Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সৈয়দপুরের তুলশীরাম আগারওয়ালা

Share on Facebook

সেদিন ছিল একাত্তরের বিভীষিকাময় ২৫ মার্চ, কালরাত। সৈয়দপুর শহরে মাড়োয়ারিপট্টিতে এসে দাঁড়াল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়ি। হানাদার বর্বর সেনারা তাদের ভারী বুটের শব্দ তুলে ত্রাস সৃষ্টি করে ঘিরে ফেলে সৈয়দপুর শহরের বাঙালিদের শিক্ষা-সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক দানবীর তুলশীরাম আগারওয়ালার বাড়ি। দরজায় সজোরে কড়া নাড়তে থাকে তারা। হুংকার ছাড়ে ‘কৌন হ্যায় আন্দার?’ অর্থাৎ কে আছ ভেতরে?

কড়া নাড়ার শব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন তুলশীরাম আগারওয়ালা, সঙ্গে ছেলে রামেশ্বরলাল আগারওয়ালা। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ছিল স্থানীয় অবাঙালি সন্ত্রাসী রুস্তম। তারা তুলশীরাম ও রামেশ্বরকে তুলে নিয়ে যায়।

ভারতের শিলিগুড়ি থেকে মুঠোফোনে এসব কথা বলছিলেন শহীদ তুলশীরামের নাতি ও শহীদ রামেশ্বরলালের ছেলে নারায়ণ কুমার আগারওয়ালা। তিনি জানান, সৈয়দপুরের শতবর্ষী বাংলা সাহিত্যের পীঠস্থান ‘শিল্প সাহিত্য সংসদ’–এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তাঁর দাদা তুলশীরাম। ১৩১১ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। শিল্প সাহিত্য সংসদের ভবনটি নির্মাণে ওই সময় তুলশীরাম ৫০১ টাকা দান করেছিলেন।

অবাঙালি–অধ্যুষিত সৈয়দপুরে বাঙালি সংস্কৃতিচর্চা ও শিক্ষা প্রসারের অন্যতম প্রধান প্রাণপুরুষ ছিলেন তুলশীরাম। এখানে শিল্প–সাহিত্য–সংস্কৃতিবিষয়ক সব আয়োজনের সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতেন। আর্থিক সহায়তা দিতেন। এ ছাড়া ১৯১১ সালে নারীশিক্ষা প্রসারে প্রথম একটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এখন এটি জাতীয়করণ করে নাম রাখা হয়েছে তুলশীরাম সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এ ছাড়া স্বাধীনতার পর সৈয়দপুর শহরে মাড়োয়ারিপট্টির সড়কের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ তুলশীরাম সড়ক’। শহরের জিআরপি মোড়ে স্থাপিত শহীদ স্মৃতিসৌধ ‘স্মৃতি অম্লান’–এর নামফলকেও তাঁর নাম উৎকীর্ণ রয়েছে।

সৈয়দপুর শহরে একাধিক পাটকলের মালিক ছিল তুলশীরামের পরিবার। তাঁর বাবা মুরলীধর আগারওয়ালা ব্রিটিশ ভারতের রাজস্থান প্রদেশ থেকে ২০০ বছর আগে সৈয়দপুরে আসেন। তুলশীরামের জন্ম সৈয়দপুরে। নারায়ণ আগারওয়ালা জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর দাদা তুলশীরাম আগারওয়ালার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁকে ‘বড়দা’ বলে ডাকতেন। বাঙালি সংস্কৃতির গভীর অনুরাগী ছিলেন তিনি। শিক্ষা–সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখতেন। উণসত্তরের গণ–আন্দোলনে সংস্কৃতিকর্মীদের তিনি নানাভাবে সহায়তা করেছেন। সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চিকিৎসক জিকরুল হকের (তিনিও একই সঙ্গে শহীদ হন) পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন। পাকিস্তানি সেনারা তুলশীরাম আগারওয়ালা ও রামেশ্বর আগারওয়ালাকে ২৫ মার্চ রাতে বাড়ি থেকে তুলে সৈয়দপুর সেনানিবাসে নিয়ে যায়। নির্যাতনের পর ১২ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের অদূরে নিসবেতগঞ্জ বধ্যভূমিতে অনেকের সঙ্গে তাঁদেরও ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়।

সৈয়দপুর শিল্প–সাহিত্য সংসদের বর্তমান সভাপতি ম আ শামিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তুলশীরাম আগারওয়ালা ছিলেন সৈয়দপুরের অন্যতম প্রধান সংস্কৃতিসেবী। আমরা তখন ছাত্র ইউনিয়ন করতাম। অবাঙালিদের চাপে বাঙালিরা ছিল কোণঠাসা, সাংস্কৃতিক আয়োজন করা সহজ ছিল না। তুলশীরাম বাবু এ ধরনের আয়োজনে যুক্ত থেকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন। তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

গ্রন্থনা: এম আর আলম, নীলফামারী

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ