Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ওসামা বিন লাদেনের হাত ধরে আল–কায়েদার বিশ্বত্রাস হয়ে ওঠা (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: রাকিব হাসান।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব বাণিজ্যকেন্দ্র ও টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, যাতে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো বিশ্ব। হামলায় প্রাণ হারায় তিন হাজারের বেশি মানুষ। নজিরবিহীন ওই হামলার পর আল–কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন আমেরিকানদের চোখে বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে ওঠেন। তাঁকে ধরতে পরের মাসেই আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এর এক দশক পর পাকিস্তানের একটি বাড়িতে মার্কিন কমান্ডোদের অভিযানে নিহত হন ওসামা বিন লাদেন। তবে এর পরও থামে না তাঁর সংগঠন আল–কায়েদার সন্ত্রাসী তৎপরতা।
বিন লাদেনের উত্থান

ওসামা বিন লাদেনের জন্ম সৌদি আরবের রিয়াদে। ১৯৫৭, মতান্তরে ১৯৫৮ সালে জন্ম নেওয়া বিন লাদেন ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ বিন লাদেনের ৫২ সন্তানের মধ্যে ১৭তম ছিলেন। বিন লাদেনের বাবা ছিলেন সৌদি আরবের অন্যতম ধনকুবের। বিন লাদেনের অন্য ভাইয়েরা পশ্চিমা দেশগুলোতে পড়াশোনা শেষে তাঁদের বাবার প্রতিষ্ঠানেই কাজ শুরু করেন। কিন্তু বিন লাদেন ছোটবেলা থেকেই আলাদা ছিলেন।

সৌদি আরবের জেদ্দায় তিনি পড়াশোনা করেন। অন্যান্য সৌদি নাগরিকের মতো তরুণ বয়সেই বিয়ে করেন। তরুণ বয়সেই মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগ দেন।

১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে বিন লাদেন কলেজে পড়ার সময়ই কট্টর ধর্মীয় গুরু আবদুল্লাহ আজমের মতাদর্শ অনুসরণ শুরু করেন। আবদুল্লাহ আজম বিশ্বাস করতেন, ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদের জিহাদে অংশ নেওয়া উচিত। তাঁর এই মতবাদ তরুণ বিন লাদেনের মনে বেশ আলোড়ন তুলেছিল। ওই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জীবনে পশ্চিমা প্রভাব দেখে বেশ অসন্তুষ্ট ছিলেন লাদেন।

পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেন

১৯৭৯ সালে সোভিয়েত সেনারা আফগানিস্তান আক্রমণ করেন। তখন আজম এবং ওসামা বিন লাদেন আফগান প্রতিরোধ দলে যোগ দিতে আফগানিস্তান সীমান্তে পাকিস্তানের শহর পেশোয়ারে পৌঁছান। এই দুজন সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি। তবে আফগান যোদ্ধাদের জন্য টাকাপয়সার জোগান ও তাঁদের মানসিকভাবে চাঙা করতে আজম ও বিন লাদেন বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তাঁদের সংগঠন মকতব আল-খিদামাত (এমএকে) একটি বৈশ্বিক নিয়োগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রুকলিন এবং টুকসন বা অ্যারিজোনার মতো দূরবর্তী জায়গায় তাদের কার্যালয় স্থাপন করে। সেখান থেকে তারা ‘আফগান আরব’ নামে পরিচিত অভিবাসী সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। মকতব আল-খিদামাত তাদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের কাজও করে।

লাদেনের আল–কায়েদা গঠন ও সৌদিতে ফিরে যাওয়া

হিস্টোরি ডটকমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৮ সালের দিকে বিন লাদেন নিজেই আল–কায়েদা গঠন করেন। প্রথম দিকে এই সংগঠন সামরিক অভিযানের পরিবর্তে সন্ত্রাসবাদের প্রতীকী কর্মকাণ্ডের দিকে মনোনিবেশ করে। এদিকে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনারা চলে যাওয়ার পর ১৯৮৯ সালে সৌদি আরবে ফিরে যান বিন লাদেন। সৌদিতে ফিরেই তিনি আল–কায়েদার জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজে লেগে পড়েন। বিন লাদেনের এমন কর্মকাণ্ডে বিপাকে পড়ে পশ্চিমাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি রাজপরিবার। তারা আশঙ্কা করে, ওসামা বিন লাদেনের কট্টর ইসলামবাদী কথাবার্তা সৌদি আরবে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তখন রাজপরিবার থেকে বিন লাদেনকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। সৌদি সরকার একসময় তাঁর পাসপোর্ট জব্দ করে।

হিস্টোরি ডটকমের তথ্যমতে, ১৯৯০ সালের দিকে ইরাক কুয়েত আক্রমণ করলে সীমান্ত পাহারা দিতে ‘আফগান আরব’ সেনাদের পাঠানোর প্রস্তাব দেন ওসামা বিন লাদেন। তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সৌদি রাজপরিবার। এর পরিবর্তে সৌদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চায়। সৌদির এমন পদক্ষেপে অপমানিত বোধ করেন ওসামা বিন লাদেন। হতাশ বিন লাদেন তখন ঘোষণা দেন, ‘আল–কায়েদা একসময় বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে, আমেরিকা নয়।’

আল–কায়েদার প্রথম হামলা

কয়েক বছর পর সৌদি আরব ছেড়ে সুদানে চলে যান ওসামা বিন লাদেন। সেখান থেকেই প্রথমবারের মতো নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় আল–কায়েদা। ইয়েমেনে আমেরিকান সেনাদের অবস্থান করা একটি হোটেলে বোমা হামলা চালায় সংগঠনটি।

ইয়েমেনে অবস্থানরত ওই আমেরিকানরা সোমালিয়ায় একটি শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। ওই হামলায় কোনো আমেরিকান নিহত না হলেও দুজন অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকের মৃত্যু হয়।

এরপর বিভিন্ন অঞ্চলে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা চালায় আল–কায়েদা। আল–কায়েদার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা সোমালিয়ান দস্যুদের হামলার প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। ১৯৯৩ সালে মোগাদিসুতে তাদের হামলায় ১৮ জন সাধারণ মার্কিন নাগরিক নিহত হন। ওই বছরই নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা হামলার ঘটনায় আল–কায়েদার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। বছর দুয়েক পর (১৯৯৫) মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে হত্যাচেষ্টা করেছিল আল–কায়েদা। একই বছর সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে হামলা করে তারা। ১৯৯৬ সালে সৌদি আরবের খোবার টাওয়ার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় আল–কায়েদা।
লাদেনের আফগানিস্তান যাত্রা

এসব হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার এড়াতে ১৯৯৬ সালের দিকে আফগানিস্তানে চলে যান ওসামা বিন লাদেন। তত দিনে আল–কায়েদা বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে বিশ্বের নানা প্রান্তে হামলা অব্যাহত রাখে তারা। ১৯৯৮ সালের আগস্টে কেনিয়ার নাইরোবিতে মার্কিন দূতাবাসে হামলার দায় স্বীকার করে আল–কায়েদা। ওই হামলায় ২১৩ জন নিহত হয়, আহত হয় সাড়ে চার হাজারের মতো মানুষ।

২০০০ সালে ইয়েমেনে একটি আমেরিকান নৌঘাঁটিতে বোমা হামলায় ১৭ নাবিক নিহত হন। সব কটি হামলার দায় স্বীকার করেন ওসামা বিন লাদেন। এরপর ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হয় যুক্তরাষ্ট্রে আল–কায়েদার ভয়াবহ ওই হামলা। এরপর ওসামা বিন লাদেনকে ধরিয়ে দিতে অস্বীকার করে আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকার। তারই ফলে আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।

অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বাহিনীর অভিযান, লাদেনের মৃত্যু

২০১১ সালের ১ মে রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কমান্ডো বাহিনী নেভি সিল টিমের সদস্যরা পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরে অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেন। লাদেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কাছের একটি বাড়িতে দীর্ঘ সময় ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন। পাকিস্তানকে না জানিয়েই দেশটির ভেতর ঢুকে যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে হত্যার অভিযান চালায়। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের আগস্টে মার্কিন গোয়েন্দারা লাদেনের অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হন। এরপর তাঁরা নানাভাবে তাঁর ওপর নজরদারি জারি রাখেন।

তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে বিন লাদেনকে হত্যার দৃশ্য দেখেন। পরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন, ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হয়, আল–কায়েদা নেতার লাশ গভীর সমুদ্রে দাফন করা হয়েছে।

ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যম জি নিউজের এক প্রতিবেদনে লাদেনের স্ত্রীর বরাত দিয়ে বলা হয়, অ্যাবোটাবাদে যাওয়ার আগে পার্শ্ববর্তী হরিপুরের একটি বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। পাকিস্তানে আত্মগোপনের সময় ওসামা বিন লাদেন পাঁচটি বাড়িতে ছিলেন। তিনি অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িতে ছিলেন ২০০৫ সাল থেকে।

দ্য ইকোনমিক টাইমসে ২০১২ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাবোটাবাদের বিশেষ বাড়িতে লুকিয়ে থাকার সময় ওসামা বিন লাদেন নিয়মিতই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস এজেন্সির (আইএসআই) সঙ্গে যোগাযাগ রক্ষা করতেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, আইএসআইয়ের জ্যেষ্ঠ ও মধ্যম সারির কর্মকর্তারা তাঁর অবস্থান সম্পর্কে জানতেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা স্ট্র্যাটফরের ফাঁস হয়ে যাওয়া ই-মেইল বার্তায় এই দাবি করা হয়। লাখ লাখ মার্কিন গোপন কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করে বিশ্বব্যাপী সাড়াজাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকস স্ট্র্যাটফরের ৫০ লাখের বেশি ই-মেইল বার্তা প্রকাশ শুরু করে। স্ট্র্যাটফরের ফাঁস হওয়া একটি ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, ‘একজন পাকিস্তানি জেনারেলসহ মধ্যম সারি থেকে জ্যেষ্ঠ সেনাসদস্য ও আইএসআইয়ের কর্মকর্তারা ওই বাড়িতে ওবিএলের (ওসামা বিন লাদেনের) অবস্থান সম্পর্কে জানতেন।’

আল–কায়েদার বর্তমান অবস্থা

আল–কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশের নেতারা। কিন্তু বিন লাদেন মারা গেলেও যুক্তরাষ্ট্র হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্ত হতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সব মহলেই। বিন লাদেনের মৃত্যুর পরও থেমে নেই আল–কায়েদার কার্যক্রম। সংগঠনটির বর্তমান নেতা আয়মান আল–জাওয়াহিরি বার্ধক্যের কারণে মারা গেছেন, এমন খবর প্রচারিত হলেও সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাওয়াহিরির মৃত্যুর বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভবত তিনি বেঁচে আছেন, কিন্তু বেশ দুর্বল।

ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সৃষ্টি হয়। বিন লাদেনের সংগঠন আল–কায়েদার জঙ্গি ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ আবু বকর আল বাগদাদিকে খলিফা ঘোষণা করে আইএস আত্মপ্রকাশ করে। সিরিয়া ও ইরাকের বেশ কিছু এলাকা দখল করে নেয় তারা। পশ্চিমাদের স্থাপনায় একের পর এক সফল হামলা চালিয়ে আইএস কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

এদিকে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আল–কায়েদা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে। জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জাওয়াহিরি সম্পর্কে বলা হয়, তিনি বর্তমানে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কোনো সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন। আল–কায়েদার সঙ্গে তালেবান নেতাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তবে আল–কায়েদার ওপর নিজেদের কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে তালেবান।

জাতিসংঘের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবানের ছাতার নিচে থেকেই নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে আল–কায়েদা।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স, এএফপি, নিউইয়র্ক টাইমস, হিস্টোরি ডটকম

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ১১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ