Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

উইকিপিডিয়া কীভাবে কাজ করে

Share on Facebook

লেখক:অংকন ঘোষ দস্তিদার।

বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে উইকিপিডিয়া সম্পর্কে জানেন না, এমন বোধহয় খুব কমই আছেন। দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল বিষয়ের হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায় এই সাইটে। যেকোন প্রজেক্ট কিংবা অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করার প্রয়োজনীয় সকল কিছুর জন্যই তথ্যের বিশ্বস্ত মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় উইকিপিডিয়া। গুগলে কোনোকিছু সার্চ করলে যে লিঙ্কটা একদম প্রথমে কিংবা প্রথম দুই-তিনের মধ্যেই উইকিপিডিয়ার লিংক দেখায়।

প্রিয় বই, টিভি সিরিজ কিংবা চলচ্চিত্রের যাবতীয় তথ্য থেকে শুরু করে ইতিহাস, বিজ্ঞান, ইত্যাদির দাঁত ভেঙে দেয়া কঠিন বিষয় সম্পর্কেও তথ্য আছে এখানে। তথ্যের মান কিংবা বিষয়বস্তুর গভীরতা দেখে মনে হতেই পারে, নিশ্চয়ই বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিই কেবলমাত্র এখানে লেখার সুযোগ পান! কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, একদম জন্মলগ্ন থেকে উইকিপিডিয়ার নিয়ম একদম সহজ—যে কেউ এখানে অবদান রাখতে পারবে। সবার এমন ছোট ছোট অবদানের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে জ্ঞানের এই সুবিশাল ভাণ্ডার!

যে কেউ অবদান রাখতে পারে শুনে হয়তো অনেকের খটকা লাগছে। যে কেউ উইকিপিডিয়ায় তথ্য যুক্ত করতে পারে, তাহলে ভুলভাল তথ্য যোগ করে বসতে পারে? তখন কী হবে? তার মানে, উইকিপিডিয়াকে যেসব তত্ত্বকে এতদিন আমরা অকাট্য সত্য বলে মনে করেছি তার অনেকগুলোই কি ভুল?

ব্যাপারটা তেমন নয়। উইকিপিডিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় বিশ্বখ্যাত জার্নাল নেচার-এ একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়—উইকিপিডিয়া নিয়ে। তাতে দেখানো ইংরেজি ভাষার আর্টিকেলগুলো নির্ভুলতায় শতবছরী এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতো প্রায় বিশ্বকোষের সমকক্ষ হয়ে উঠেছে!

কেমন করে এটা সম্ভব হলো? উইকিপিডিয়ায় যে কেউ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স নির্বিশেষে অবদান রাখতে পারেন বটে, তবে কেউ চাইলেই ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য যুক্ত করে পার পাবেন না। উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে তথ্যের সাথে দিতে হয় যথাযথ তথ্যসূত্র। সেই তথ্যসূত্র হতে পারে জাতীয় দৈনিক, বই, বিজ্ঞান সাময়িকীর মতো বিশ্বস্ত এবং যাচাইযোগ্য মাধ্যম। উইকিপিডিয়ার স্বেচ্ছাসেবকেরা নিয়মিত বিভিন্ন নিবন্ধে চোখ রাখেন, যাচাই করে দেখেন নতুন যোগ করা তথ্য ঠিকঠাক আছে কিনা। উইকিপিডিয়া যেহেতু একটি অনলাইন বিশ্বকোষ, তাই এখানে নিবন্ধ তৈরি করতে হলে সেই বিষয়কে উল্লেখযোগ্য হতে হয়। অর্থাৎ আমি চাইলেই নিজেকে নিয়ে, বাবা/মাকে নিয়ে বা আমার প্রিয় পোষা প্রাণী নিয়ে নিবন্ধ লিখতে পারব না। লিখলেও সেগুলো মুছে দেয়া হবে। বরং লিখতে পারি ইতিহাস বা বিজ্ঞানের কোনো বিষয়, নামকরা চলচ্চিত্র, টিভি সিরিজ, প্রিয় ক্রিকেট/ফুটবল দল/ক্লাব, দেশ, জেলা, উপজেলা, ইত্যাদি নিয়ে।
বিজ্ঞাপন

ইতিমধ্যে অনেক নিবন্ধ তৈরি করা আছে, সেগুলোতে তথ্য যোগ করে মানসম্মত করে তোলাটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যাঁরা এই মুহূর্তে লেখাটা পড়ছেন, তারা চট করে দেখে আসতে পারেন, বাংলা উইকিপিডিয়াতে আপনার নিজের জেলা নিয়ে নিবন্ধে যথেষ্ট তথ্য আছে কিনা! না থাকলে ওয়েবপেজটির ওপরের দিকে থাকা ‘সম্পাদনা’ বাটনে ক্লিক করে তথ্য যোগ করে নিতে পারেন! খুব ভালো হয় যদি এর আগে নিজের একটা অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে পারেন। ‘অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন’ অপশনটাও পাবেন স্ক্রিনে ডানে ও পরের দিকে। আর হ্যাঁ, তথ্যটা কোথা থেকে নিয়েছেন, সেই তথ্যসূত্রটা যোগ করতে ভুলবেন না! প্রথম-প্রথম অনেকেই ভয় পান, যদি ভুল করে বসি তাহলে কী হবে! তাদের জন্য উইকিপিডিয়ার উদার আহ্বান, ‘সাহসী হোন!’ আপনি যদি পড়তে গিয়ে কোথাও কোনো ভুল দেখেন, তবে নির্দ্বিধায় তা সংশোধন করে ফেলুন, নতুন বলে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই নেই।

২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং বর্তমানে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন নামের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত উইকিপিডিয়া অনলাইনের বৃহত্তম বিশ্বকোষ। প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস যখন উইকিপিডিয়া চালু করেন, তখন তাঁর মাথায় ছিল সহজ, কিন্তু বৈপ্লবিক একটি ভাবনা—’ভাবুন তো এমন এক পৃথিবীর কথা, যেখানে সমস্ত জ্ঞানে সব মানুষের থাকবে অবাধ প্রবেশাধিকার।” জ্ঞানের এ রাজ্যে থাকবে না কোনো বাধা—এমন স্বপ্নে বুক বেঁধেই শুরু হয় উইকিপিডিয়ার যাত্রা।

সকলের কাছে সবসময় গ্রন্থাগারে যাওয়ার সুযোগটা সমানভাবে থাকে না। গ্রাম বা উপজেলা পর্যায়ে এই সুযোগ সীমিত, কারণ হয়তো ভালো অনেক এলাকায়। মুদ্রিত বই নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ, তবে স্বাভাবিকভাবেই তা হালনাগাদ করার সুযোগ নেই, নতুন সংস্করণ প্রকাশের আগ পর্যন্ত। আবার চাইলেই প্রয়োজনীয় বই হাতের কাছে নাও পাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন বইয়ের তথ্য প্রাসঙ্গিকভাবে উপস্থাপন করাটাও আরেক চ্যালেঞ্জ। উইকিপিডিয়ার যাত্রা শুরু করার পেছনে অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল এই বাধাগুলোকে পার করে নতুনভাবে মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়া। বর্তমানে বিশ্বের ৩০০টিরও বেশি ভাষায় চালু আছে জ্ঞানের এই বৃহত্তম বিশ্বকোষ। যেখানে স্থান হয়েছে ভাষা বাংলারও (bn.wikipedia.org)। ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি চালু হয় বাংলা উইকিপিডিয়া। ২০২০ সালে ২৫ ডিসেম্বর বাংলা উইকিপিডিয়া পার করে এক লক্ষ নিবন্ধের মাইলফলক।

উইকিপিডিয়ার সব তথ্য সঠিক, এটা কেউ দাবি করে না। তবে এও ঠিক, ভুল কোথায় নেই! সব তথ্য যাচাইযোগ্য, এই বৈশিষ্ট্যই উইকিপিডিয়াকে এত গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। বিশ্বব্যাপী উইকিপিডিয়া যেন আরও বিস্তৃত পরিসরে পরিচালিত হয়, যেন আরও মানুষ জানতে পারে এটা সম্পর্কে, সেজন্য গড়ে ওঠে বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থা। বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের চ্যাপ্টার উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ। অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মশালা, নিবন্ধ প্রতিযোগিতা প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষকে উইকিপিডিয়া সম্পর্কে জানান ও সমৃদ্ধ করে তোলার কাজ করেন। ধারণা করা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে উন্মুক্ত জ্ঞানের বাস্তুতন্ত্রের অত্যাবশ্যক অংশ হবে উইকিমিডিয়া। উইকিপিডিয়া যে সেই লক্ষ্যের প্রধান কাণ্ডারি, সেটা নিয়ে কারো দ্বিমত আছে বলে মনে হয় না।

উন্মুক্ত জ্ঞানের এ পৃথিবীতে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিতে হবে বাংলা ভাষাভাষীদেরকেই। সবাই মিলে কাজ করার মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্ভবত আমাদের স্বপ্নের বিশ্বকোষ, যেখানে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ তার আগ্রহের বিষয়গুলি পড়তে পারবেন মাতৃভাষাতেই।

লেখক: শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বেচ্ছাসেবক, উইকিপিডিয়া

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ