Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

এলিভেন মিনিটস-পাওলো কোয়েলহো-পর্ব-ষোল (১৬)

Share on Facebook

অনুবাদে: ইললু।
(১৬)

রালফের আঙ্গুলগুলো আলতো ছোঁয়ায় ছুঁয়ে গেল তার মুখ,ছুটে আসা শরীরের গন্ধটায় নতুন এক আকাশ ছোঁয়া অনুভুতি,এ স্মৃতি তার কাছে জন্ম জন্মান্তরের জন্যে,ওটা তো লুকোনো ছিল তার জন্মে,প্রথম দেখা গাছটায়,প্রথম থাকার ঘরটায়-স্বপ্নের ছবিটা আঁকা করলো সে মনের মনে।সে নিশ্চয় খুঁজেনিচ্ছে শরীরের গন্ধটা তার হাতের ছোঁয়ায়,জানা নেই তার,জানার দরকার নেই তার,কেন না সেখানে শরীরটাই সোচ্চার,আর সব কিছুই নগন্য।

রালফ আদর করছিল নতুন একটা পৃথিবী,থেমে ছিল না মারিয়াও।ও ভাবেই কাটিয়ে দিল তারা বেশ কিছুটা সময়,নতুন এক আনন্দের প্লাবনে ছুঁয়ে যাওয়া দুটো শরীর যদিও যৌনতা নেই,মানসিক চাপ নেই দেহ যোগের।

তার যোনীদ্বারে তখন অদ্ভুত এক শিহরণ,বুঝতে পারলো কামনার স্রোতে ভেসে যাচ্ছে যৌনাঙ্গ।মনটা অপেক্ষায়,কখন রালফের হাতের ছোঁয়ায় মাতাল হবে তার যৌনাঙ্গ,
অজানা হবে সে অনুভুতি,আপত্তি নেই তার খুঁজে নিতে পচ্ছন্দের মানুষের হাতে শরীর ছোঁয়ার নতুন ছন্দটায়।তার হাতটা ছুঁয়ে যাচ্ছে রালফের হাতটা,বাহুমুল,মাঝে মাঝে ইচ্ছা হচ্ছিল হাতটা সরিয়ে দেয়ার।কিন্ত ঐ অনুভুতিও যে অভাবনীয়,একটা যন্ত্রনার সুর লুকানো সেখানে,একটা চমক দেয়া ছোঁয়া আছে ঐ সুরটায়।সেও ছুঁয়ে যাচ্ছিল রালফকে একই সুরে, চোখ বুজে খুঁজছিল শরীরের মসৃনতার পার্থক্য বাহুমুলের সাথে।এত ভাব ভাবনার কি দরকার,সে শুধু খুঁজে নিতে অনুভুতির চরম,উত্তেজনার চরম আনন্দটা।

রালফের আঙ্গুল মারিয়ার স্তনের চারপাশে এঁকে দিল উন্মাদনার একটা বৃত্ত,বন্য জন্তটা খুঁজে পেয়েছে শিকারের স্বাদ।মারিয়ার মনটা চাইছিল দ্রুত গতিতে সে ছুটে যাক স্তনের বোঁটায়,
অনুভুতির গতির দ্রুততা যে অনেক বেশী ছোঁয়ার গতির চেয়ে,মনে হচ্ছিল যেন কেউ জেনেই ছোঁয়ার হাতটা শ্লথ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।স্তনের বোঁটাগুলো তখন পাহাড়ের চূড়ার মত দৃঢ় ভিন্ন এক সুরে,লুকোচুরি খেলার ছলে ছোঁয়া,না ছোঁয়ায় তার।আর উত্তেজনা,কামনার জোয়ারের প্লাবনে আর ভেজা তার যৌনাঙ্গ।তার উরুতে তখন ভালবাসার ছোঁয়াচ,হাতের সুর ছুটে যাচ্ছিল জঙ্গায়।রালফও নিশ্চয় অনুভব করছে যোনীর উত্তাপটা,তবু সে ছুঁয়ে যায়নি,যোনীদ্বার।মারিয়ার হাতটাও থেমে ছিল না,ছুয়ে যাচ্ছিল অঙ্গগুলো একই সুরে,লোমগুলো।হঠাৎ করে যেন কুমারীর লজ্জা ছড়িয়ে গেল মারিয়ার শরীরে,মনে,যেন প্রথম বারের মত আবিষ্কার করা একজন পুরুষকে।সে ছুঁয়ে গেল তার লিঙ্গ,কিছুটা অবাক হলো লিঙ্গের দৃঢ়তায়।যদিও সারা যৌনাঙ্গ ভেজা কামনার উচ্ছাসে,তবু আরও অপেক্ষা করতে হবে তাকে,হয়তো বেশ একটু সময় দরকার পুরুষদের,কে জানে।

লিঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া আরম্ভ করলো সে,উল্লাসের এক কুমারীর মত,ভুলে গেছে তখন পতিতাবৃত্তির পর্ব।প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে গেছে তখন পচ্ছন্দের পুরুষটার শরীরে,বেশ শক্ত হয়ে গেছে লিঙ্গটা,বেড়ে গেছে আকারে,আরেকটু চাপ সৃষ্টি করলো,তার জানা তখন অনুভুতির এলাকা,উপরে নয় নীচে,তার হাতের আঙ্গুল দিয়ে চামড়াটা খুলে পেছন দিকে মুড়ে দিতে হবে।উত্তেজিত তখন রালফ,বেশ উত্তেজিত,তার যোনীর ঠোঁটগুলো আলতো করে ছোঁয়া আরম্ভ করলো,মনটা চাইছিল শক্তি দিয়ে সে এলোমেলো করে দিক তাকে।তা করলো না রালফ,জরায়ু থেকে বের আসা রসে,সে বৃত্ত এঁকে দিল তার স্তনের বোঁটায়।এ পুরুষটা তাকে শুধু ছুঁয়ে যাচ্ছে,সে যেমন ছুঁয়ে যায় নিজেকে।

এক হাত ধরে থাকা স্তন,অদ্ভুত এক অনুভুতি ছড়ানো মনে,বুঝতে পারে নি,কেন রালফ তাকে আদর করে জড়িয়ে ধরছে না।না,তারা তো একজন আরেকজনকে আবিষ্কার করছে,অনেক সময় দরকার তাদের,হতে পারে তাদের দেহযোগ তখন,হয়তো সেটাই স্বাভাবিক।কিন্ত যা ঘটছে সেটা নতুন,সংযম দরকার,নষ্ট করে দিতে চায় না মারিয়া এই বিশেষ মুহুর্তটা।মনে পড়লো প্রথম দেখার সন্ধ্যাটা,মদের গ্লাসের চুমুক,আগুনের আলোয় খুঁজে নেয়া নতুন জগতটা।ঐ মানুষটার সাথে সে আবার ড্রিঙ্ক করতে চায়,সঙ্গটাই ভুলিয়ে দেবে,সস্তা মদের মাথা কামড়ানো,যা আনবে মনে অজানা এক শূন্যতা।

কিছুক্ষন থেমে গেল সবকিছু,জড়িয়ে নিল তার আঙ্গুল রালফের আঙ্গুলের সাথে,
কামনার আনন্দ সুর বের হয়ে আসা রালফের মুখে,নিজেও সীৎকারের জগতটায় ছড়ানো তখন মারিয়া।চরম সুখ উল্লাস শুধু ছুঁয়ে যায়নি শরীর,দেহ উল্লাস ছুটে যাওয়া তাদের মস্তিষ্কেও,থেমে থাকা নেই আর।মনটা বলছিল এটাই,ফিরে গেছে সে কুমারীত্বের অনুভিতিতে।

চোখের রুমালটা খুলে নিয়ে রালফের রুমালটাও খুলে দিল,জ্বালিয়ে দিল বিছানার পাশে বাতিটা।নগ্ন দুটো শরীর,কোন হাসি ছিল না কারও মুখে,শুধু আনন্দে,অবাক চোখে তাকিয়ে থাকা,একে অন্যের দিকে।আমিই যে ভালবাসা,আমিই সেই স্বর্গীয় সুর,মনটা বলছিল তার। ‘নাচবে আমার সাথে’,বলা উচিত ছিল,কিন্ত বলতে পারেনি।তারা আলোচনা করলো,কবে দেখা হবে আবার,সপ্তাহ দুয়েকের মাঝে।রালফ বললো,এক প্রদর্শনীতে,আমন্ত্রন জানাতে চায় মারিয়াকে,কিছুটা বিব্রত মারিয়া।কি হবে তার পরিচিতি রালফের পৃথিবীতে,কি ধরণের সমালোচনা হবে সেখানে,হয়তো বদলে যাবে তার পচ্ছন্দের মানুষটার সামাজিক চেহারা।

সে বললো “না”,যদিও তার মনটা বলতে চাইছিল, “হ্যা”,কিছুটা জোর দিয়ে রাজী করানোর চেষ্টা করলো রালফ,অযথার অনেক যুক্তি কারণ খন্ড হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত রাজী হলো,মারিয়া।রালখের ইচ্ছা ছিল তাদের প্রথম দেখা ক্লাবে দেখা করার,অসম্মতি জানালো মারিয়া,ব্রাজিলিয়ানদের বিশ্বাস প্রথম দেখার জায়গায় আবার দেখা করলে সেখানেই সেই সম্পর্কের সমাপ্তি।

কিছুটা আনন্দ ছিল রালফের কথায় অন্তত শেষ হয়ে যাচ্ছে না তার আলোর উৎসটা,দেখা করবে তারা একটা গীর্জায় যেখান থেকে খুঁজে নেয়া যায় সারা শহরটা,ঠিক সান্তিয়াগো যাওয়ার পথে,তীর্থযাত্রীদের সাথে তাদের যাওয়া বারেবারে।

মারিয়ার ডাইরী থেকে নেয়া,ব্রাজিলে ফিরে যাওয়া টিকিট কেনার আগের সন্ধ্যাটায়ঃ

“অনেক অনেক দিন আগের গল্প, একটা পাখীর কথা এটা।শরীরটা সাজানো ছিল তার সুন্দর দুটো পাখায়,ঝকঝকে রংএর বাহারে সাজানো পালকে।সহজ কথায় বলতে গেলে তার চোখ ছোঁয়া সৌন্দর্য নিয়ে সে উড়ে বেড়াত,আকাশের এ পাশ ও পাশ।

একটা মেয়ে,আকাশে ডানা ছড়ানো তার সৌন্দয্য,দেখে অবাক,অভিভুত,ছুয়ে যাওয়া তার শরীরেমনে অদ্ভুত এক ভাললাগা।সে পাখীটাকে অনুরোধ করলো তাকে নিয়ে আকাশে ওড়ার জন্যে।মেয়েটার ইচ্ছা ছিল পাখীটার মতই কবিতার ছন্দে উড়ে যাওয়া একসাথে।নতুন অভিজ্ঞতায় পাখীটার প্রশংসায়,শ্রদ্ধায় পঞ্চমুখ মেয়েটা।
মেয়েটার মনে নতুন ,পাখীটা হয়তো একদিন উড়ে যেতে চাইবে দূরের পাহাড়টায়!ভঁয়,আতঙ্ক যদি ফিরে না আসে আর,হারিয়ে যাবে চিরদিনের মত তার নতুন রংধনু।বড় হিংসা হলো তার মনে,একা হয়ে যাবে সে আবার,হারাবে নতুন স্বর্গের সুরটা।

ভেবে নিল মেয়েটা,”একটা ফাঁদ পেতে রাখবো,এর পরের বার পাখীটা এলে ধরে রাখবো তাকে,সে শুধু হবে আমার একার”।
ভালবাসার পাখীটা ফিরে এলো পরের দিন,আটকে পড়লো,আর চিরদিনের মত আটকে থাকা খাঁচায়।মেয়েটা পাখীর দিকে তাকিয়ে থাকতো প্রতিদিন তার উজাড় করা ভালবাসায়।খাঁচায় আটকে থাকা পাখীটা তখন একটা প্রদর্শনীয় বস্ত মেয়েটার বন্ধু বান্ধবদের জন্য।মেয়েটা হারিয়ে ফেললো,আগের আবেগটা,পাখীটা তো এখন তার খাঁচায়।খাঁচায় পাখীটা ভাঙ্গা মনে হারিয়ে ফেললো,তার উজ্জল্য।আকাশ মাতানো সৌন্দর্যটা হারিয়ে যাওয়া খাঁচায় সাজানো এক কুৎসিত পাখী।

কিছুদিন পর পাখীটা মারা গেল,হারানো স্বাধীনতার শোকে।মেয়েটা শোকে দুঃখে কাটায় সময়গুলো,শুধু ভেবে প্রথম দেখে দিনটার কথা,আকাশের অনন্তে উড়ে বেড়ানো মুক্ত পাখীটার কথা।ভুলে গেছে সে তখন খাঁচার গল্প,খাঁচায় পাখীটার যন্ত্রনার ইতিহাস।
মেয়েটা যদি মনে তলিয়ে দেখতো,পাখীর স্বাধীনতাতেই ছিল মনটার আনন্দ,আকাশের মেঘ নয়,পাখীর ডানার বৈচিত্রতাও নয়।পাখী ছাড়া মেয়েটার জীবনটা ছিল যেন অর্থহীন।

একদিন এক আগন্তক এসে মেয়েটার দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল,দরজায় দাঁড়ানো আগুন্তককে জিজ্ঞাসা করলো সে, “কি চাও তুমি,আমার কাছে”?

“তুমি যেন মুক্তির ডানায় খুঁজে নিত পার,আকাশের ঠিকানা”, উত্তর দিল,মরণ দেবতা, “তুমি যদি ছেড়ে দিতে পাখীটাকে স্বাধীনতায়,খুঁজে পেতে প্রতিনিয়ত তার মুক্তির আলো।
বাধনে হারানো তার উচ্ছাস”।

০০০০০০

মারিয়া গেল ট্র্যাভেল এজেন্টের কাছে ব্রাজিলের টিকিট নিয়ে আসার জন্যে,এ কটা মাস ধরে অনেকটা তো অভ্যাস করে যাওয়া তার।ক্যালেন্ডারে তারিখটাও লিখে রাখলো,আর মাত্র দুটো সপ্তাহ।তারপর জেনেভা একটা স্মৃতির পাতা,ভালবাসার পুরোনো একটা মুখ।রু ডে বার্ন হবে শুধু একটা নাম,সুইজারল্যান্ডের রাজধানীর এক অজানা উপহার।মনে পড়বে তার ঘরটা,
লেকের সুবাস,ফরাসী ভাষা,তেইশ বছর বয়সের মেয়ের পাগলামির উপ্যাখান(গতরাতে কাটানো তার জন্মদিন)।

পাখীটাকে খাঁচায় বাঁধতে চায় না,সে।স্বাধীনতাই যে তার সৌন্দর্য্য,এ এক অবিশ্বাস্য স্বর্গীয়
যোগ তার জীবনের পাতায়।ঐ ছন্দ,শুধু খুঁজে নেয়া যায় মুক্তির সুরে।সে যেন সেই পাখীটা,
রালফ হার্টে পাশে মনে করিয়ে দেবে পুরোনো,তার আগামীর উচ্ছাস নয়।ঠিক করে নিল,একবার দেখা করেই বিদায়টা নেবে সে,বারেবারে সাক্ষাতের যন্ত্রনা মনে করিয়ে দেবে, “দেখা হবে না আর”।সকালে হেঁটে বেড়ালো সারা শহর অচেনা এলাকাগুলোও বড় চেনা তার,সান্তিয়াগো যাওয়ার পথটা,বারগুলো,এ যেন সবকিছুই তার বড় আপন।শঙ্খচিল ভেসে যাওয়া লেকের এধার ওধার,শব্দ করে ছুটে যাওয়া বিমান,হাতের আপেলের রংটা,রংধনুর আকাশ,মনের লুকোনো চাওয়াগুলো বেশ সোচ্চার তখন।সে তো বেশ কটা ছোট শহরের চেহারা দেখেছে,এ রকম মন কেড়ে নেয়া চেহারা চোখে পড়েনি,তার।দালান কোঠার চেহারাটা না,সারি সারি ব্যাংক না,লুকানো ব্রাজিল খুঁজছিল তার মনটা।ছোট বাজার,একপাশে মেলা,
বাজারের দরদামের হৈ চৈ,স্কুল পালানো ছেলে মেয়েদের দল লেকের ধারে চুমুতে মত্ত,(মা বা বাবা অসুস্থ বলে আসেনি স্কুলে),হয়তো সব কিছু মেলানো চেহারাটায় ব্রাজিল আছে কোথাও।ওর মাঝে আছে লোকজন যারা শহরটাকে ভাবে আপন,আবার আছে যারা ভাবে এ যে অচেনা আকাশ তাদের কাছে।

লাইব্রেরীতে খামারের বইটা ফেরত দিয়ে আসলো।কিছুই বুঝতে পারেনি সে মাথামুণ্ডু,তবে মাঝে মাঝে হতাশা যখন মনটা ছুঁয়ে গেছে তার,ঐ বইটা কেন জানি দিয়েছে
তাকে আনন্দ অবকাশ।বইটা ছিল তার নীরব সঙ্গী,গ্রাফগুলোয়,লালচে মলাটে ছিল লাইটহাউস,
যাত্রাসঙ্গী তার অন্ধকার পথটায়।সবসময় ভবিষৎ নিয়ে ভেবে যাওয়া,অবাক হওয়া বর্তমানে,ওটাই তার চরিত্র।সে নিজেকে খুঁজে পেয়েছে,ভালবাসার হতাশায়,যন্ত্রনায়,আনন্দে-আর এগিয়ে যেতে চায় না সে,যবনিকা টেনে আনার ইচ্ছা তার।
অবাক লাগে,যখন তার কোন কোন সহকর্মী বলে মাঝে মাঝে তারা যৌনসুখ খুঁজে পায় এই দেহ ব্যাবসায়।সমাধান করতে পারেনি,হয়তো এটা তার অক্ষমতা যৌনসুখের চরমসুখে পৌঁছানোর,যোনী সঙ্গমে।হয়তো কল্পনা ছুটে যাওয়া এত অন্ধকারে,যে দেহযোগের সুখটা সরে গেছে মনের আকাশটা থেকে,রালফ হার্টও যা খুঁজছে প্রতিনিয়ত।হয়তো ভালবাসা খুঁজে পায়নি সে,(বাবা,মা,বন্ধুদের বলা),শরীর সুখ পাওয়ার জন্যে যা দরকার বিছানায়।

লাইব্রেরীয়ানকে বেশ হাসিখুশীই দেখলো,সাধারণত কথাবার্তা গুলো বেশ মেপে বলা,মহিলা।
স্যান্ডউইচ খেতে খেতে আমন্ত্রন জানালো তার সাথে ভাগ করে খাওয়ার জন্যে,মারিয়া
ধন্যবাদ জানিয়ে বললো,সে খেয়ে এসেছে।
“বইটা পড়তে বেশ সময় কাটিয়েছ,তুমি”?
“আমি কিছুই বুঝতে পারিনি বইটার”।
“মনে আছে তুমি কি জিজ্ঞাসা করেছিলে,আমাকে একবার”?
মাথা নেড়ে সে বললো,না।লাইব্রেরীয়ানের মুখ দেখে সে বুঝতে পারলো,যৌনসঙ্গমের কথা বলছে।
“জান,তোমার বলার পর একটা লিষ্ট করেছি,এখানে তেমন একটা কিছু নেই।তাই আমি
বেশ কিছু বই আনার জন্যে অর্ডার দিয়েছি,যুবক যুবতীদের যৌনতা সমন্ধে জানা দরকার।অন্তত তাদের শিক্ষাটা যেন সবচেয়ে খারাপ পদ্ধতিতে না হয়-বেশ্যাবৃত্তিতে”।
একপাশে রাখা মলাট দেয়া বেশ কটা বই দেখালো সে।
“সবগুলো সাজানো হয়নি,পাতা উল্টিয়ে দেখে আমার মনে এনেছে শংকা”।
মারিয়া কিছুটা অনুমান করতে পারলো কি বোঝাতে চাচ্ছে লাইবেরীয়ানঃঅস্বাভাবিক অবস্থানে
সঙ্গম,ধর্ষকাম,ঐ ধরণের জিনিষপত্র।কাজে ফিরে যেতে হবে তাকে(তার ব্যাঙ্কে কাজ না দোকানে,বলাটা মনে নেই)।
বের হওয়ার সময় লাইব্রেরীয়ানটা বললো, “তুমিও ভঁয় পাবে পড়লে,জান ভগাঙ্কুর মানুষের
আবিষ্কার”?
আবিষ্কার?এই তো গত কদিন আগে তার ভগাঙ্কুর নিয়ে খেলা করছিল কেউ,সেটা তার সাথেই আছে সবসময়।
“১৫৫৯ খ্রীষ্টাব্দে এটার অস্তিত্ব পুরুষেরা মেনে নেয়,ডাক্তার মাটেও রিয়ালডো কলম্বো,
‘ডে রে এনাটোমিকা’, বইটা প্রকাশ করার পর।১৫০০ বছর ধরে মানুষ ওটার অস্তিত্ব অবজ্ঞা করে গেছে,অন্তত ক্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরা।কলম্বো মেয়েদের শরিরে ওটার প্রয়োজনীয়তা
বিস্তৃত ব্যাখা করে বুঝিয়ে দিল,পৃথিবীর ভুলটা।বিশ্বাস করতে পার”?
তারা দুজনেই হেসে উঠলো।
“বছর দুই পরে,১৫৬১ খ্রীষ্টাব্দে,আরেক ডাক্তার গাব্রি ফালাপিও বললো, ‘ভগাঙ্কুর’, তার আবিষ্কার।দুজন ডাক্তার ইটালিয়ান,ইতিহাসের পাতায় এনে দিল ভগাঙ্কুরের কথা”!
আলাপটা ছিল বেশ মজার,কিন্ত মারিয়া ওগুলো মাথা ঘামাতে চায় না।কেন না শুধু রালফের
ছোঁয়ার কথা মনে করে যোনীদ্বার সিক্ত তার,চোখে বাঁধা রুমাল,শরীর ভঁরা আদর।মনে হলো, না শরীরটা মরে যায়নি,জেগে উঠেছে নতুন ছোঁয়ায়।বেঁচে থাকাই তো মুক্তির গান।

লাইব্রেরীয়ান যেন নতুন কিছু একটা আবিষ্কার করেছে,থেমে থাকতে চায় নি সে।ভগাঙ্কুরের ব্যাপারে সে তখন বিশেষজ্ঞ।
“আবিষ্কারটা মেয়েদের তেমন নতুন একটা সম্মান এনে দেয়নি।আমরা যে আফ্রিকান উপজাতীয় মেয়েদের ভগাঙ্কুর কেটে ফেলার কথা শুনি,সেটা আর নতুন কি?এমন কি
উনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপেও,কেটে ফেলতো ভগাঙ্কুর,শরীরের একটা অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ
বলে,বরং ওটা নাকি নিয়ে আসে হিষ্টিরিয়া,পরকীয়া প্রেমের উচ্ছাস,বন্ধ্যাত্ব”।

মারিয়া বিদায় জানাতে চাইলো,লাইব্রেরীয়ান যেন না শুনেই বলতে থাকলো,
“সব চেয়ে অবাক করা হলো,ফ্রয়েড,যাকে বলা হয় মনোবিজ্ঞানের জন্মদাতা,তার মতে
মেয়েদের যৌন সুখ ছড়ায় ভগাঙ্কুর থেকে যোনীদ্বারে।তার চরম বিশ্বাস!ফ্রয়েড থেমে
থাকেনি সেখানে,তার বলা মেয়েদের যৌনাভুতি যদি ভগাঙ্কুরে থাকে,তবে সেটা তাকে শুধু শিশুসুলভ করে দেয় না,তাকে করে দেয় উভকামী।যোনীভেদে মেয়েদের শারীরিক আনন্দ
যতটুকু না পায়,তার চেয়ে বেশী আনন্দ পায় ভগাঙ্কুর ছোঁয়ায়,ঐ ইটালিয়ান ডাক্তারদের
যেটা আবিষ্কার”।

বেশ অন্যমনষ্ক হয়ে পড়লো মারিয়া,ফ্রয়েডের কথাগুলো কি শিশুসুলভ,যৌনসুখ কি আটকে থাকা ভগাঙ্কুরে।নাকি ফ্রয়েড ভুল?
“তুমি জি স্পট,কি জান”?
“তুমি জান ওটা কোথায়”?
কিছু লজ্জায় লাইব্রেরীয়ান বললো,
“দোতলার ঘরটার পেছনের জানালাটা”।
চমৎকার!ও যে ভাবে যোনীর বর্ননা দিল,ওটা যেন একটা প্রাসাদ।হয়তো কোন মেয়েদের বই এ পড়েছে সে।যেখানে হয়তো দরজায় এসে কেউ ডাক দিলে খুঁজে পাবে,আরেকটা পৃথিবী।যখন সে হস্তমৈথুন করে,তার মনের একাগ্রতা ঐ জী স্পটে,ভগাঙ্কুরে নয়।কেননা ভগাঙ্কুরের অনুভুতিটা তাকে যন্ত্রনা দেয়।

সে সবসময় ছুটে যায় দোতলার পেছনের জানালায়।লাইব্রেরীয়ান আগ্রহ নেই দেখে,মারিয়া
হাত নাড়িয়ে বিদায় নিল।কি যে তার মাথায় এসেছিল এলোমেলো,এ দিনটা তো ভগাঙ্কুর,জি স্পট,বিদায় নেয়ার দিন না।কোকাকাবানায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না,কিন্ত কোন কারণ ছাড়াই উদ্ভট এক মানসিক বাধ্যকতা ছিল শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যাওয়ার জন্যে।বিকালটা তো সে কাটিয়ে দিতে কেনাকাটা করে,না হয় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের সাথে আলাপ করে,যে তার খদ্দের ও,হয়তো বসে বসে কফি খাওয়া কোথাও।কিন্ত এখনও তো দুটো সপ্তাহ কাটাতে হবে তাকে জেনেভায়,খুঁজে নিতে হবে শহরটাকে নতুন চোখে,নতুন আনন্দে।

গেল তার পুরোনো জায়গাগুলোতে,লেকের ধারে,আকাশ ছোঁয়া ফোয়ারাটায়,শহরের প্রতীক ফুলের ঘড়ির বাগান,ইচ্ছে করছিল শুয়ে থাকতে কিন্ত ঘড়ি তো মেনে নেবে না সেটা।
সব কিছু থমকে যাবে-সময়টাতো একটা স্মৃতি।

কি বলছে সে নিজেকে সেই সকাল থেকে,তার নতুন করে খুঁজে পাওয়া কুমারীত্বের কথা।সারা পৃথিবীটা যেন থমকে আছে,ঘড়ির কাঁটা আটকে থাকা সেকেন্ডে,সে মুখোমুখি এক সমস্যার,ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় সেটা,এটা তো কোন দুঃস্বপ্ন নয়।
“কোন কিছু ভেব না।পৃথিবীটা যে থেমে গেছে।কি হলো হঠাৎ”।
আর নয়!
পাখীর গল্পটা,ওটা কি রালফ হার্ট কি নিয়ে লেখা?
না, ওটা তারই গল্প।

সূত্রঃ চতুর্মাত্রিক।
তারিখঃ অক্টোবর ১২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ