Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

৭০ টাকা পুঁজি দিয়ে কীভাবে ব্যবসা করতে হয়, দেখিয়েছেন তিনি (আবদুল মোনেম) ২০২২

Share on Facebook

মাত্র তিন মাস বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন আবদুল মোনেম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিভৃত এক গ্রামে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বড় হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন মাত্রা দেওয়ার কথা ভেবেছেন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার আগে মাত্র ৭০ টাকা পকেটে নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। গড়ে তুলেছেন আবদুল মোনেম গ্রুপ।

৭০ টাকা নিয়ে এসে সরকারের সার্ভে পদে পরীক্ষা দেন আবদুল মোনেম। পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। চাকরি নেন। কিন্তু চাকরিতে তাঁর মন টেকেনি। স্বপ্ন ছিল আরও বড়। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল ব্যবসা করা। ৭০ টাকা পুঁজি দিয়ে কীভাবে ব্যবসা করতে হয়, সেটা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। দক্ষতা ও সততা দিয়ে গড়ে তুলেছেন সুবিশাল সাম্রাজ্য। আবদুল মোনেম বিশ্বাস করতেন, সবচেয়ে ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক নম্বর হওয়া সম্ভব।

নির্মাণ আর অবকাঠামো দিয়ে ব্যবসা শুরু করে আবদুল মোনেম গ্রুপ। সেখান থেকে বহুমাত্রিক প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। কাজের সুযোগ হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের।
পদ্মা সেতু থেকে কর্ণফুলী টানেল, যমুনা সংযোগ সড়ক অথবা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নানা দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামোর বড় একটা অংশকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন আবদুল মোনেম। এসব কাজে এই গ্রুপ নিজস্ব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে। পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেস হাইওয়ে করার দায়িত্ব পেয়েছে আবদুল মোনেম গ্রুপ।
সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন আবদুল মোনেম। পরিবার ও ব্যবসা তিনি সফলভাবে সামলেছেন। রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার এসেছে আবদুল মোনেমের হাতে।

আবদুল মোনেম সততাকে সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন। মাঠপর্যায়ে একটা জরিপ (ফিল্ড সার্ভে) করলে তিনি বুঝতে পারতেন এই প্রকল্পে কী কী প্রয়োজন। কীভাবে প্রকল্পটি সুন্দরভাবে শেষ করা যাবে। এটি তাঁর একটি বড় গুণ ছিল।

আবদুল মোনেমের শেষ স্বপ্ন ছিল একটি বেসরকারি শিল্পাঞ্চল (ইকোনমিক জোন) প্রতিষ্ঠা করা। ওই শিল্পাঞ্চলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ আসবে। এক কোটি লোকের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল আবদুল মোনেমের।
আবদুল মোনেম গ্রুপের প্রতিষ্ঠান

মোনেম গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ইগলু আইসক্রিম, ম্যাঙ্গো পাল্প প্রসেসিং, ইগলু ফুডস, ড্যানিশ-বাংলা ইমালশন, ইগলু ডেইরি প্রোডাক্টস, সুগার রিফাইনারি, এএম এনার্জি লিমিটেড, নোভাস ফার্মাসিউটিক্যালস, এএম আসফল্ট অ্যান্ড রেডিমিক্স লিমিটেড, এএম অটো ব্রিকস, এএম ব্রান অয়েল কোম্পানি, সিকিউরিটিজ ও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড এবং এএম বেভারেজ।

যাত্রা শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্থাপন করা হয় আলাদা শিল্প ইউনিট। এর মধ্যে ১৯৮২ সালে আইসক্রিম ইউনিট, একই বছরে বেভারেজ ইউনিট, ২০০০ সালে ম্যাঙ্গো পাম্প প্রসেসিং, ২০০৪ সালে ইগলু ফুডস, ড্যানিশ-বাংলা ইমালশন, সিকিউরিটি ও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইগলু ডেইরি প্রোডাক্টস, ২০০৭ সালে সুগার রিফাইনারি ও এএম এনার্জি, ২০০৮ সালে নোভাস ফার্মাসিউটিক্যালস, ২০১০ সালে এএম অ্যাসফল্ট অ্যান্ড রেডিমিক্স, ২০১২ সালে এএম অটো ব্রিকস, ২০১৪ সালে এএম ব্রান অয়েল কোম্পানি এবং ২০১৫ সালে আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল নামের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় প্রতিষ্ঠিত দেশের দ্বিতীয় বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল এটি।

আইসক্রিমের পাশাপাশি দুগ্ধজাত ও খাদ্যপণ্যে বাজারের চাহিদা পূরণে গড়ে তোলেন ইগলু ডেইরি ও ইগলু ফুডস লিমিটেড। এই ইগলু ফুডস লিমিটেড হিমায়িত খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিতরণ করে আসছে। ড্যানিশ-বাংলা ইমালশন লিমিটেড (ডিবিইএল) আবদুল মোনেম ও ডেনমার্কের ইএনএইচ ইঞ্জিনিয়ারিং এ/এসের একটি যৌথ উদ্যোগ। সড়ক ও বিমানঘাঁটি পথ নির্মাণে স্বয়ংক্রিয় ও অত্যাধুনিক উপায়ে বিটুমিন ইমালশন উৎপাদন করছে ডিবিইএল। চিনির চাহিদা পূরণে গড়ে তোলা হয়েছে আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড (এএমএসআরএল)। এটি দেশের একমাত্র সুগার রিফাইনারি, যা আইএসও ২২০০০: ২০০৫ সনদ পেয়েছে। এ ছাড়া এএম অটো ব্রিকস অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরি করছে।

ক্রীড়ামোদি আবদুল মোনেম

খেলাধুলায় দারুণ আগ্রহী ছিলেন আবদুল মোনেম। বাংলাদেশে ফুটবলের জোয়ারের সময় ঢাকার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত ঢাকার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি ছিলেন মোনেম। তাঁর সময়ে ফুটবল লিগে ১৯৮৬, ১৯৮৭ ও ১৯৮৮ সালে হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।
সামাজিক কর্মকাণ্ড

ব্যবসায়ের পাশাপাশি আবদুল মোনেম সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে সমাজের বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন আবদুল মোনেম ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবদুল মোনেমের নিজ গ্রাম বিজেশ্বরে প্রায় ৫২ একর জমি দান করে। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া এই ফাউন্ডেশন একটি এতিমখানা পরিচালনা ও সব খরচ বহন করে। এখানে প্রায় তিন হাজার এতিম পড়াশোনা করে। দেশে বন্যা বা অন্য কোনো ধরনের বিপর্যয়ের সময় এই ফাউন্ডেশন ত্রাণ বিতরণ ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করে থাকে।
পরিবার

ব্যক্তিগত জীবনে আবদুল মোনেম দুই ছেলে ও তিন কন্যাসন্তানের জনক। তাঁর বড় ছেলে মইনউদ্দিন মোনেম আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ছোট ছেলে মহিউদ্দিন মোনেম অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৩৭ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজেশ্বর গ্রামে আবদুল মোনেম জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজের প্রতিষ্ঠিত মসজিদের দক্ষিণ দিকে মায়ের কবরের পাশে শায়িত আছেন আবদুল মোনেম।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ জানুয়ারী ১০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ