Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সেরা অদম্য সাংবাদিক-রোজিনা ভালো সাংবাদিকতার অর্জন (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: মনজুরুল আহসান বুলবুল।

বয়সে ছোট হলেও অনেকের কৃতকর্ম তাঁকে বড় বানিয়ে ফেলে। সেই বড়ত্বকে সম্মান জানাতে হয়, কুর্নিশ করতে হয়। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম বয়সে অনেক ছোট হয়েও আমাদের অনেক বড়র চেয়েও বড় হয়ে গেলেন। তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা আন্তর্জাতিক বড় সম্মান পেল। এ জন্য আমরা গৌরববোধ করি। এই অর্জন আসলে ভালো সাংবাদিকতারই অর্জন।

প্রথম আলোর খবরে বলা হয়েছে, সাহসী সাংবাদিকতার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম, যিনি বাংলাদেশে করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম তুলে ধরতে গিয়ে নিগ্রহ, নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছেন। নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক সংস্থা ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড তাঁকে এ বছরের ‘ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ দিয়েছে। তিনি পুরস্কারটি পেয়েছেন সেরা অদম্য সাংবাদিক বা ‘মোস্ট রেজিলিয়েন্ট জার্নালিস্ট’ শ্রেণিতে।

মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য লড়াই করা সাংবাদিকদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। গত বছর একই পুরস্কার পেয়েছিলেন এ বছর শান্তিতে নোবেল পাওয়া ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার উৎকর্ষের জন্য বিশ্বের ৪০টির বেশি দেশে কাজ করে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড। বিশ্বব্যাপী ৯০টির বেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের। সংস্থাটিকে সহায়তা করে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নিজের ব্যক্তিগত দুঃখবোধ ছিল। ইউনেসকো পরিচালিত ইউনেসকো-গুইরেমো ক্যানো ওয়ার্ল্ডপ্রেস ফ্রিডম প্রাইজের জুরিবোর্ডে তিন মেয়াদে সদস্য ও এক মেয়াদে চেয়ারম্যান থাকার সময় সারা পৃথিবীর ডজন ডজন সাংবাদিকের সাহসিকতা ও ভালো সাংবাদিকতার এন্ট্রি মূল্যায়ন করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের কারও নাম পাইনি। পানামা পেপার্স বা প্যান্ডোরা উদ্যোগেও কোনো বাংলাদেশি সাংবাদিকের অন্তর্ভুক্তি না থাকাও একটি বড় হতাশা। এ বছর সাংবাদিকতায় নোবেল পুরস্কার ভালো ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য বিশাল আকাশ উন্মুক্ত করেছে। বলতে ভালো লাগছে, সহকর্মী, বোন রোজিনার হাত ধরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখন সেই প্রাঙ্গণে পা রাখার সাহস দেখাচ্ছে।

সাংবাদিক হয়ে উঠতে হয় অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে। পেশায় ঢুকে অনেক দিন পার করেও অনেকে সাংবাদিক হয়ে উঠতে পারেন না। রোজিনা পেরেছেন। তাঁর এই সাংবাদিক হয়ে ওঠার পথপরিক্রমাটি জানি বলেই বলছি, ভালো সাংবাদিক হয়ে ওঠার জন্য তাঁর মূল যোগ্যতার মধ্যেই ছিল প্রতিনিয়ত ভালো কাজ করার অতৃপ্তিবোধ। একটি কাজ করেই তাঁর অদম্য লক্ষ্য ছিল আরও ভালো একটি কাজ করা। এর সঙ্গে নিষ্ঠা ও পরিশ্রম তো ছিলই। ‘সংবাদ’–এ তিনি আমার তরুণ সহকর্মী; প্রতিনিয়ত ভালো খবর করছেন। কিন্তু তাঁর অতৃপ্তি—বড় প্রচার সংখ্যার ভালো কোনো সংবাদপত্রে খবরটি ছাপা হলে ভালো হতো। সেই চিন্তা থেকেই রোজিনা কর্মস্থল বদল করতে চাইলেন এবং শেষে সফলও হলেন। রোজিনা হতোদ্যম হননি। আমরা সংবাদে তাঁকে ধরে রাখতে পারিনি; প্রথম আলো তাঁকে পরিবারভুক্ত করে সমৃদ্ধ হয়েছে। সাংবাদিকতায় ব্যক্তিগত আগ্রহ, শ্রম, নিষ্ঠার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতাও বড় বিষয়। সংবাদে সীমিত পরিসরে রোজিনাকে গড়ে তোলার যে ভিত তৈরি হয়েছিল, প্রথম আলোর বড় পরিসরে তা আরও দৃঢ হয়েছে এবং তাঁর ওপর দাঁড়িয়েই আমাদের ছোট রোজিনা আজ অনেক বড় হয়ে গেছেন।

রোজিনার এই অর্জন, সম্মান ও বিজয় প্রকৃত অর্থে ভালো সাংবাদিকতারই বিজয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যখন রোজিনা আক্রান্ত হলেন, তখন দেশের সব স্তরের মানুষ যে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেন, এর যতটা না ব্যক্তি রোজিনার জন্য, তার চাইতে বেশি ভালো সাংবাদিকতার জন্য। মানুষ রোজিনার ওপর আস্থা রেখেছেন তাঁর ভালো সাংবাদিকতার জন্যই।

সাংবাদিকতা কখনোই চ্যালেঞ্জহীন পেশা নয়। আজ যখন সাংবাদিকতা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে, তখন সাংবদিকতার বেঁচে থাকার জীয়নকাঠি হচ্ছে ‘ভালো সাংবাদিকতা’। যত বেশি ভালো সাংবাদিকতা হবে, তত বেশি মানুষ সাংবাদিকতার প্রতি আস্থা রাখবে। সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের এই যূথবদ্ধ শক্তিই সাংবাদিকতাকে রক্ষা করবে। তবে ভালো ও সাহসী সাংবাদিক গড়ে তুলতে প্রয়োজন ভালো প্রতিষ্ঠান ও ভালো সম্পাদক। দেশে সরকার কতৃত্ববাদী বলে কঠোর সমালোচনা করে সেই সরকারের টাকায় বিদেশে গিয়ে ‘সরকার বিনিয়োগবান্ধব’ বলে প্রচারে গলাবাজি করা সম্পাদক ভালো সাংবাদিকতার অভিভাবক হতে পারেন না। এই দ্বিচারিতা বিপজ্জনক। বিশেষ মতলবে গণমাধ্যমে বিনিয়োগকারীরাও ভালো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারেন না।
আমাদের বহু তরুণ সাংবাদিক নিজস্ব মেধা ও যোগ্যতায় বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও ফেলোশিপ পেয়েছেন; তাঁদের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁদের সবাইকে যেমন ধন্যবাদ জানাই, তেমনি রোজিনা ইসলামের এই বড় অর্জন আরও ভালো ও সাহসী সাংবাদিক গড়ে তোলার ক্ষেত্র তৈরি করবে, সেটিই প্রত্যাশা করি।

এই ভালো লাগার সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলি, রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলাটি তুলে নিন। আইন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করি, রোজিনার আটকে রাখা পাসপোর্ট, মুঠোফোন ও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডটি ফেরত দিন।
আসুন, আমরা সবাই ভালো সাংবাদিকতার এই অর্জনের উৎসবে শামিল হই।

লেখক: মনজুরুল আহসান বুলবুল : সাংবাদিক

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ নভেম্বর ০৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ