Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সুক্ষ্য প্রতিশোধ

Share on Facebook

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সকল বানিজ্যিক ব্যাংগুলির প্রতি একটি সারকুলার বা প্রজ্ঞাপণ জারি হয়েছে যার অর্থ হলো সকল আমানতকারী যেন অতি দ্রুত ব্যাংকে জমা দেওয়া তাদের কাগজ পত্র গুলি হাল নাগাদ করে ফেলেন।

এই সংক্রান্ত একটি ম্যসেজ বা বার্তা আবিদ খানের মোবাইলে এসেছিল, তবে তাঁর ধারণা ছিল তার একাউন্টে কোন সমস্যা নেই সবই আপডেড আছে নতুন কোন তথ্য যোগ করারও প্রয়োজন নেই। প্রতি মাসের দশ তারিখের মধ্যে বাড়ি দিতে হয়, আর বাড়ি ভাড়া নিয়ে মা ও ছোট্ট বোনকে যেন কোন কথা শুনতে না হয় চাকুরী জীবন শুরু করার পর থেকে আবিদ সব সময়ই স্বচেষ্ট থেকেছে। এবার অফিসের বেতন একটু লেটে হলো মাসের দশ তারিখে আর বেতনের টাকা তার ব্যাংকে জমা হলো ঐ দিন বিকালে।

বাসায় ফিরে এটিএম কার্ড নিয়ে বুথে কার্ড পাঞ্চ করার পরে এটিএম মেসিনের স্ক্রীনে কিছু লেখা উঠলো যার অর্থ হলো টাকা উত্তোলনে নিশেধাজ্ঞা আছে, আবিদের মনে মনে খটকা লাগলো, আবার ব্যালেঞ্চ চেক করলো বেতনের টাকা জমা হয়েছে। এটিএম বুথের দারোয়ান নিজে থেকে বলল অনেকে টাকা তুলতে পারছে না কিছু সমস্যা হয়েছে তবে আপনাদের ব্যাংকে দেখা করতে হবে। আবিদ বেশ অসহায় অনুভব করছিল, মাকে ঘটনাটা বলতেই মা বলল – এমন নানান সমস্যা হতে পারে এটা যান্ত্রিক যুগ বাবা, চিন্তা করিস না আমি বাড়িওয়ালীকে বুঝিয়ে বলব।

এগারো তারিখে আবিদ খান অফিসে গিয়ে সকাল সকাল ব্যাংকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তবে অনেক অফিস কলিগের ব্যাংক একাউন্ট ইতিমধ্যে ফ্রীজ হয়ে গেছে হাল নাগাত না করার জন্য কথাটা শুনে মনে মনে বেশ স্বস্থি পেল তবে ব্যাংক একাউন্টটা আজই সচল করা দরকার। বাড়ি ভাড়া দেওয়া প্রয়োজন, মায়ের হাতে মাসের টাকা তুলে দেওয়া দরকার।

ঝামেলা ছাড়া আবিদ তার ব্যাংকে পৌঁছালো, কাষ্টোমার সার্ভিস সেকসনে কথা বলার জন্য সে টোকেন নিল প্রতিটি কাউন্টারে বেশ সু-দর্শনী মেয়ে, সে ভাবল হয়তো সদ্য ভার্সিটি পর্ব শেষ করে কিছুদিন ট্রেনিং নিয়ে মেয়েগুলি চাকুরীতে জয়েন্ট করেছে। সবাই বেশ চটপটে কাষ্টমারের নানান প্রশ্নের জবাব ও প্রয়োজনীয় কাজ করে দিচ্ছেন বেশ দ্রুত। ৩৪ নম্বরের ডাক পড়তে অনেকটা কাংক্ষিত মত আরো সু-দর্শনী বা ঐ বিভাগের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের সামনে বসে পড়ল, তার একটি ভালো সময় কাটছে এটা যে বুঝতে পারলো আর মনে হলো ঘড়ি খুব দ্রুত সময়কে তাড়িয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুসারে মেয়েটি আবেদ সাহেবকে বলল ” জাতিয় পরিচয় পত্রের আসল কপি, যে বাসায় থাকেন সে বাসার পরিশোধ করা বিদ্যুত বা গ্যাস বিলের আসল কপি, আপনার এক কপি ছবি নিয়ে আসবেন আর এই ফর্মটি নিন সাথে করে পূরণ করে আনবেন। ”

বারো তারিখ বেশ সকালে অফিসে পৌঁছিয়ে হাতের কাজগুলি সেরে সকাল সকাল ব্যাংকে গিয়েই টোকন সংগ্রহ করল, টোকনের নাম্বর দেখে আবিদ যেন গভীর এক অরণ্যে প্রবেশ করল তার সিরিয়াল এক শত জনের পরে অনুমান করল ঘন্টা তিনেক পরে কাউন্টের সাক্ষাৎ হতে পারে বার বার লক্ষ্য করছিল গত কালের নাম না জানা সবচেয়ে সু-দর্শনী মেয়েটি সিটে আছে কিনা !! তার মন বলছিল তার সাথে আবার কথা হলে কাগজ পত্রগুলি বুঝিয়ে একাউন্ট ফ্রীজের হাত থেকে রক্ষা পেত আর মেয়েটকে বেশ চটপটে মনে হয়েছে, গুনবতি মনে হয়েছে আর রূপবতী তো বটেই। মনে মনে ভাবছিল এদের বেতন কত !! তবে অধিকাংশ মেয়েদের যে বিয়ে হয়েছে তাদের কথা বার্তা ও হাঁটার ধরণ দেখে আবিদ বুঝতে পারছে একে তো সকলে সু-দর্শনী তারপরে চাকুরী জীবি মেয়ে অবিবাহিত তো থাকার কোন সুযোগই নেই। তবুও তিন ঘন্টা বসে থাকতে হবে নানান রঙিন স্বপ্ন বুনতে দোষ কোথায়, আর এমন করেই তো ফুরে ফুরে হাওয়ার মত সময় কেটে যাবে।

আবিদ খান নিশ্চিত হলো যে ঠিক দুইটার দিকে তার ডাক পড়বে তবে তার আশা যে গত কালের সু-দর্শনী মেয়েটির সাথে আজও যেন সাক্ষাত হয়, নাম্বারটি ঘনিয়ে আসতে সে নিশ্চিত হলো গত কালের সু-দর্শনী মেয়েটির সাথে সাক্ষাৎ হচ্ছে না, সাত নাম্বার কাউন্টার থেকে ডাক পড়ল কিন্তু এই মেয়েটিকে আগে একবারও সে লক্ষ্য করেনি, বেশ ছিপছিপে লম্বা, সাদা বর্ণের, মার্জিত চেহারা, পড়নে উজ্বল হালকা লাল রঙের সেলোয়ার কামিজ, চোখে চশমা তবে অধিক সুন্দরী বলা যাচ্ছে না। একটি ইংগিত করে আবিদ সাহেবকে সামনের চেয়ারে বসতে বলল, কোন কথা না বলে মেয়েটি ইংগিত করে জাতিয় পরিচয় পত্রটি ও পূরণ করা ফর্মটি চাইলো।

চোখে চশমা্ পড়া মেয়েটিকে আবিদের কাছে একটু মেজাজী মেয়ে বলে মনে হচ্ছিল তা ছাড়া কোন কথা না বলে খুটিয়ে খুটিয়ে কাগজ আর কম্পিউটারে রক্ষিত তথ্য মিলাচ্ছে আর কথা না বলাতে আবিদের মনে এক ধরণের ভয় মনে ভর করে বসছে, তার মনে হচ্ছে আবিদ আসামীর কাঠগড়ায় আর মেয়েটি বিচারকের আসনে বসে তার সমস্ত তথ্য উপাত্ত খুটিয়ে খুটিয়ে লক্ষ্য করছে, তাঁর ধারণা মেয়েটির হাতে আজ তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ হবে, আবিদ অসহায় ভাবে লক্ষ্য করছে মেয়েটি তার নাম, স্থায়ী, অস্থায়ী ঠিকানা, বংশ পরিচয়, কোথায় চাকুরী করে, কত টাকা মাসিক বেতন, কত বয়স সবই জেনে যাচ্ছে।

খুব বললে ভুল হবে এক অসাধারণ মধুর কন্ঠে আবিদ খান অফিসের নিয়ম অনুযায়ী মেয়েটির কন্ঠ থেকে প্রথম “স্যার” কথাটি শুনতে পেল। মেয়েটির মধুর কন্ঠে “স্যার” কথাটি শুনে আবিদ খান নড়েচড়ে বসলো, কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে মেয়েটি বলল স্যার আপনার কাগজ পত্রে তো অনেক সমস্যা। নানান রকমে ভুল তথ্য, আপনাকে এ সবই ঠিক করতে হবে। তারপরে আপনার একাউন্ট এক্টিভেট হবে। আবিদ কিছুটা কৌশলি হয়ে মেয়েটিকে ম্যাডাম সন্মধোন করে বুঝাতে চাইলো যে টাকা উত্তলোন করাটা তার খুব প্রয়োজন, বানিয়ে বানিয়ে কতকগুলি প্রযোজনীতার কথা বলার চেষ্টা করতে আবিদ সাহেবকে থামিয়ে দিয়ে মেয়েটি বলল ন্যাশনাল আইডি কার্ডে সাথে আমাদেরকে আগে যে তথ্য দিয়েছিলেন সেখানে আপনার মায়ের নাম ভুল আছে আপনার মায়ের নামের শেষে আছে খাতুন আর কার্ডে আছে বেগম, আপনাকে Affidavit করে নাম সংশোধন করতে হবে। স্থায়ী ঠিকানাতে কিছু ভুল আছে আচ্ছা আমি ঠিক করে দেব ।

কথাগুলি শুনে আবিদ খানের মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো, মনে হলো সে আকাশ থেকে পড়লো, মেয়েটি কিছুটা কড়া সুরে বললো ঘাবড়াবেন না, আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আবিদের মনে হলো তার সামনে যেন সবমিলিয়ে একজন গুনবতী পরী বসে আছে। মেয়েটি খুব শান্ত গলায় বলল ” গুলশান এক নাম্বরে যাবেন গুলশান মার্কেটের একতলায় আসলাম ষ্টোর নামে একটি Stationery দোকান আছে ওখানে সরকারী ষ্টাম্প পাওয়া যাবে, দোকানে সোহেল নামে একজন বসেন তাকে আমাদের ব্যাংকের নাম বলে বলবেন গুলশান ব্রান্চের আবিদা সুলতানা পাঠিয়েছে খুব দ্রুত করে কাজ করে দিবে। আর আপনি যখন ব্যাংকে ফিরত আসবেন তখন হয় তো আমাদের কাউন্টার বন্দ হয়ে যাবে সিকিউরিটি আপনাকে আটকিয়ে দিবে, আমার নাম বলবেন।” কাগজ পত্রের কাজগুলি খুব দ্রুত গতিতে হতে থাকলো, আবিদের বার বার মনে হলো এ হলো আবিদা পরী, অসাধারণ গুন, রূপবতীও বটে। তবে এই আবিদা পরীর নাম আবিদা সুলতানা না হয়ে যদি আবিদা রহমান বা আবিদা হোসেন হলে সহজেই বুঝা যে তিনি বিবাহিত কিনা !! তাছাড়া এমন মেধাবী, গুনবতী রূপবতী মেয়ে অবিবাহিত থাকে এমন শক্তি কোথায় !!

ঠিক চারটার দিকে আবিদ খান কিউরিটি গার্ডের সীমানা ডিংগিং এ ব্যাংকে প্রবেশ করে আবিদা সুলতানার সামনে বসে পড়লো তিনি কাগজ পত্রগুলি আবার পরীক্ষা করে আবিদ সাহেবকে বেশ কয়েক জায়গায় সাইন করতে বলে বলল। আর বললেন সন্ধ্যা ছয়টার পরে আপনি টাকা উঠাতে পারবেন। অফিসের নানান নিয়ম-কানুন থাকতে পারে তাই আবিদ খান শুধু ধন্যবাদ বলে ব্যাংক থেকে বেড়িয়ে গেল।

বাসায় ফিরে সাড়ে ছয়টার দিকে কার্ড পাঞ্চ করতেই বিশ হাজার টাকা বেড়িয়ে আসলো নিজের টাকাকে আজ অমূল্য সম্পদ মনে হলো। আবিদা সুলতানা নামের একজন সত্য পরী তার জীবনে এমন কিছু রূপ কথার মত ঘটনা ঘটিয়ে দিল যা স্বর্ণ দিয়ে বাধিয়ে রাখতে ইচ্ছা হলো। মায়ের হাতে টাকা তুলে দিয়ে আবিদ খান যেন ভারত বর্ষ জয় করল, হাতে কোন আর কাজ নেই একটা গোসল দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে সে আজ খুব তারাতারি বাছানায় যাবে আবিদা সুলতানাকে নিয়ে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা সে সারা রাত ধরে ভাববে, প্রয়োজনে ঘটনাগুলি এক হাজার বার মনে করবে, কথামালা সাজাবে, আপন মনে নানান কথা বলবে, ঘর বন্দ করে আবিদা পরীর সাথে একা একা নানান কথা বলবে, নানান প্রশ্ন করবে, মনে মনে অনেক কিছু জানতে চাইবে। মনে মনে হাসবে প্রয়োজনে কিছুটা উচ্চ স্বরে। তবে আবিদের খুব আফসোস হচ্ছিল যে যদি আবিদা পরীর সেল ফোন নাম্বারটা জানা থাকতো কিন্তু তা জানা সম্ভব হয় নি।

রাতের খাবার শেষে আবিদের মা শুয়ে পড়েছেন, কলেজ পড়ুয়া একমাত্র বোনটি অন্য ঘরে পড়ছে। দরজা বন্দ করে আবিদ বিছানায় শুতে যেতেই তার মোবা্ইলে অপরিচিত একটি নম্বার থেকে রিং আসলো।
-হ্যালো
– ছালাম জানবেন আবিদ সাহেব, আমি আবিদা সুলতানা, বেশ রাতে ফোন করলাম একটি সামান্য কথা বলার জন্য, আমার কথা শুনতে আপানার কোন অসুবিধা হচ্ছে না এটা আমি জানি।
– না, না ম্যাডাম কোন অসুবিধা হচ্ছে না আপনি বলুন।
– বিষয়টা খুবই সামান্য তবে আমি যে আপনার কিছু উপকার করলাম তার কৃতজ্ঞতা পাওয়ার জন্য কিন্তু ফোন করি নি, আর ও হ্যা আমি সাতটায় অফিস ছেড়েছি আপনি টাকা তুলেছেন এটা নিশ্চিত হওয়ার পরেই।
– আপনাকে কি ভাবে যে কৃতজ্ঞতা জানাব সে ভাষা আমার জানা নেই
– ও সব কথা বাদ দিন জীবনে অনেক ঘটনা ঘটে, এখন আমি যা বলি শুধু মন দিয়ে শুনুন কোন প্রশ্ন করবেন না। গত শুক্রবার এক পরিবার থেকে ছেলে পক্ষ আমাকে দেখতে এসেছিল আজ আমি যে ড্রেস পরে ছিলাম সেদিনও আমার পড়নে তাই ছিল। ছেলে পক্ষ আমাকে ওদের ঘরের বউ বানানোর ইচ্ছা ছিল কিন্তু ছেলের কোন চশমা পড়া মেয়ে পছন্দ না, তাই আর সম্পর্ক আগায় নি। আমি এখন নিজে নিজের বর খোঁজা শুরু করছি, আপনাকে দেখে আর আপনার নামটি জানার পরে আপনাকে আমার বর মনোনিত করা যায় কিনা তা ভাবছিলাম, আপনাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছিলাম, আপনি যে মেরুন রঙের মুজা পড়েছিলেন তাও লক্ষ্য করেছি, আপনার সমস্ত তথ্য খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছিলাম, আপনার বংশ পরিচয়, বাবা আছেন কিনা ! বিবাহিত কিনা, কোন কোম্পানীতে জব করেন, কত মাসিক বেতন, এ পর্যন্ত ডিপিএস এ কত টাকা জমিয়েছেন, আপনার বয়স তাছাড়া আপনার দেহের গঠন, গায়ের রং, আচার আচরণ সবই আমার পছন্দ ছিল, কিন্তু আপনার দুইটা বিষয় আমার পছন্দ না। এক আপনি চশমা পড়েন না, দুই আপনি হালকা ধূমপান করেন।

আবিদ সাহেব কিছু বলার চেষ্টা করল, কিন্তু তাকে থামিয়ে দিয়ে আবিদা সুলতানা বলল ‘ আপনার আম্মাকে আমার ছালাম জানাবেন, সব সময় ভালো থাকবেন’ বলে আবিদা সুলতানা তার সেল ফোনের লাইনটা কেটে দিয়ে সাথে সাথে আবিদ সাহেবের সেল নাম্বরটাও তাঁর সেট থেকে মুছে দিল।

তারিখ : আগষ্ট ১০, ২০১৫

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ