Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পশ্চিমাদের সঙ্গে পুতিনের লড়াই শেষ হবে কী ভাবে -নিউইয়র্ক টাইমস

Share on Facebook

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক নতুন, আরও প্রাণঘাতী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে রূপ নিয়েছে। যে ব্যক্তি এই যুদ্ধ থামাতে পারেন, সেই ভ্লাদিমির পুতিন এখন পর্যন্ত এটি থামানোর কোনো লক্ষণ দেখাননি।

যুদ্ধ শুরুর পর এক বছর পার হলো। ইতিমধ্যে যুদ্ধে রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন একাধিকবার সুস্পষ্ট সাফল্য দেখিয়েছে। পুনর্দখলে নিয়েছে হারানো কিছু এলাকা ও শহর। ঠেকিয়ে দিয়েছে নিজেদের অবকাঠামোর ওপর মারাত্মক অনেক হামলা।

দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই এখনো বাড়ছে। যেসব স্থানে তীব্র লড়াই হচ্ছে, সেসবের একটি পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাখমুত শহর। বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রাশিয়ার নির্বিচার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এক নিয়মিত আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। গত ১৪ জানুয়ারি এ রকম এক ঘটনায় একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র দিনিপ্রো শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে আঘাত হানে। নিহত হন অন্তত ৪০ জন। তাঁদের মধ্যে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী, ১৫ বছর বয়সী এক নৃত্যশিল্পী ও কয়েকটি শিশুও ছিল।

শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে দুই পক্ষই নতুন দফায় রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে, এমনটা বলা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩ লাখ নতুন সেনাসদস্যের সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। দেশটির কিছু অস্ত্র তৈরির কারখানায় কাজ চলছে দিনরাত। একই সময় বসে নেই ইউক্রেনের পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলো। তারা সশস্ত্র সাঁজোয়া যান ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ইউক্রেনের সক্ষমতা জোরদার করছে। অথচ কিছুকাল আগেও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সর্বাত্মক লড়াই বেধে যাওয়ার আশঙ্কায় এগুলো পাঠানোর বিষয়ে তারা ছিল অনিচ্ছুক।

গত দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কয়েক শ কোটি ডলারের নতুন নতুন অস্ত্র ও যুদ্ধসরঞ্জাম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে, দেশটির জন্য আড়াই শ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। এ প্যাকেজের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সশস্ত্র স্ট্রাইকার সাঁজোয়া যান সরবরাহ করার বিষয়টিও। মার্কিন অস্ত্রের অন্যান্য চালানের মধ্যে আছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এটি। আরও আছে ব্র্যাডলে সমরযান, সেনাসদস্য পরিবহনে ব্যবহৃত সশস্ত্র যান ও গোলন্দাজ–ব্যবস্থা।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরাও নানা ধরনের অস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে। যেমন ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুত প্রথম ভারী ট্যাংক ‘চ্যালেঞ্জার ২’ দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য জার্মানি ইউক্রেনকে তার অত্যাধুনিক ট্যাংক ‘লেপার্ড’ দিতে বরাবর অনিচ্ছার কথা জানিয়ে এলেও এ বিষয়ে মিত্রদের বড় ধরনের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।

মোটা দাগে এসবের অর্থ, ইউক্রেনের কর্দমাক্ত যুদ্ধক্ষেত্র শিগগিরই আবার পুরোদস্তুর এক যুদ্ধের সাক্ষী হতে চলেছে। এটি এমন এক যুদ্ধ হবে, যেখানে মরিয়া রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে তাক করা হবে পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্র। সর্বশেষ বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ইউরোপে আর কখনোই এমন সম্ভাব্য ঘটনা আর ঘটেনি।

ইউক্রেন ও তার মিত্রদের আশা, পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার বছরজুড়ে চলা এ যুদ্ধকে একটা পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। এসব অস্ত্র রাশিয়ার আক্রমণ ম্লান করা ও রুশ সেনাদের পিছু হটিয়ে দেওয়ার একটা ভালো সুযোগ এনে দেবে ইউক্রেনকে। এটি রাশিয়াকে কতটা পিছু হটতে বাধ্য করবে, সেটি আরেক প্রশ্ন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়াকে তাঁর দেশের পুরো ভূখণ্ড থেকেই হটিয়ে দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলও।

যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা অবশ্য ফলাফল নিয়ে কিছুটা কম উচ্চাভিলাষী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা একে একটা সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচনা করছেন বলে জানা গেছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যত দিন না আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তত দিন এই প্রশ্ন অমীমাংসিতই থাকছে। হাতে এখন যে সুযোগ রয়েছে, তা হলো রাশিয়াকে এটা বোঝানো, একটা সমঝোতামূলক শান্তি প্রতিষ্ঠাই একমাত্র বিকল্প।

এ জন্য সামনের লড়াই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন যেভাবে তাঁর সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন, তাতে তিনি নিজেকে আরও বেশি অপ্রত্যাশিত পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এ ছাড়া রাশিয়ার জনগণকে রক্ষার নামে যা করা হচ্ছে ও এটি কীভাবে তাঁদের নিজেদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে, সে সম্পর্কে সতর্ক থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ।

রাশিয়ার নাগরিকেরা এর কতটা জানেন বা এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন? ব্যক্তিগতভাবে তাঁরা কী বলছেন বা ভাবছেন, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। রাশিয়ার ‘সীমিত সামরিক অভিযান’ নিয়েও প্রকাশ্যে কোনো সমালোচনা করা দেশটিতে কত বিপজ্জনক, তা-ই এখানে ফুটে উঠেছে। স্বাধীন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে, হাজারো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার দ্য টাইমসসহ বিদেশি গণমাধ্যমের অনেক কর্মীকে রাশিয়া ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে; যখনই তাঁদের লেখালেখি এই যুদ্ধ নিয়ে রুশ সরকারি কর্মকর্তাদের মতের বিপরীতে গেছে।

এখন পর্যন্ত একেবারে কম করে হলেও অধিকাংশ রুশ নাগরিকের এই জিজ্ঞাসা—এ যুদ্ধ কখন ও কীভাবে শেষ হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁদের নামে তাঁদের প্রেসিডেন্ট এই ‘ভয়ানক ও অনর্থক যুদ্ধ’ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ যুদ্ধে তাঁদের সন্তান, বাবা ও স্বামীরা নিহত হচ্ছেন, পঙ্গুত্ববরণ করছেন; তাঁদের জীবন অনাগত প্রজন্মের কাছে বন্ধক রাখা হচ্ছে। এটা এমন এক দেশে ঘটছে, যে দেশের ব্যাপারে বিশ্বের অনেক অংশে তৈরি হয়েছে অবিশ্বাস ও ঘৃণা।

গত বছরে পুতিন এটা মনে করে ইউক্রেন অভিযান শুরু করেছিলেন যে, রাশিয়ার সহায়তা পেলে ইউক্রেনের বাসিন্দারা তাঁদের ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবে। পুতিনের ভাবভঙ্গিতে এটাও মনে হচ্ছিল, তিনি ভেবেছিলেন যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমারা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে। হয়েছে উল্টোটা। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীকে যে প্রতিরোধের মধ্যে পড়তে হয়েছে, তার জন্য পুতিন ও তাঁর অনুগত সামরিক কর্মকর্তারা মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। আর যে গতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা-ও ছিল তাঁদের ধারণাতীত।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিলেন পুতিন। একই বছরে পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাতের শুরু হয়েছিল তাঁর হাত ধরে। রাশিয়ার নাগরিকেরা জানেন যে, ২০১৪ সালের আগে ইউক্রেনকে এখনকার মতো অতটা শত্রু হিসেবে মনে করা হতো না। ওই বছরের আগপর্যন্ত দুই দেশের মানুষই রাশিয়া ও ইউক্রেনে স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করতে পারতেন। দুই দেশেই তাঁদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও পরিচিতজন ছিলেন।

ইউক্রেন আগে রাশিয়ার শত্রু না হলেও এখন নিশ্চিতভাবে পুতিন দেশটিকে শত্রু বানিয়েছেন। এখন ইউক্রেন শত্রু হিসেবে রাশিয়া ও ভবিষ্যৎ হিসেবে পশ্চিমাকে বেছে নিয়েছে। এই চিত্রপটে আর পরিবর্তন আসবে না। আর একটা সময় হয়তো রাশিয়া বা ইউক্রেনের বিষয়ে পশ্চিমারা বিভক্ত হতে ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে পারত। তবে মস্কোর হামলার পর রাশিয়াকে একটি হুমকি হিসেবে এবং ইউক্রেনকে বন্ধু হিসেবে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ একই ছাতার তলায় এসেছে।

ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়াকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়চ্যুত একটি দেশে পরিণত করেছেন। যুদ্ধের বিপুল খরচ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও তিনি দাবি করছেন, প্রয়োজন মেটানোর জন্য রাশিয়ার সব আছে। তবে গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের এক প্রতিবেদন বলছে, যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হলেও আগামী কয়েক দশক ধরে অর্থনৈতিক স্থবিরতার মুখে পড়বে রাশিয়া। দেশটির বিভিন্ন শিল্পকারখানার উৎপাদন, এমনকি সমরাস্ত্রের উৎপাদনও হুমকির মুখে পড়তে পারে। কারণ, এসব উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত উচ্চ প্রযুক্তির সরঞ্জাম পশ্চিমা দেশ থেকে আমদানি করে তারা। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন দেশটি ওই সরঞ্জাম আমদানি করতে পারছে না।

এ ছাড়া অনেক পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মস্কোর বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছে, যুদ্ধের খরচ মেটাতে মস্কোর কোষাগারও খালি হয়ে আসছে। এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধ শুরুর পর লাখ লাখ মেধাবী রুশ নাগরিক দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। সব মিলিয়ে মস্কোর ভবিষ্যৎ ফিকে হয়ে আসছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যাও লুকাচ্ছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক এ মিলে গত নভেম্বরে বলেছিলেন, ১ লাখের বেশি রুশ সেনা যুদ্ধে হতাহত হয়েছেন। প্রায় ৩ লাখ রুশ নাগরিককে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আর এমন পরিণতি ভোগ করতে যাচ্ছেন দেশটির আরও অনেকে।

এমনটাও হতে পারে যে, পুতিন আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের পথ খুঁজতে পারেন। তবে ইউক্রেনীয়রা যতই ধ্বংস ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন, ততই এ সুযোগ কমে আসছে। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা আরও প্রত্যয়ী হয়ে উঠছেন নিজ দেশের ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি রক্ষার। যাহোক, ভবিষ্যতে কী হবে, তা সামনের দিনগুলোই বলে দেবে। এখন পর্যন্ত পুতিনকে দেখে মনে হচ্ছে, তিনি বিশ্বাস করেন, ইউক্রেনীয়দের পরাজিত করতে পারবেন, ছড়ির ইশারায় তাঁদের ভাগ্য নিধারণ করতে পারবেন, সেটা যেকোনো মূল্যেই হোক না কেন।

**** অনুবাদ: মো. আবু হুরাইরাহ্‌ ও শেখ নিয়ামত উল্লাহ।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ