Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

২৫ হাজার টাকার জন্য গরিবেরা জেলে, ২৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপিরা আরামে-তারানা হালিম(২০২২)

Share on Facebook

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে ১২ জন কৃষককে কারাগারে পাঠানোকে অন্যায় ও বৈষম্য আখ্যায়িত করেছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তারানা হালিম লিখেছেন, সমবায় ব্যাংকের ২৫ হাজার টাকার খেলাপি ঋণের মামলায় গরিবেরা জেলে যান, আর ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা আরামে ঘুমান। তিনি আরও লিখেছেন, ‘চাই সমতা। আমি গ্রেপ্তারকৃত কৃষকদের মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনে ওই ২৫ হাজার টাকা আমরা দিয়ে দেব।’

পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি মামলায় ৩৭ জন কৃষকের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ বলেছে, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের কাছ থেকে ওই কৃষকেরা ঋণ নিয়েছিলেন। অবশ্য ঋণের টাকা পরিশোধ করার পরও তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের।

বিষয়টি নিয়ে আজ শনিবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পাবনা জেলা কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অনেকে খেলাপি হয়ে আছেন।

তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় না। তাঁরা গ্রেপ্তার হন না। কিন্তু মাত্র কয়েক হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষকদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমার জানামতে, ঋণের টাকা তাঁরা বহু আগেই পরিশোধ করেছেন। সেই রসিদও তাঁদের কাছে আছে। এরপরও অকারণে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানাই।’

তারানা হালিম বেলা একটার দিকে নিজের ফেসবুকে কৃষকদের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন। বিকেল চারটা পর্যন্ত তাঁর পোস্টে মন্তব্য পড়েছে ৭৯৬টি। ১০ হাজার মতো প্রতিক্রিয়া এসেছে। পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ৪৪৪ বার। মন্তব্যকারীদের প্রায় সবই তারানা হালিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

তারানা হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে পীড়া দিয়েছে। মানুষ ২৫ হাজার টাকার জন্য জেলে যাচ্ছেন, আর হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা বহাল তবিয়তে আছেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। কিছু মানুষ বাঁচার লড়াই করছেন আর কিছু মানুষ বিলাসিতার লড়াই করছেন। এটা নিয়ে কেউ কিছু বলছে না।’

কারাগারে পাঠানো কৃষকদের পক্ষে কৃষক লীগ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক ভূমিকা আশা করেন বলে জানান তারানা হালিম। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি কৃষক লীগ না হলে কৃষি মন্ত্রণালয় দেখবে, সমাধান করবে, এই দায়টা গ্রহণ করবে—এটা আমার অনুরোধ ও আশা।’

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: নভেম্বর ২৬, ২০২২

লেখক:

পরিস্থিতি দেখে বলাই যায় সরকার অবশেষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কথা মানলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি, তিন লাখ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ প্রকৃত খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশও ছাড়িয়ে গেছে বেশ আগেই। আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায়। ২০০৯ সালে যখন দায়িত্ব নেয় তখন খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ২২ হাজার কোটি টাকা। এ নিয়ে নানা মহল থেকে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। এ কারণেই সরকার এবার কঠোর অবস্থানে গেল। তারই প্রক্রিয়ায় জেলে গেছেন ১২ ঋণখেলাপি কৃষক। এতেই বড় ঋণখেলাপিরা ভুগছেন গ্রেপ্তার–আতঙ্কে।

এ পর্যন্ত যাঁরা পড়েছেন তাঁদের জন্য বলি, বড় ঋণখেলাপিদের গ্রেপ্তার–আতঙ্কে থাকার কথাটা নিছকই কল্পনা, রূপকথার গল্পের মতো। বিষয়টা এমনই অবাস্তব যে ঠাকুরমার ঝুলি নতুন করে লেখা হলেও এটি তাতে স্থান পাবে না। তবে একেবারেই যে কেউ আতঙ্কে নেই, তা নয়। গ্রেপ্তার–আতঙ্কে আছেন ১২ জনের বাইরে বাকি ২৫ কৃষক, তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।

প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সকালের সংবাদপত্রে নিউজটি দেখে দেশের ঋণখেলাপিরা হয়তো একচোট হেসেই নিয়েছেন। কারণ, তাঁরা জানেন, তাঁদের কিছুই হবে না। কেননা, রাষ্ট্র আসলে বড় ঋণখেলাপিদের একধরনের দায়মুক্তি দিয়েই রেখেছে। সেটা কীভাবে? দুটি উদাহরণ দেওয়া যায়। ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল এক প্রাক্‌–বাজেট আলোচনায় বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘ঋণখেলাপি হলেই যদি সব ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠানো হয়, তাহলে দেশ চলবে না।’ তিনি সেদিন নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ভালো উদ্যোক্তা যাঁরা ঋণখেলাপি হয়েছেন, তাঁদের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমরা ব্যাংক এবং আর্থিক খাতে কিছু সংস্কার করতে চাই। আর ব্যাংকঋণে সুদের হার কমালে তা শিল্পায়নের পাশাপাশি ঋণখেলাপি কমাতে ভূমিকা রাখবে। পৃথিবীর কোনো দেশে ১৭–১৮ শতাংশ সুদ নেই। এত সুদ দিয়ে কোনো শিল্প টিকতে পারে না। সুদহারও অনেক কমাতে হবে। বাজারভিত্তিক সুদহার করা হবে। তখন কেউ খেলাপি হবে না।’

অর্থমন্ত্রী দুটি কথা অবশ্য রেখেছেন। যেমন, ঋণখেলাপিদের তিনি আর জেলে নেননি। বরং ঋণখেলাপিদের জন্য নতুন নতুন সুবিধা দিয়েছেন। তিনি ঋণের সুদহার কমানোর কথাটাও রেখেছেন। সুদহার কমিয়ে ৯ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সস্তায় ঋণ পাওয়া আরও সহজ হয়েছে। আর একশ্রেণির ব্যবসায়ী সহজে ঋণখেলাপিও হচ্ছেন।

এবার আসল কারণটা বলি। নিজে না বলে বরং আইএমএফের মুখ দিয়েই বলা যাক। এই আইএমএফের কাছেই ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের জন্য দ্বারস্থ হয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আইএমএফ ২০১৯ সালে দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারকে দিয়েছিল। সেখানে আইএমএফ ঋণখেলাপিদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের ভালো কিছু উদাহরণ ও বক্তব্য তুলে ধরেছিল। তারা বলেছিল, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এবার তারা কঠোর হবে, ঋণ পুনর্গঠনের পরও যাঁরা আবার খেলাপি হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দেউলিয়া আইন-১৯৯৭ প্রয়োগ করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে বলা হবে, যাতে প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতারা বুঝতে পারেন, বারবার খেলাপি হলে আর পার পাওয়া যাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন করে নবায়নের সুযোগ দিয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয়, প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতারাই এখানে আর্থিক খাতের সিদ্ধান্ত নেন। আর ঋণখেলাপিদের প্রতি এ ধরনের সহৃদয়তাই দেশের সামগ্রিক ঋণশৃঙ্খলাকেই বিনষ্ট করে।’

আইএমএফ আরও বলেছিল, ‘এ দেশে একটা নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের মধ্যে ঋণ ফেরত না দেওয়ার প্রবণতা কাজ করে। প্রভাবশালী ও ধনী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওপর মহলের যোগাযোগ ভালো এবং তাঁরা ঋণ ফেরত দেওয়ার তাগিদই অনুভব করেন না। কারণ, তাঁরা জানেন, তাঁদের কিছু হবে না। যদিও ক্ষুদ্র ও দরিদ্রদের মধ্যে ঋণ ফেরত দেওয়ার হার অনেক বেশি। অথচ এমন ব্যবস্থা করতে হতো, যাতে অপরাধী ঋণগ্রহীতারা অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য হন। যদিও বাংলাদেশে এর উল্টোটা দেখা যাচ্ছে, তাঁরা ঋণ ফেরত না দিতে বরং উৎসাহ পাচ্ছেন।’

সুতরাং আইএমএফের বক্তব্য অনুযায়ী, ঋণখেলাপিরাই যেখানে আর্থিক খাতের সিদ্ধান্ত নেন, এবং প্রয়াত ব্যাংকার খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের ভাষায়, সরকার যেখানে ‘খেলাপিবান্ধব’, সেখানে বড় ও প্রভাবশালী ঋণখেলাপিদের জেলে নিয়ে যাওয়া কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি। জেলে যাবেন কেবল কৃষকেরাই, যাঁদের পক্ষে বলার কেউ নেই, তাঁদের কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকও নেই, ভোট রাতে হয় বলে এমনকি ভোটারের মর্যাদাও নেই। হলমার্ক বা বেসিক ব্যাংকের কেউ কেউ অর্থ আত্মাসাতের দায়ে জেলে আছেন বটে, কিন্তু হল–মার্ক ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের যেসব পর্ষদ সদস্য বা একজন সাবেক উপদেষ্টার নাম এসেছিল, কিংবা বেসিক ব্যাংকের ডাকাতির মূল হোতা শেখ আবদুল হাইয়ের মতো সবাই আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী এবং তাঁদের পেছনে আছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা।

সুতরাং সামান্য কয়েক হাজার টাকার জন্য কৃষকদের জেলে নিয়েছেন, পারলে কোটি টাকা খেলাপির জন্য একজন বড় খেলাপিকে জেলে নিয়ে দেখান তো। একটা উদাহরণ তৈরির জন্য হলেও।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ২৬, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ