Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে পুতিন কি যুদ্ধের কৌশল পাল্টাচ্ছেন-গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ (২০২২)

Share on Facebook

যেমনটি সচরাচর হয়ে থাকে, এবারও তাই হলো। খেরসন শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করলেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বরং সেদিন ব্যস্ত ছিলেন রাজধানী মস্কোয় একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে। সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণাটা এসেছে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের মুখ থেকে।

গত ৯ মাসের যুদ্ধে খেরসন শহরই ইউক্রেনের একমাত্র আঞ্চলিক রাজধানী, যেটি রাশিয়ার দখলে ছিল। সেখানে অবস্থান করা সেনাদের নিরাপত্তার কথা বলে গত বৃহস্পতিবার তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা আসে। যথারীতি সেনা প্রত্যাহার শুরুও হয়। আজ শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, খেরসন শহর এখন পুরোপুরি তাঁদের নিয়ন্ত্রণে।

তাতিয়ানা স্তানোভায়া, রাজনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক, আর পলিটিক

কেন নিজ মুখে পুতিন খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন না? এ বিষয়ে একটি ধারণা দিয়েছেন রাশিয়ার একজন সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘পুতিন আসলে খারাপ খবরটি নিজে দিতে চাননি। একই সঙ্গে সেনা প্রত্যাহারের দায় নিজের ঘাড়ে নিতে চাননি।’ ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে খারকিভ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন এই কর্মকর্তা। সে সময়ও একইভাবে নিশ্চুপ ছিলেন পুতিন।

পুতিনের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখেন, এমন ব্যক্তিরা বলছেন, খেরসন শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার এটাই দেখিয়েছে যে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও ছাড় দিতে প্রস্তুত আছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর পলিটিকের রাজনীতি বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্তানোভায়ার ভাষ্যমতে, পুতিন যে কখনো পিছু হটেন না, এমন ভাবাটা ভুল। তিনি বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত আবেগের হলেও, তিনি কিন্তু তা নিয়েছেন।

‘শীতকাল শেষের অপেক্ষায় পুতিন’

এদিকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে পুতিনের চিন্তাভাবনায় উল্লেখযোগ্য বদল এসেছে বলে মনে করছেন রাশিয়ার সাবেক ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। এখনো সাবেক সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, সেনা সরিয়ে নিয়ে যুদ্ধের গতি আপাতত কমাতে চাচ্ছেন পুতিন। তাঁর লক্ষ্য, এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রুশ বাহিনীকে আবার সাজিয়ে নেওয়া এবং যেসব সদস্যের সেনাবাহিনীতে নতুন করে নিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

বিষয়টি আরেকটু গভীরভাবেও দেখেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘পুতিনের কোনো তাড়াহুড়া নেই। পশ্চিমাদের সঙ্গে এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে বলেই মনে করছেন তিনি। আর পুতিন একজন সুযোগসন্ধানী মানুষ। শীতকালের শেষে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, সেটা দেখতে চাচ্ছেন। এরপর কৌশলগুলো আবার নতুন করে সাজাবেন।’

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে মস্কো শেষ বড় ধাক্কাটা খেল খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে। এর আগে যুদ্ধের শুরুর দিকে রাজধানী কিয়েভের আশপাশ এবং সেপ্টেম্বরে খারকিভ থেকেও সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তবে এবারের বিষয়টি আলাদা। কিয়েভের আশপাশ ও খারকিভ থেকে ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের মুখে নাস্তানাবুদ হয়ে পালিয়েছিলেন রুশ সেনারা। রাশিয়ার শীর্ষ মহলে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছিল। এবারের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে কিন্তু সেই সমালোচকদের মুখ খুলতে দেখা যায়নি।

এই সমালোচকদের দুজন হলেন রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধান রমজান কাদিরভ ও ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী রুশ প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। দুজনই খেরসন শহর থেকে সেনা প্রত্যাহারে সমর্থন জানিয়েছেন।

তাতিয়ানা স্তানোভায়ার মতে, এই সমর্থন থেকে এটা পরিষ্কার যে ক্রেমলিন তার আগের ভুলগুলো থেকে শিখছে। এবার সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে রাশিয়ার অভিজাত শ্রেণির মধ্যে যাঁরা কট্টর যুদ্ধপন্থী, তাঁদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই। কারণ, সাধারণ মানুষের মধ্যে আর কোনো বিভক্তি দেখতে চাচ্ছেন না পুতিন।

‘ইউক্রেনে সুরোভিকিনের নিয়োগ পুতিনের কৌশল’

পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষকই আবার ইউক্রেনে রুশ কমান্ডার হিসেবে গত অক্টোবরে সুরোভিকিনের নিয়োগকে একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের রাজনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার বাউনভের মতে, সুরোভিকিনের নিয়োগ দেওয়ার একটি কারণ হতে পারে তাঁকে দিয়ে ইউক্রেনে ‘লজ্জাজনক’ সব কাজ করানো। কারণ, পুতিন এগুলোর সঙ্গে নিজের নাম জড়াতে চান না।

একই কথা রাশিয়ার সাবেক ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারও। একসময় তিনি সুরোভিকিনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার জন্য যথাযথ মানুষটি হলেন সুরোভিকিন। রাশিয়ার বিভিন্ন মহলে তাঁর কোনো শত্রু নেই। আর ইউক্রেনে কোনো সামরিক পরিস্থিতির জন্য তাঁর দিকে আঙুল তোলার কারণও নেই।’

খারকিভ থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় রুশ সেনারা বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম পেছনে ফেলে এসেছিলেন। সেই ভুল যেন আর না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে রাশিয়া এবার এগিয়েছে বলে মনে করছেন সমরবিদেরা। খেরসন শহরসহ নিপ্রো নদীর পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে নদীটির পূর্ব তীরে নিজেদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করেছে মস্কো। সেখানেই সেনাসদস্যরা বর্তমানে অবস্থান করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক রব লি। তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই যদি রাশিয়া তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে পারে, তাহলে এই সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে তারা ইউক্রেনের অন্য যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে পারবে। মনে করা হচ্ছে, রাশিয়া এই সেনাদের সহজেই আশপাশের দনবাস বা জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে সরিয়ে নিতে পারে।’

অনেকেই খুশি নন

পুতিনের আংশিক সেনা নিযুক্তির ঘোষণায় সাধারণ রুশ নাগরিক—যাঁরা হতবাক হয়েছিলেন, তাঁরা সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে পারেন বলে মনে করছেন কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের গবেষক আন্দ্রেই কোলেসনিকভ। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি করা একটি জরিপ তুলে ধরেছেন তিনি।

ওই জরিপ অনুযায়ী, ৪৪ শতাংশ রুশ নাগরিক তাঁদের সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডকে এখনো ‘পুরোপুরি সমর্থন’ করেন। আর ২২ শতাংশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। আন্দ্রেই কোলেসনিকভের ভাষায়, ‘রাশিয়ায় সমাজের বড় অংশ, এমনকি পুতিনের সমর্থকেরাও যুদ্ধ নিয়ে একপ্রকার ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি কমানোটা পুতিনের জন্য ইতিবাচক হবে।’
আরও পড়ুন
খেরসন শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার কি পুতিনের জন্য আরেক ধাক্কা
বেশ কিছুদিন ধরেই রাশিয়ার দখলে থাকা খেরসন শহরের দিকে ক্রমশ এগোচ্ছে কিয়েভ বাহিনী

এরপরও, বুধবারের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা রাশিয়ায় সবাইকে খুশি করেনি। এমনই একজন আলেকসান্দার দুগিন। কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী এই রুশ নেতার মেয়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে এক গাড়িবোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। তিনি বলেন, ‘খেরসনকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এটি যদি আপনার মাথাব্যথার কারণ না হয়, তাহলে আপনি রুশ নন। এটা যদি আপনার মনে পীড়া না দেয়, তাহলে একজন রুশ হিসেবে আপনার ভেতরে কিছু্ই নেই।’

এরপর বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে একটি পোস্ট করেন দুগিন। সেখানে যেন ক্রেমলিনকেই কটাক্ষ করা হয়েছে। দুগিন বলেন, ‘যুদ্ধটি (ইউক্রেন যুদ্ধ) অবশ্যই গণমানুষের যুদ্ধ হতে হবে। আর সরকারকে অবশ্যই এই মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আর তারা এখন তেমনটি করছে না।’

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ১৩, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ