Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শ্বেত শুভ্র ভিক্টোরিয়া সৌধ

Share on Facebook

১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুর পর প্রথমে ঠিক হয় কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তার স্মৃতি রক্ষার্থে ভিক্টোরিয়া নামে ছোট ছোট স্মৃতি সৌধ তৈরি হবে। কিন্তু তখন কলকাতার গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জন যাকে ইউরোপিয়ানরা লিটল ব্রিটিশ বলতেন, তিনি এই প্রস্তাবে বেঁকে বসেন। অবশেষে ঠিক হয় কলকাতা ময়দানেরই এক পাশে তৈরি হবে শ্বেতপাথরের এক বিশাল স্মৃতি সৌধ। তার আগেই মুঘল সম্রাট শাহজাহান দিল্লিতে তাজমহল তৈরি করে গোটা পৃথিবীতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাই ব্রিটিশ আমলের এই ভিক্টোরিয়া কতকটা তাজমহলের সৌন্দর্যকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা বলেও মনে করা হয়।

যাইহোক অবশেষে এই সৌধের ভিত নির্মাণ করার দায়িত্ব পেয়েছিল মার্টিন এন্ড কো নামক এক ব্রিটিশ সংস্থা। এই সংস্থার টমাস অ্যাকুইন্সন মার্টিনের সঙ্গে যৌথ ভাবে শেয়ার হোল্ডার ছিলেন বাঙ্গালি উদ্যোগপতি ও ইঞ্জিনিয়ার স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জ্জী। প্রথমে মার্টিন সাহেব এই কোম্পানির নাম মার্টিন এন্ড মুখার্জ্জী রাখতে চাইলেও পরে বাঙ্গালী উপাধিধারী কোম্পানিকে যদি ব্রিটিশরা কন্ট্রাক্ট না দেয়, এই আশঙ্কখ্যায় রাজেন্দ্রবাবুর পরামর্শেই অবশেষে এই কোম্পানির নাম রাখেন মার্টিন এন্ড কো। যদিও অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এই সৌধের ভিত নির্মাণের পর ব্রিটিশ সরকার এই সংস্থাকেই পুরো সৌধ নির্মাণের ভার দেন। তার পাশাপাশি কাজে অসাধারণ দক্ষতা দেখানোর পুরস্কার হিসাবে রাজেন্দ্রনাথ বাবুকে নাইট উপাধি দিয়ে ব্রিটিশরা সম্মানিতও করেন। পরে, ডালাহাউসির কাছে ওনার নামে একটা রাস্তার নামকরণও করা হয়, যা আজও R.N.Mukherjee Road হিসাবে সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।

কলকাতা ময়দানে এই সৌধ নির্মাণের আগে নাম ছিল হরিণবাড়ি।এখানে নবাব সিরাজদ্দৌলার একটা শিকারের মাচা ছিল বলে শোনা যায়। ইতিহাস বলছে, ১৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার লালবাজারে ও বড়বাজারে একটি করে জেলখানা ছিল। ১৭৭৮ খ্রিষ্টাব্দে এখানেই ছিল কলকাতার নিউ প্রেসিডেন্সি জেল। সে সময় ব্রিটিশদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনার জন্য তৎকালীন লর্ড হেস্টিংস এর রোষানলে পড়ে এই জেলে এক সময় বন্দি ছিলেন বেঙ্গল গেজেটের সম্পাদক জে.কে.হিকি। পরে এই জেল আলিপুরে স্থানান্তরিত করা হয় এখন যা প্রেসিডেন্সি জেল নামে পরিচিত।

১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ব্রিটেনের বিপরীতে ছিল জার্মানি, ইতালি ও জাপান। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে জাপান পার্ল হারবার আক্রমণ করার পর টার্গেট করে সিটি অফ দ্যা ব্রিটিশ ইন্ডিয়াকে অর্থাৎ আমাদের এই কলকাতার দিকে। হাওড়া ব্রিজ খিদিরপুরের মত বহু জনসংখ্যা বিশিষ্ট জায়গায় বোম্ব বর্ষণের সম্ভাবনা তৈরি হয় । এরই মধ্যে ডানলপ কারখানা ও মানিকতলা বাজার অঞ্চলে বোম্ব পড়েও। কিন্তু সৌভাগ্য বসত মানিকতলা বাজারের ওপর ফেলা বোম্বটা ফাটে নি। সেটা এখন কলকাতা পুলিশের জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এই বোম্ব পড়ার পর সারা কলকাতাকে স্বাভাবিক ভাবেই কার্যত এক আতঙ্কের চেহারা গ্রাস করে। সন্ধার পরে রীতিমত ব্ল্যাক আউট চলতে থাকে। ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতার সমস্ত বাড়ির ও রাস্তার আলো সন্ধ্যের পর বন্ধ রাখতে বলা হয়। সন্ধ্যের পর রাস্তায় কয়েকটা গাড়ি চললেও তার হেডলাইটে অর্ধেক কালো রং করে রাখা হয় যাতে আকাশ থেকে প্লেন মারফৎ লক্ষ রাখা জাপানিদের চোখে ধুলো দিয়ে কলকাতাকে বাঁচানো যায়।

এরকমই একটা পরিস্থিতিতে তখন সদ্য নির্মীয়মাণ এই শ্বেত শুভ্র ভিক্টোরিয়া সৌধ ব্রিটিশদের সবচেয়ে মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়ায়। কারন একে তো এটা ময়দানের খোলামেলা পরিবেশে নির্মিত হয়েছে তার ওপর এই সৌধ তাজমহলের মতই রাজস্থানের মাকরানা থেকে আনা শ্বেত পাথরের তৈরি। তাই এই সৌধকে বাঁচাতে ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের কিছু দিনের জন্য এই দৃষ্টি নান্দিক সৌধ পুরো কালো রঙে ঢেকে দেওয়া হয়। নিষিদ্ধ করা হয় ছবি তোলা। যাতে ব্রিটিশদের এই পরিকল্পনার কথা জাপানিরা কোন ভাবেই টের না পায়। মুঘল সম্রাট শাহজাহানও না কি একটা কালো তাজমহল নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন বলে শোনা যায়। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকই এই কালো তাজমহল তৈরির খবরকে রটনা বা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কলকাতায় এক সময় সত্যিই এই ভিক্টোরিয়ার ওপর কিছু দিনের জন্য হলেও কালো রঙের প্রলেপ পড়েছিল। পরে অবশ্য পুনরায় এই সৌধের ঐতিহ্য পূর্ণ সাদা রঙ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আজও এই ভিক্টোরিয়া স্মৃতি সৌধের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জৌলুস কমলেও এর শ্বেত শুভ্র রঙ আজও অম্লান ভাবে বিরাজমান।

তথ্যসূত্রঃ
bongodorshan

সূত্র: সংগ্রহিত।
তারিখ : মার্চ ০৫, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ