযোগের সত্যতা মেলে।

খারকিভ থেকে পিছু হটার জন্য রণকৌশলের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করেছেন সাবেক রুশ সেনাসদস্য মারাত গাবিদুল্লিন। তিনি সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর হয়ে লড়াই করেছেন। মারাত বলেন, ‘খারকিভের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রমাণ করে যে আমাদের জেনারেলরা যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। তাঁরা বাস্তবতার নিরিখে কৌশল নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকায় যুদ্ধ করার জন্য দুর্বল ইউনিট মোতায়েন করেছেন। এ থেকে বোঝা যায়, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হয় যুদ্ধক্ষেত্রের প্রকৃত তথ্য পাচ্ছে না, নয়তো কিছু আড়াল করার চেষ্টা করছে।’

রুশ সেনাদের খারকিভে এভাবে বেকায়দায় পড়ার পেছনে দেশটির সেনার সংখ্যায় ঘাটতির কথা বলেছে ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এ যুদ্ধ সম্ভবত সামনের বছরে গড়াবে। তবে ইউক্রেন বাহিনী যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ তাদের অনুকূলে এখনো ধরে রাখতে পেরেছে। পশ্চিমাদের দেওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা হাইমোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেমের (হিমার্স) মতো আধুনিক সমরাস্ত্রের সদ্ব্যবহার এবং কার্যকর যুদ্ধকৌশলের কারণে তারা এখন পর্যন্ত এটা সম্ভব করতে পেরেছে।

রাশিয়ার কর্মকর্তাদের বক্তব্যেও সেনাঘাটতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। খারকিভ অঞ্চলে নিয়োজিত রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তা ভিতালি গনচেভ বলেন, গত সপ্তাহে ইউক্রেন বাহিনী যে হামলা শুরু করে, সেখানে রুশ সেনাদের তুলনায় তাদের বহর ছিল অনেক বড়। একজন রুশ সেনার বিপরীতে ইউক্রেনের সেনার সংখ্যা দাঁড়ায় আটে।

খারকিভ থেকে পিছু হটার বিষয়টি মানতে পারছেন না রাশিয়ার মিত্রদের অনেকেই। তাই তো ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সক্ষমতার সমালোচনা করেছেন চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে গত শনিবার ১১ মিনিট দীর্ঘ একটি ভয়েস মেসেজ পোস্ট করেন কাদিরভ। এতে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার এ সামরিক অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে না। যাঁরা রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আছেন, আমি তাঁদের মতো সমরকৌশলবিদ নই। তবে এটা স্পষ্ট, কিছু ভুল হয়েছে। আমি মনে করি, তাঁরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন।’

এদিকে খারকিভের নিয়ন্ত্রণ হারানোর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীর দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস। ওয়াশিংটনে এক সম্মেলনে বার্নস বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে পুতিন যখন হামলার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি ইউক্রেনীয়দের সংকল্পকে অবমূল্যায়ন করেছিলেন। এখন কিয়েভের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের ব্যাপারেও একই ভুল করছেন তিনি। এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে রাশিয়ার অর্থনীতি ও রুশ প্রজন্ম ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

খারকিভ ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। অঞ্চলটি রাশিয়ার সীমান্তবর্তী। ওই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দুই শহর ইজিয়াম ও কুপিয়ানস্ক পুনর্দখল ইউক্রেন বাহিনীর জন্য কৌশলগতভাবে বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ দুই শহরে খারকিভ অঞ্চলের প্রশাসনিক দপ্তর গড়ে তুলেছিল রাশিয়া। সেনাদের রসদ যেত শহর দুটি থেকে। তাই অঞ্চলটি থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দেওয়ার ঘটনা চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

চলমান যুদ্ধে ইজিয়াম শহরে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রুশ হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে শহরটির ৮০ শতাংশে বেশি অবকাঠামো। এখন রুশ সেনাদের হটিয়ে দেওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দখলদার বাহিনীর অপকর্মের বিষয়ে জানাতে শহরটির মানুষকে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, রুশ সেনাদের অপরাধের বিচার করা হবে।

***বিবিসি, আল–জাজিরা ও দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে লিখেছেন অনিন্দ্য সাইমুম ইমন।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ১৩, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ