Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থায় ভারত ও চীন (২০২২)

Share on Facebook

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্বোধনের ক্ষেত্রে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরও এক ধাপ এগিয়ে। তিনি সম্বোধন করেন ‘সবচেয়ে ভালো ও অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু’ বলে।

কিন্তু পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর এশিয়ার দুই শক্তিধর দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গে মস্কোর অতীতের উষ্ণ সম্পর্ক প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

চীন ও ভারত উভয়ই ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সরাসরি নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদে ওঠা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল উভয় দেশ।

যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার যারা নিন্দা জানাবে না, তাদের মস্কোর সঙ্গে যুক্ত দেশ হিসেবে বিবেচনা করবে ওয়াশিংটন।

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দুই দেশ চীন ও ভারত আন্তর্জাতিক চাপে পড়েছে। চাপটা হলো, হয় বেইজিং ও নয়াদিল্লিকে ইউক্রেনে রুশ হামলার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, নয়তো তাদের বেআইনি কাজের সহযোগীর তকমা ঘাড়ে নেওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হবে।

চীন ও ভারতের মধ্যে কোনো দেশই যেহেতু এখন পর্যন্ত মস্কোর বিরুদ্ধে যায়নি, তাতে প্রতীয়মান হয়, এশিয়ায় এখনো রাশিয়ার ভালোই প্রভাব রয়েছে।

প্রভাব থাকার কারণও রয়েছে। রাশিয়ার অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের অন্যতম ক্রেতা এশিয়া। এশিয়ার সঙ্গে শর্তহীন বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে মস্কো। বিপরীতে তারা পশ্চিমাদের সঙ্গে এশিয়ার সম্পর্ককে দুর্বল করে রাখতে পারছে।

ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমারা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নেতারা এসব পদক্ষেপকে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মতাদর্শিক লড়াই হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন।

কিন্তু এশিয়ার দুই শক্তিধর দেশ চীন ও ভারতের কাছে পশ্চিমাদের কথিত এই মতাদর্শিক লড়াই ঝাপসা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন ও ভারত যে অবস্থান নিয়েছে, সে ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের স্বার্থের দিকটাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

চীন ও রাশিয়া

বিশেষ সামরিক অভিযানের কয়েক সপ্তাহ আগে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া বিপুল সেনা ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন কর। এই সময়ে চীনা প্রেসিডেন্ট সি ও রুশ প্রেসিডেন্ট যতটা ঘনিষ্ঠ হন, ততটা ঘনিষ্ঠ তাঁদের আগে কখনো হতে দেখা যায়নি।

বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিকের শুরুতে পাঁচ হাজার শব্দের এক বিবৃতিতে পুতিন ও সি বলেন, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ‘সীমা’ নেই।

গত বছর রাশিয়া ও চীনের মধ্যে রেকর্ড ১৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়। ঐতিহ্য মেনে মস্কো-বেইজিং নিয়মিত বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়া করে।

দেশ দুটির মধ্যে চার হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। রাশিয়ার সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার চীন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু মনে করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং

তবে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক জোরালো হওয়ার প্রধান কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উভয়ের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক।

বাণিজ্যসহ নানা ইস্যুতে বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কে উত্তেজনা চলছে। আবার মস্কোর সঙ্গেও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে উত্তেজনা রয়েছে। বিষয়টি বেইজিং ও মস্কোকে আরও কাছে আসতে বাধ্য করেছে।

ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে এখন মস্কো ও বেইজিংয়ের মধ্যকার কথিত সীমাহীন সম্পর্ক কেমন, তার পরীক্ষা হয়ে যাবে।

ইতিমধ্যে একটা প্রশ্ন উঠেছে যে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান নিয়ে পুতিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কতটা জানতেন সি।

সম্প্রতি পশ্চিমা গোয়েন্দাদের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়া যে সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে, তা আগেই জানত চীন। এমনকি ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে চীনা কর্মকর্তারা রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বেইজিংয়ের শীতকালীন অলিম্পিক শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন; অর্থাৎ শীতকালীন অলিম্পিক শেষ হওয়ার আগে যাতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে না যায়, সে কথা বলেছিলেন চীনা কর্মকর্তারা।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের এখন পর্যন্ত নিন্দা জানায়নি চীন। এমনকি ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানকে ‘আগ্রাসন’ পর্যন্ত বলছে না চীন।

বেইজিং বলেছে, নিরাপত্তা নিয়ে মস্কোর যে বাস্তব উদ্বেগ, তা তারা অনুধাবন করতে পারছে। একই সঙ্গে তারা মস্কোর এই উদ্বেগকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার জন্য পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া চীন জানিয়ে দিয়েছে যে মস্কোর ওপর তারা একতরফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দলে নেই।

তবে সমস্যা হলো, ইউক্রেনের সঙ্গেও বেইজিংয়ের সম্পর্ক ভালো। ইউক্রেন চীনকে তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার বিবেচনা করে। ২০১৭ সালে ইউক্রেন সির বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) যোগ দেয়। গত বছর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, বিআরআই প্রকল্পের মাধ্যমে ইউরোপে চীনের সেতু হিসেবে কাজ করবে তাঁর দেশ।

ফলে ইউক্রেনের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে চীনকে। তাদের সান্ত্বনা দিতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই ফোনালাপে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সংঘাত দেখে বেইজিং গভীরভাবে মর্মাহত।

চীনকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্কের সম্ভাব্য পরিণতির দিকটি নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। কারণ, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান পশ্চিমা দেশগুলোকে এক করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমাদের মধ্যে এমন ঐক্য দেখা যায়নি। ইউক্রেন ইস্যুতে চীন যে অবস্থানটি নিয়েছে, তা পশ্চিমাদের নজর এড়ায়নি।

ফলে পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে চীন। এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে চীন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলোর মাধ্যমে চীনের ওপর চাপ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

ভারত ও রাশিয়া

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ। নিজের সীমান্তের পাশাপাশি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানোর উপায় খুঁজছে ভারত।
এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘কোয়াড’ নামের একটি অনানুষ্ঠানিক নিরাপত্তা জোট গঠন করা হয়েছে। এই জোটকে ‘চীনবিরোধী’ বলছে বেইজিং। এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ভারত। আরও আছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
সাম্প্রতিক সময়ে কোয়াডকে বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘চীনবিরোধী’ জোটে ভারত থাকলেও, মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক বেশ উষ্ণ। রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। ভারতের সমরাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে রাশিয়া।

সীমান্তে চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের কাছে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জামের বেশ গুরুত্ব রয়েছে। ওদিকে ভারতের আরেক প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গেও নয়াদিল্লির সম্পর্ক বরাবরের মতোই ‘শত্রুভাবাপন্ন’।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

২০১৮ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করে ভারত। এই চুক্তির আওতায় ভারতকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিচ্ছে রাশিয়া। এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রতিরোধ গড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকির সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাওয়ার প্রক্রিয়া থেকে বিরত হয়নি ভারত।

নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের কূটনীতি ও নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক হ্যাপিমন জ্যাকব বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক দিয়ে ভারত দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করছে না; বরং নিজের উঠানে যে বিপদ, তা নিয়েই ভারত এখন চিন্তিত।

ভারতের উভয়সংকটের প্রসঙ্গ তুলে অধ্যাপক জ্যাকব বলেন, ‘বিষয়টি এমন নয় যে ভারত পশ্চিমা দেশগুলোর বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে কিংবা রাশিয়ার পক্ষ নিচ্ছে। ভারত সরকার স্পষ্ট করে রাশিয়াকে সমর্থনও করেনি। কিন্তু নয়াদিল্লিকে এ ক্ষেত্রে আরও সতর্ক ও সূক্ষ্ম অবস্থান নিতে হবে।’

ইউক্রেন ইস্যুতে এখন পর্যন্ত ভারতকে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

মোদি এখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানাননি। এর বদলে তিনি অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ ও সব পক্ষকে আলোচনায় বসে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্বের সম্পর্ক বহুদিনের। সোভিয়েত আমল থেকেই নয়াদিল্লির পাশে মস্কো। প্রতিরক্ষাসহ নানাভাবে ভারতকে সাহায্য করে আসছে রাশিয়া। পুতিনের সঙ্গেও মোদির সম্পর্ক ভালো। গত বছর পুতিন যে দুটি দেশ সফর করেন, তার মধ্যে একটি ছিল ভারত।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ২০০৮ সালে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ছিল প্রায় শূন্যের কোটায়। ২০২০ সালে তা ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়ায়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চায় ভারত।

কিংস কলেজ লন্ডনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক হর্ষ ভি পন্থ বলেন, চীনের বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য ভারতের রাশিয়াকে প্রয়োজন। ভারতকে রাশিয়ার সঙ্গে থাকা তার ঐতিহাসিক বন্ধন এবং পশ্চিমের সঙ্গে নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

*****সিএনএন অবলম্বনে

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ