Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ই-কমার্সে কেন অস্থিরতা(২০২১)

Share on Facebook

লেখক: শেখ আবদুল্লাহ।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ই-কমার্স বিকশিত হচ্ছে। করোনার কারণে গত দেড় বছরে এ খাতের প্রসার হয়েছে ধারণারও বেশি। গত এক বছরে এর মাধ্যমে পণ্য বিক্রি বেড়েছে ২০০ শতাংশের বেশি। তবে সম্প্রতি কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারছে না। সরবরাহকারীদের পাওনাও পরিশোধ করতে পারছে না। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান অফিস বন্ধ রেখেছে। এসব ঘটনায় ই-কমার্স খাতের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। দেখা দিয়েছে আস্থাহীনতা। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ব্যাপক ডিসকাউন্টের বিতর্কিত মডেলের ব্যবসা, ক্রেতার সচেতনতার অভাব, তদারকিতে ঘাটতিসহ নানা কারণ এ খাতে অস্থিরতার জন্য দায়ী।

সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যাপক ডিসকাউন্টের ফাঁদে দেশের প্রায় পাঁচ লাখ লোকের আট থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ক্রেতা আছেন আড়াই থেকে তিন লাখ। আর সরবরাহকারী রয়েছেন দেড় থেকে দুই লাখ। আট থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বেশিরভাগ গ্রাহকের টাকা আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ইভ্যালি নিজেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে স্বীকার করেছে, তাদের কাছে ক্রেতা, পণ্য সরবরাহ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক পাওনাদারের ৫৪৩ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ধামাকা ডটকমের সরবরাহকারীরা বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির কাছে তারা ২০০ কোটি টাকা পাবেন। ই-অরেঞ্জের ক্রেতারা পাওনা টাকা ও পণ্যের দাবিতে রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ১৫ দিনের মধ্যে টাকা দ্বিগুণ হওয়া এবং সেই টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে কম দামে পণ্য কেনার প্রলোভন দেখিয়ে ব্যবসা করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দালাল প্লাস, শ্রেষ্ঠ ডটকম এবং ফাল্কগ্দুনী শপের বিরুদ্ধেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এ রকম আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের পাওনা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর সমকালকে বলেন, ইভ্যালি বা আলোচিত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার মডেল টেকসই নয়। তাদের ডিসকাউন্টের প্রলোভনে প্রথমে অল্প কিছুসংখ্যক ক্রেতা এসেছে। এসব ক্রেতার প্রচারণার ফলে পরে আরও ক্রেতা এসেছে। এভাবে অনেক ক্রেতা তাদের আগাম টাকা দিয়েছে। এক পর্যায়ে তারা আর নতুন ক্রেতা পায়নি। ফলে সময় বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। কিন্তু এভাবে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না। এ পদ্ধতিতে চলতে গেলে হয় নতুন ক্রেতা আসতে হবে, নতুবা বিনিয়োগকারী আসতে হবে। এর কোনোটা না এলে শেষের দিকে যারা টাকা দিয়েছে তারা লোকসানে পড়বে। তিনি বলেন, ই-কমার্স কোনো সমস্যা নয়। সমস্যা কে কীভাবে করছে, তা নিয়ে। তিনি মনে করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে নির্দেশিকা দিয়েছে, তার বাস্তবায়ন জরুরি। এখন কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্দেশিকা অমান্য করার অভিযোগ এলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ যেন কোনো ফাঁকফোকরের সুযোগ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মডেলের কারণে এ খাতে এক ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছ থেকে অনেক টাকা আগাম নিয়েছে। এখন চেষ্টা চলছে গ্রাহকের টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। যেসব প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কার্যক্রম করেছে তাদের সম্পদের হিসাব ও ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আগামীতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে আগাম পরিশোধ, সময়মতো পণ্য সরবরাহ, লেনদেন প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ই-কমার্সের প্রতি মানুষের আস্থা কমেছে। পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য ই-ক্যাবসহ সংশ্নিষ্ট সবার সঙ্গে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ই-কমার্সের জন্য দেশে আলাদা কোনো আইন নেই। ২০১৮ সালে জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা কার্যকর হয়। এর আগে এ খাত পরিচালনার কোনো নীতিমালা ছিল না। ই-কমার্স খাতে স্থিতিশীলতার জন্য ইক্যাব বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ১৬টি কোম্পানিকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্রেতাকে সেবা দিতে না পারার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সংগঠনটি। শিগগিরই আট থেকে ১০টি কোম্পানির সদস্যপদ বাতিল করবে সংগঠনটি।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ২ শতাংশ মানুষ ই-কমার্সে কেনাকাটা করেন। ছোট-বড় মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ফেসবুক পেজ খুলে ব্যবসা করছে আরও ৫০ হাজার লোক। বর্তমানে অর্ডার সরবরাহ হচ্ছে দৈনিক গড়ে দুই লাখের বেশি। প্রচলিত ধারার বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স চালু করছে।

জানা যায়, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে অনেক নতুন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যবসা ও পরিচিতির জন্য ব্যাপক ডিসকাউন্ট পদ্ধতিতে ব্যবসা করে। এসব কোম্পানির আকর্ষণীয় অফারে অনেক মানুষ পণ্য কিনতে আগাম টাকা দিয়েছেন। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে, যারা এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়ে পণ্য কিনে বিক্রির কাজ করছেন, আবার কেউ কেউ পণ্য না নিয়ে সরাসরি টাকা নিচ্ছেন। কিন্তু চাহিদার পণ্য বা টাকা না পেয়ে অনেকেই এখন দ্বারস্থ হয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত ১৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা ১৩ হাজার ৩১৭টি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই নির্ধারিত সময়ের দুই থেকে তিন মাস পরও পণ্য বুঝে না পাওয়া নিয়ে। এর বাইরে ‘চেক ডিজঅনার’ হওয়া, ‘রিফান্ডের’ টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

আজকের ডিল ডটকমের সিইও একেএম ফাহিম মাসরুর বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি এক দিনে হয়নি। গুটিকয়েক ই-কমার্স কোম্পানি আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে ব্যবসা করেছে। সরকারের কোনো দপ্তরও তাদের আটকাতে যায়নি। ফলে বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন অনেকেই ই-কমার্সে আস্থা রাখতে পারছেন না। তিনি বলেন, কয়েকটি কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে আগাম টাকা নেওয়ার জন্য লোভনীয় ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছে। এতে কিছু মানুষ অতিমুনাফার আশায় আগাম টাকা দিয়েছেন। কোম্পানি কিছু ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহ করতে পারলেও বাকিদের পারেনি। কিছু কোম্পানি ক্রেতাকে পণ্য না দিয়ে চেক দিয়েছে বা দিচ্ছে। ব্যাপারটা এমন যে, একজন ক্রেতা একটি পণ্য কেনার জন্য এক লাখ টাকা দিলেন। কিছুদিন পর ওই কোম্পানি ক্রেতাকে এক লাখ ৩০ হাজার বা দেড় লাখ টাকার চেক দিয়ে দিচ্ছে। আর ক্রেতা ব্যক্তি বলছেন তিনি ই-কমার্সে বিনিয়োগ করেছেন। এটা কোনোভাবেই ই-কমার্স নয়। কিন্তু সবার সামনে কয়েকটি কোম্পানি এই কাজ করে আসছে। অবশ্যই ব্যবসায় ডিসকাউন্ট থাকতে পারে। কিন্তু তার একটা সীমা ও পদ্ধতি থাকতে হবে। বর্তমানে আলোচিত কয়েকটি কোম্পানি যে ধরনের ডিসকাউন্ট দিয়েছে, তাতে ব্যবসা টেকসই হওয়ার সুযোগ নেই।

আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের সোস্যাল ইনোভেশন শাখার রুরাল ই-কমার্সের টিম লিডার রেজওয়ানুল হক জামি বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিতর্কিত ব্যবসা মডেলের কারণে ই-কমার্সের এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক ডিসকাউন্ট ঘোষণা করে এক ক্রেতার টাকায় অন্য ক্রেতাকে পণ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে হাজার হাজার মানুষ লোকসানে বা পুঁজি হারানোর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। এই মডেলে পণ্য সরবরাহের টাইমলাইন ধরে রাখাও সম্ভব হয়নি। ফলে ক্রেতারা পণ্য বা টাকা কোনোটাই পাচ্ছেন না।

সূত্র: সমকাল।
তারিখ: আগষ্ট ২৪, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ