Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে চীন (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: রাহীদ এজাজ. ঢাকা।

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া এ অঞ্চলে দেশটির নেতৃত্ব ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে নিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে সবচেয়ে বেশি সুফল পাওয়ার মতো অবস্থানে রয়েছে চীন। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ায় এখানে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার ফলে একধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টিরও আশঙ্কা রয়েছে।

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) সবশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন অভিমত দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সমালোচিত হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতময় দেশগুলো থেকে খুব শিগগির মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণে এ অঞ্চলে তার মিত্র দেশগুলোর স্বাধীনভাবে নিজেদের নিরাপত্তানীতি প্রণয়নের বিষয়টি সামনে এসেছে।

‘আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া: মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার ভূরাজনীতির ঝুঁকির ওপর প্রভাব’ শীর্ষক ১২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে ৬টি অধ্যায় রয়েছে। প্রতিবেদনটিতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে খুব শিগগির মার্কিন সেনা প্রত্যাহার না হওয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকায় মার্কিন নেতৃত্ব দুর্বল হওয়ার প্রেক্ষাপটে চীনের সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে যাওয়া, মার্কিন মিত্রদের স্বাধীনভাবে নিরাপত্তার নীতিগত অবস্থান চূড়ান্ত করা, আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার ফলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির আশঙ্কার মতো বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়, আফগানিস্তানে তালেবান যে গতিতে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে, তাতে অনেকে চমকে গেছে। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে চিরাচরিত মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা যে ঝুঁকিপূর্ণ, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি তালেবানের ক্ষমতা দখলের ফলে বৈশ্বিক অন্য শক্তিগুলোর এই অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগের সম্ভাবনার দিকটিও সামনে এসেছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল, মিসরের মতো যুক্তরাষ্ট্রের চিরাচরিত মিত্রদের বৈশ্বিক অন্য শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হবে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই তাদের আঞ্চলিক তৎপরতার চেষ্টা চালাতে পারে। এতে সামগ্রিকভাবে সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ যেমন হতে পারে, তেমনি নতুন করে অস্থিতিশীলতাও সৃষ্টি হতে পারে।

দ্রুত মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হবে না

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই পরিস্থিতিতে অন্য সংঘাতময় এলাকা থেকে মার্কিন সেনা যে দ্রুত প্রত্যাহার হবে না, তা একরকম নিশ্চিত করেই বলা যায়। বিশেষ করে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের কিছুটা উপস্থিতি আছে। ফলে ছোট পরিসরে হলেও এই অঞ্চলে মার্কিন অবস্থান আপাতত থাকবে। তবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি রোধ ছাড়া এ অঞ্চলে ব্যয়বহুল ও দীর্ঘস্থায়ী কোনো সংঘাতে না জড়ানোর বিষয়টি যে বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার, তা স্পষ্ট। ফলে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রে তুরস্ক, রাশিয়া ও চীনের জন্য ব্যাপক সুযোগ তৈরি হবে।
অন্যদের জন্য সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র

প্রতিবেদন অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে ধীরে কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে দেশটির গুটিয়ে যাওয়ার এক নির্মম সাক্ষ্য মিলছে। এতে করে দুটি ঘটনা ঘটতে পারে।

প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের চলে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট খালি জায়গা পূরণের জন্য অন্য বড় শক্তিগুলোর সামনে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সমরাস্ত্রের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে রাশিয়া এর সুফল পেতে পারে। এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা সমরাস্ত্র কেনাকাটায় বৈচিত্র্য আনতে চাইলে রাশিয়া এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে ব্যাপক সুফলের ভাগটা চীনের দিকেই যাবে। বিশেষ করে করোনা-পরবর্তী পুনর্গঠন, অবকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীন এগিয়ে থাকবে। পাশাপাশি অর্থায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যেও প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে চীনের ভূমিকা হবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয়ত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল ও মিসরের মতো মার্কিন মিত্ররা এখন আর আগের মতো ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারবে না। এসব দেশকে অবশ্যই স্বাধীনভাবে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে। এর ফলে তাদের জন্য নিজেদের মতো করে চলমান সংঘাত নিরসনে আরও আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে।

তবে এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে তিনটি পরস্পরবিরোধী ধারা এ সময় চলমান থাকবে। ধারাগুলো হলো—মার্কিনঘেঁষা জোট, যারা বিদ্যমান অবস্থা বজায় রাখার পক্ষে; ইরানপন্থী পক্ষ ও ইসলামপন্থীদের সমর্থনকারী পক্ষ।
অস্থিতিশীলতা বাড়বে

প্রতিবেদনে বলা হয়, আঞ্চলিক স্তরে সংলাপ অব্যাহত থাকায় সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনে সংঘাতের পরও উত্তেজনা কমেছে। কিন্তু উল্লিখিত ভিন্ন তিনটি ধারা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়াবে। কেননা, সংলাপে শেষ পর্যন্ত ফল না এলে উত্তেজনা আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবে।

চীন যেখানে এগিয়ে

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ের পর এ অঞ্চলে প্রভাবক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়া, চীন ও তুরস্কের জন্য যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাতে আঙ্কারা পিছিয়ে আছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও করোনা মহামারিতে অর্থনীতি পর্যুদস্ত হওয়ায় দেশটির পক্ষে ভবিষ্যতে সামরিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের দূরত্ব বেড়েছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় নিজের প্রভাব বাড়ানোর পরিবর্তে তুরস্কের লক্ষ্য থাকবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল ও মিসরের মতো আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমন।

এ অঞ্চলে প্রভাববলয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে তুরস্কের তুলনায় রাশিয়ার অবস্থা বেশ ভালো। সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের সরকারের পাশাপাশি ইরানকে সঙ্গে নিয়ে রাশিয়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে তুরস্ক, ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তবে দেশটি বিরোধে জড়িয়ে পড়েনি। অর্থাৎ, ভূরাজনৈতিক বিরোধিতা থাকার পরও মস্কো যে বাস্তবসম্মতভাবে সংকট মোকাবিলায় আগ্রহী, তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

পাশাপাশি আফগানিস্তান থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে, সে তুলনায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান থেকে সরে যাওয়াটা ছিল অনেকখানি গোছানো।

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বাশার আল–আসাদের সরকারের পক্ষে অবস্থান নেয় রাশিয়া। সেখানে থেকে যাওয়ার মধ্য দিয়ে রাশিয়া নিজের বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের কূটনীতিতে রাশিয়ার বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।

সম্প্রতি সৌদি আরব এক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর কথা বলেছে। ফলে সমরাস্ত্র বিক্রিতে রাশিয়ার এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে তুরস্ক ও রাশিয়ার চেয়ে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে চীন। অঞ্চল-পথ উদ্যোগের মাধ্যমে সংযুক্তি ও তেলের সরবরাহ নিশ্চিতের বিষয়ে চীনের যত মনোযোগ। এই পরিস্থিতিতে এশিয়া থেকে ইউরোপ ও পূর্ব আফ্রিকায় সংযোগের জন্য চীনের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব অনেক বেশি।

অর্থনীতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিলে দুটি কারণে চীন এগিয়ে থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভূমিকায় চীন অবতীর্ণ হয়নি। তাই এই অঞ্চলের ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো বৈরী পক্ষগুলোর সঙ্গে চীনের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারি রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, করোনার ধাক্কার পাশাপাশি ২০২০ সালে তেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় দারুণভাবে পর্যুদস্ত মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যে আর্থিক সহায়তা দরকার, তাতে চীনের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বেশি।

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক নিকোলাস ফিটজ্রোই বলেন, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের চলে যাওয়ার পর দেশটিতে একধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক মিত্রদের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থ সুরক্ষার জন্য আরও স্বাধীনভাবে কাজ করা যে জরুরি, তা সামনে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ায় চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আফগান পরিস্থিতির ফলে লেবানন, ইরাক ও তিউনিসিয়ার মতো দেশগুলোয় ঝুঁকি বাড়বে। তেমনি নতুন করে অস্থিতিশীলতার ক্ষেত্র তৈরি হবে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ