এএফপি রয়টার্স ওয়ারশ
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান নিয়ে নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। রাশিয়াকে প্রতিহত করার নতুন উপায় খুঁজতে আজ বুধবার জোটের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৈঠকের বিস্তারিত জানা যায়নি। এরই মধ্যে ইউক্রেনে সশস্ত্র ন্যাটোর শান্তি রক্ষা মিশন পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে জোটের সদস্যদেশ পোল্যান্ড। গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর পোলিশ উপপ্রধানমন্ত্রী জারোস্লো কাজিনস্কি এই প্রস্তাব দেন।
রাশিয়ার হামলার মুখে মঙ্গলবার পোল্যান্ডসহ ন্যাটোর তিন সদস্যদেশের প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে করে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যান। তাঁরা হলেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানেজ জানসা। তিন সপ্তাহ আগে রাশিয়া হামলা শুরুর পর অন্য কোনো দেশের নেতারা প্রথমবারের মতো কিয়েভ সফরে যান। কিয়েভের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় লড়াইয়ের মধ্যে ওই সফরকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল। মঙ্গলবার যখন তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হচ্ছিল, তখনো শহরজুড়ে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এতে কয়েকজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
পোলিশ বার্তা সংস্থা পিএপির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনে শান্তি রক্ষা মিশনের আরজি জানান সফরে যাওয়া জারোস্লো কাজিনস্কি। তবে সেটা অবশ্যই নিরস্ত্র মিশন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, মিশনটি ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা ও শান্তিপূর্ণ কাজে সহায়তা করবে। এই মিশনকে উপযুক্ত বাহিনী ও সামরিক বাহিনীগুলোর মাধ্যমে সুরক্ষা দেওয়া হবে। এটা তাঁদের সরকারের প্রধান কৌশল বলেও উল্লেখ করেন পোলিশ উপপ্রধানমন্ত্রী।
কাজিনস্কি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, ন্যাটোর শান্তি রক্ষা মিশনের দরকার রয়েছে। প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক পরিসরেও এই মিশন হতে পারে। তবে এই মিশনের নিজেদের প্রতিরক্ষা করার সক্ষমতা থাকবে এবং ইউক্রেনের মাটিতেই মিশন চালাবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে মিশনটি শুরু করা যেতে পারে।’
ইউক্রেনে সরাসরি সেনা পাঠানোর পরিবর্তে রাশিয়াকে মোকাবিলায় দেশটিকে বিভিন্নভাবে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর অন্য দেশগুলো। গতকাল ন্যাটো ঘোষণা দেয়, ওই সহায়তা অব্যাহত রাখবে তারা। ইউক্রেনের পাশে আরও কীভাবে দাঁড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বৈঠকে বসেছেন জোটের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। ২৪ মার্চ ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর নেতাদের চূড়ান্ত সম্মেলনের আগে ওই সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ কথা বলেন। কীভাবে ইউক্রেন আরও অস্ত্র পেতে পারে, সেই বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় সেখানে। বৈঠকে ন্যাটোর সামরিক কমান্ডাররাও যোগ দেন।
কূটনীতিক ও সামরিক বিশ্লেষকেরা বলেছেন, যুদ্ধ শুরুর পর ন্যাটোর মিত্ররা ইউক্রেনে ২০ হাজারের বেশি ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। সামনের দিনগুলো সহায়তা আরও বাড়বে।
ন্যাটোর জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ইউক্রেনের সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। দেশটিকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখব।’
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১৬, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,