Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

দুবাইয়ে সম্পদ বাড়ছে বাংলাদেশিদের (২০২৩)

Share on Facebook

লেখক: সানাউল্লাহ সাকিব-সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরে-

বাংলাদেশের রেমিট্যান্স তথা প্রবাসী আয় সংগ্রহে ধারাবাহিকভাবে দ্বিতীয় শীর্ষ উৎস ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশটি এ তালিকার তৃতীয় স্থানে নেমে যায়, তার জায়গা দখল করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর আর হারানো স্থান ফিরে পায়নি দেশটি। কারণ, আরব আমিরাতের কয়েকটি শহর এরই মধ্যে হয়ে উঠেছে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের অন্যতম স্থান। অনেকেই দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে অর্থ নিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করছেন। এ কারণে ইউএই থেকে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসাও কমে গেছে, যা দেশে ডলার–সংকট তীব্র করেছে।

সরেজমিনে গত দুই সপ্তাহে ইউএইর দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি ও আজমান রাজ্য ঘুরে জানা গেছে, বাংলাদেশিরা এসব জায়গায় নিজের ও অন্যের নামে নিজস্ব ভিলা, ফ্ল্যাট, ছোট হোটেল, তারকা হোটেলসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেছেন। এসব বিনিয়োগে নিজেদের আড়াল করে রাখছেন অনেকেই। এ জন্য তাঁরা বাংলাদেশের পরিবর্তে আলবেনিয়া, সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব ব্যবহার করেছেন। এভাবে ইউএইর কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জ ‘পাম জুমেইরা’, জুমেইরা, সিলিকন ওয়েসিস, এমিরেটস হিল, দুবাই মেরিনা ও বিজনেস বের মতো অভিজাত এলাকাগুলোতেও নিজস্ব বাড়ি ও তারকা হোটেল গড়ে তুলেছেন কেউ কেউ। এসব এলাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনীদেরও সম্পদ রয়েছে।

বিদেশে বিনিয়োগ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশিকে দেশটিতে বিনিয়োগের অনুমতি দেয়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশিরা অবৈধ উপায়ে অর্থ পাচার করে ইউএইতে বিনিয়োগ করেন। দেশটি অবশ্য অর্থের বৈধতা ও মাধ্যম নিয়ে কোনো প্রশ্ন করে না।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ আবু জাফর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিনিয়োগ নিয়ে অনেক আলোচনা আছে, সব ঠিক না। বাংলাদেশের নাগরিকেরা বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন। তাঁদের অনেকে অন্য দেশের পাসপোর্ট ও নাগরিকত্ব নিয়েছেন। অনেকেই দুবাইয়ে থাকার জন্য বাড়ি কিনছেন। এটাকে অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই।’

যেভাবে যাচ্ছে অর্থ

দুবাইয়ের ডেইরা এলাকায় বাংলাদেশিদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। এই এলাকার বহু অ্যাপার্টমেন্ট ও হোটেলের মালিকদেরও অনেকেই বাংলাদেশি। এসব হোটেল–অ্যাপার্টমেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশিদের লক্ষ্য করেই। এ জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে পরিচালনায় রাখা হয়েছে বাংলাদেশিদের। আর এ এলাকায় বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন কম্পিউটার সেবা, মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোই ব্যবহৃত হচ্ছে হুন্ডির কাজে। এসব দোকানে আরব আমিরাতের মুদ্রা দিরহাম জমা দিলে তাৎক্ষণিকভাবেই দেশে থাকা তাঁদের আত্মীয়স্বজন টাকা পেয়ে যান।

অবৈধ পথে আয় পাঠালে প্রতি দিরহামের জন্য দেওয়া হয় ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা। আর দেশটির সবচেয়ে বড় দুই এক্সচেঞ্জ হাউস আল আনসারি ও লুলু এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে টাকা পাঠালে প্রবাসীদের আত্মীয়রা প্রতি দিরহামের বিপরীতে পাচ্ছেন ২৯ টাকা ১২ পয়সা।

বৈধ পথে টাকা পাঠালে তা তুলতে ব্যাংকে যেতে হয়। অন্যদিকে অবৈধ পথে অর্থ পাঠালে প্রাপকের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে বা বাড়িতে নগদ টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর দেশে যাঁরা অবৈধভাবে দুবাইয়ে অর্থ পাঠাতে চান, সেই অর্থ তুলে দেওয়া হয় দেশে থাকা ‘হুন্ডি চক্রের’ কাছে। শারজাহর রোলা, দুবাইয়ের মিনা বাজার এলাকা ও আজমানের সবজি বাজার প্রভৃতি এলাকায় হুন্ডিওয়ালাদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়।

হুন্ডি চক্রের দু–একজন আলাপকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশ থেকে যাঁরা ইউএইতে অর্থ পাঠাতে চান, তা দেশেই থেকে যায়। যাঁরা ইউএইতে বাড়িঘর কেনেন, তাঁরা দেশে টাকা দিয়ে দেন। আর আমরা এখানে তাঁদের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে দিই।’

কমেছে বৈধ পথে আয়

কর্মসংস্থানের উদ্দেশে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে বিদেশে গেছেন ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার লোক গেছেন সৌদি আরবে, যা দেশের মোট প্রবাসী জনশক্তির ৩৫ শতাংশ। এরপরই ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ গেছেন আরব আমিরাতে।

এ দেশে গেছেন ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে মহিলা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮৩ জন। দেশটিতে ২০২০ সালে ১ হাজার ৮২ জন, ২০২১ সালে ২৯ হাজার ২০২ জন ও ২০২২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৭৭৫ জন গেছেন। এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১২ সালে গেছেন প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। এরপরও দেশটি থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছিল ২৮২ কোটি ডলার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে কমে ২০৭ কোটি ডলারে নেমে যায়। অথচ আগে সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসত আরব আমিরাত থেকে। এখন সৌদির পরের অবস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। আরব আমিরাতে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের বড় অংশ চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার। এ কারণে এ দুটি জেলার প্রবাসী আয়ও কমছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের কয়েকটি শাখা রয়েছে ইউএইতে। কিন্তু এসব শাখা প্রবাসী আয় সংগ্রহে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না। কারণ, দেশে টাকা পাঠাতে শ্রমিকেরা আলাদা ছুটি পান না। এ জন্য হাতের কাছে থাকা হুন্ডিকেই বেছে নেন তাঁরা। বড় অঙ্কের অর্থ পাঠাতে অবশ্য বৈধ চ্যানেল ও ব্যাংক ব্যবহার করা হয়।

দুবাইয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন গ্র্যান্ড স্টার ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী মোল্লা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, টাকা পাঠানোর নিয়ম আরও সহজ করতে হবে। আত্মীয়স্বজন যেন তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পান, এমন ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই বৈধ পথে আয় বাড়বে।

বিনিয়োগ যেখানে

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) সাতটি রাজ্য রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে আবুধাবি, আজমান, দুবাই, ফুজাইরা, রাস আল খাইমা, আশ শারজাহ্ ও উম্ম আল কোয়াইন। দেশটি পাথুরে মরুভূমি, উপকূলীয় সমভূমি ও পাহাড়ের মিশ্র পরিবেশে গঠিত। তবে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলই মরুভূমি। এর উত্তরে পারস্য উপসাগর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে সৌদি আরব এবং পূর্বে ওমান ও ওমান উপসাগর। দেশটির মোট আয়তন ৮৩ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি। জনসংখ্যার অধিকাংশই প্রবাসী। দেশটিতে ২৫ লাখের বেশি বাংলাদেশি গেলেও এখন রয়েছেন ১০ লাখের মতো।

দেশটিতে কাউকে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমোদন দেওয়া হয় না। আগে ব্যবসা করতে হলে মালিকানায় স্থানীয় কারও থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন তা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগের বিপরীতে দেওয়া হচ্ছে ৫ ও ১০ বছর মেয়াদি গোল্ডেন ভিসা। বাংলাদেশি অনেকেই তা নিয়েছেন। দেশটিতে বিলাসবহুল অভিজাত এলাকা যেমন রয়েছে, তেমনি কম মূল্যের ফ্ল্যাটও পাওয়া যায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানের শিল্প এলাকার কাছে এরকম বেশ কিছু বাড়ি রয়েছে বাংলাদেশিদের।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানের শিল্প এলাকার কাছে এরকম বেশ কিছু বাড়ি রয়েছে বাংলাদেশিদের।

দুবাইয়ে তিন-চার কক্ষের ফ্ল্যাট কিনতে খরচ হয় তিন থেকে চার লাখ দিরহাম, যা বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার সমান। অর্থাৎ রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোর চেয়ে দুবাইয়ে ফ্ল্যাটের মূল্য কম। ফলে চাকরির জন্য দুবাইয়ে আসা অনেক বাংলাদেশি ফ্ল্যাট কিনেছেন। আবার বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি দুবাইয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া অবৈধ পথে ডলার এনে দুবাইয়ে বিনিয়োগ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তারা।

তবে নথিপত্রে তাঁরা অন্য নাম ব্যবহার করেছেন। কেউ কেউ এখানে অবস্থান করলেও বেশির ভাগই দেশে থাকেন। মাঝেমধ্যে এসব ভিলায় এসে থাকছেন। কেউ কেউ বাড়ি দেখাশোনার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের রেখেছেন। আবার কারও কারও বাড়িতে রয়েছে ভারত–পাকিস্তান বা অন্য দেশের নাগরিক।

দুবাইয়ের পাম জুমেইরা, এমিরেটস হিল, সিলিকন ওয়েসিস, বিজনেস বেসহ আজমান রাজ্যে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব এলাকায় অনেক বাংলাদেশি নিজস্ব ভিলা গড়ে তুলেছেন। একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও আরেকটি ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান তারকা হোটেল নির্মাণ করছেন। এমিরেটস হিলে একটি ব্যাংকের পরিচালকের রয়েছে বিশালকায় বাড়ি। আজমানে বাংলাদেশিরা শত শত একর জমি কিনেছেন বলেও শোনা যায়।

নিজের নামেও অঢেল সম্পদ

বাংলাদেশিরা অন্যের নামে ও অন্য দেশের নাগরিকত্ব ব্যবহার করে দেশটিতে সম্পদ কিনেছেন। আবার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ব্যবহার করেও কম বাংলাদেশি সম্পদ গড়েননি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সি ৪ এডিএস) সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছে, তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন ৪৫৯ জন্য বাংলাদেশি। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি প্রোপার্টি ক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে, কাগজে-কলমে যার মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।

বিত্তবান বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে ২০১৯ সালে গোল্ডেন ভিসা চালু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থসম্পদের মালিকানা থাকলেই এ ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। এ সুযোগ দেওয়ার পরই দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের সম্পদ কেনার পরিমাণ হুহু করে বাড়তে থাকে।

এদিকে কোন দেশের নাগরিক দুবাইয়ে কী পরিমাণ সম্পদ কিনেছেন, তা দেশটি আগে প্রকাশ করত। এখন সেটি বন্ধ রেখেছে।

এসব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংকের টাকা ও ঘুষের টাকায় আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের এসব সম্পদ গড়ে উঠেছে। সেখানে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক থাকায় তাঁদের আয় সহজেই কিনে নিয়েছে চক্রটি। ফলে দেশটি থেকে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা কমেছে। এখনই তাদের খোঁজ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে দেশের উন্নয়ন খেয়ে ফেলবে এসব চক্র।’

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ