Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

জাতীয় নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনার শঙ্কা দেখছে জাতিসংঘ (২০২২)

Share on Facebook

ভয়ভীতি দেখানোসহ সংকীর্ণ হচ্ছে সুশীল সমাজের স্থান
এনজিওকে অতি নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত ও কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশে মেরূকরণ ও উত্তেজনার শঙ্কা দেখছে জাতিসংঘ। এ কারণে শুধু নির্বাচন নয়; সব সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলসহ সমাজের সব পক্ষের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। বাংলাদেশ সফরের শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে যোগ দিয়ে ৪ দিনের বাংলাদেশ সফরে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন ব্যাচেলেট।

সংবাদ সম্মেলনে মেরূকরণ ও উত্তেজনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে চিলির সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়টাতে বাংলাদেশে মেরূকরণ ও উত্তেজনা বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে সমাজের সবার মতামত শুনতে হবে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, যা সরকারের ব্যবহার করা উচিত। সমালোচনা শুনলে সমস্যা চিহ্নিত এবং আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানে কাজ করা যায়।

তিনি বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার বেশ ভালো আলাপ হয়েছে। এটি মোটেও আশ্চর্যের বিষয় নয়। কারণ বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবেই বিভিন্ন খাতে বেশ শক্তিশালী সুশীল সমাজের প্রতিনিধি রয়েছেন। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য স্থান সংকীর্ণ হয়ে আসছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের ওপর নজরদারি বাড়ছে এবং ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সুশীল সমাজের ওপর প্রতিহিংসা দেখানোর ফলে তাঁরা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিবেচনা করছেন। বাংলাদেশে এনজিওকে আইন ও বিধি দিয়ে অতি নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে তাদের কার্যকরভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর লক্ষ্য রেখেছে, ফলে গণতন্ত্র চর্চা ও নাগরিক স্থান এবং কার্যকর জবাবদিহি জরুরি। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র চর্চা ও নাগরিক স্থান এবং কার্যকর জবাবদিহি দুর্নীতিসহ অন্য প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি কমায়।

তিনি বলেন, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জায়গা করে দেওয়া, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাবেশ করতে দেওয়া, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাড়ানো নির্বাচনের সময় বাংলাদেশের জন্য জরুরি। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের বদলে প্রতিবাদ সামলাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ জরুরি বলেও মত দেন তিনি।

মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, সামাজিক অস্থিরতা এড়াতে রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজের মধ্যে সংলাপের জন্য রাজনীতিতে আরও ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের এবং বিশেষ করে তরুণদের কথা সমাজে শোনা দরকার।

মানবাধিকার রক্ষার জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে বেশ শক্ত কাঠামো রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু গুম বাদে জাতিসংঘের মানবাধিকারের প্রায় সব প্রধান সনদেই বাংলাদেশ সই করেছে। সরকারকে গুমের সনদে সই করতে আহ্বান জানিয়েছি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সই করা সনদগুলো ঠিকমতো প্রতিপালনের জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিভার্সেল পিরিওডিক রিভিউয়ের (ইউপিআর) মাধ্যমেও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এটি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া এবং তা পর্যালোচনার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রাখা জরুরি।

হাইকমিশনার বলেন, জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটিসহ বেশ কিছু মানবাধিকার বিষয়ক প্রক্রিয়া থেকে বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর ধরে জোর করে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। এর অনেকগুলো বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মাধ্যমে হয়েছে। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারকে আমি গভীর উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে এ ধরনের অভিযোগের পক্ষপাতহীন, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের কথা সরকারকে জানিয়েছি। আর নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কারের জন্য মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এখনও বাংলাদেশে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে গুমের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে বিচারিক সুরক্ষার ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাব আছে। বিশেষ করে তদন্তের অগ্রগতির অভাব ও বিচার পাওয়ার অন্যান্য বাধার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হতাশা তৈরি হয়েছে। এ কারণে সরকারকে একটি স্বাধীন বিশেষায়িত পদ্ধতি গঠন করতে আহ্বান জানাই- যারা অপরাধের শিকার এবং তাদের পরিবার ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগের তদন্ত করবে। আন্তর্জাতিক মানের এ ধরনের দল কীভাবে গঠন করা যায়, তাতে পরামর্শ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

বৈঠকগুলোতে সরকার কি স্বীকার করে নিয়েছে যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার সমস্যা রয়েছে এবং যে সুপারিশগুলো করা হয়েছে তা কি সরকার বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দিয়েছে? জানতে চাইলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার বলেন, সরকার কী করবে, তার উত্তর আমি সরকারের কাছে ছেড়ে দিচ্ছি। সমস্যাগুলোকে যাতে চিহ্নিত করা হয়, সে বিষয়ে আমি সরকারকে জোর দিয়েছি। এগুলো সমাধানে যে তদন্ত প্রয়োজন, তা করতে আহ্বান জানিয়েছি।

গুম নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের দলকে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সরকার সদিচ্ছার পরিচয় দিতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অন্যতম বড় অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে বাংলাদেশের উচিত নিরাপত্তা কর্মীদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণে একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের মধ্যে হতাশা দেখেছেন কিনা- জানতে চাইলে মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, ক্যাম্পে তরুণ রোহিঙ্গারা যাদের বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে, তারা বেশ হতাশায় ভুগছে। তারা আসলে শিক্ষা ও দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে না। তবে এ তরুণদের মধ্যে প্রত্যাবাসনের আশা রয়েছে, সেই সঙ্গে ভয়ও রয়েছে। এ কারণে প্রত্যাবাসন হতে হবে মিয়ানমারের সহায়ক পরিবেশে ও স্বেচ্ছায়।

সফরের শেষ দিন বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিশেল ব্যাচেলেট। এর পর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ছাড়াও দুপুরে বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন মিশেল ব্যাচেলেট।

গত রোববার সকালে ঢাকা পৌঁছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার। এ সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এরপর দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পরে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গেও বৈঠক করেন মিশেল ব্যাচেলেট। সফরের দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশে কাজ করা মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন মিশেল ব্যাচেলেট। এরপর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে শ্রদ্ধা জানান তিনি। সফরের তৃতীয় দিন কপবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন মিশেল ব্যাচেলেট। রাতে বাংলাদেশ ছাড়েন তিনি।

সূত্র: সমকাল।
তারিখ: আগষ্ট ১৮, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ