Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পুতিন কি তাঁর মুখরক্ষার কৌশল সামনে আনতে শুরু করেছেন? (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:ম্যাথিউ সাসেক্স

পুতিন মাঝেমধ্যে প্রবচন উদ্ধৃত করে থাকেন। সেটা হলো, তুমি যে সঠিক সেটা প্রমাণের জন্য মাঝেমধ্যেই তোমাকে একা হওয়া জরুরি। ইউক্রেনে রাশিয়ার খারাপ উদ্দেশ্যের আগ্রাসন যত দিন গড়াচ্ছে, পুতিন ততই নিজের বলা সেই উপদেশের বৃত্তে ঢুকে পড়ছেন। সত্যি সত্যি পুতিন ক্রমাগতভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন, শুধু বিশ্বমঞ্চে নয়, নিজের দেশেও। যুদ্ধ যতই দিন গড়াচ্ছে, ততই তাঁর পক্ষে ঘরে-বাইরে নিজের আস্থা ধরে রাখা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। সুতরাং এখন প্রশ্নটি হলো, এ পরিস্থিতি থেকে পুতিন কীভাবে নিজের মুখ রক্ষা করতে পারবেন?

গত সেপ্টেম্বরে নকল গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল পুতিন রাশিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। এ ঘটনায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছে, তাতে পুতিনের অবস্থান বড় ধাক্কা খেয়েছে। নিন্দাপ্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৪৩টি দেশ, রাশিয়াসহ ৫টি দেশ বিরোধিতা করেছে এবং ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে।

এই ভোট যদি কোনো বিষয়ে ইঙ্গিত হয়, তাহলে বলা যায় বিশ্বমঞ্চে এখন রাশিয়ার চারটি বন্ধুদেশ। উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, বেলারুশ ও নিকারাগুয়া। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণাকালে পুতিন বলেছিলেন, উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করছেন। তাঁর এই বক্তব্য যে কাউকে প্রাণিত করতে পারেনি, তা এই ভোটের ফলাফল থেকেই স্পষ্টত।

ভোটদানে যে দেশগুলো বিরত থেকেছে, তার মধ্যে অন্যতম চীন ও ভারত। দেশ দুটি আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে পুতিনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। জ্বালানির ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি কাতার ও কুয়েতও ভোটদানে বিরত ছিল। দেশ দুটি ইউক্রেনের ভূখণ্ডের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। পুতিন মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক প্রভাব তৈরি করেছেন, এমন ধারণা এই ভোটের ফলাফলে বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে।

কমনওয়েলথ ও নিরপেক্ষ কয়েকটি দেশ ছাড়াও রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো ভোটদানে বিরত থেকেছে। ব্যতিক্রম ছিল জর্জিয়া ও মলদোভা। দেশ দুটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা নিন্দাপ্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। অন্যদিকে বেলারুশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেয়।

গৃহবিবাদ

জনবিচ্ছিন্ন একজন নেতার পক্ষে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলা করা খুব কঠিন। পুতিন এখন সেই রকম একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই শোইগু ও সেনাপ্রধান ভালেরি গেরাসিমভের বিরুদ্ধে জনগণের মাঝে সমালোচনার শুরু হয়েছে।

অভিজাতদের মধ্যেও অসন্তোষ জন্ম হয়েছে। সম্প্রতি সেনাপ্রধানকে নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার প্রভাবশালী সমরাস্ত্র ব্যবসায়ী ইয়াভজানি প্রিগোসি ও চেচনিয়ায় নেতা রামজান কাদিরভ। তাঁদের সুবিধাবাদ ও নগ্ন উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে পাশে সরিয়ে রাখলেও এ ধরনের সমালোচনায় পুতিন যে সমস্যার মধ্যে রয়েছেন, তার ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এর আগে রাশিয়ার সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও আমলাতন্ত্রের নিম্নস্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুব সহজে শোধন অভিযান চালাতে পেরেছেন পুতিন।

কিন্তু সার্গেই শোইগু রাশিয়ায় পুতিনের পর সবচেয়ে বড় ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ। শোইগুকে সরিয়ে দিতে পারলে পথের কাঁটা থেকে সহজেই মুক্ত হতে পারবেন পুতিন। কিন্তু সেটা করতে গেলে পৃষ্ঠপোষক ও ক্ষমতাতন্ত্রে এখন যে ভারসাম্য চলছে, তা উল্টে যেতে পারে। পুতিনের জন্য তা হিতে বিপরীত হবে।

এটা সত্য যে পুতিন এখন নিজ দেশের জনগণের মধ্যে অসন্তোষের গুঞ্জন শুনতে পাচ্ছেন। সেনাবাহিনীতে নতুন করে নিয়োগের ঘোষণার পর প্রায় সাত লাখ অসন্তুষ্ট রাশিয়ান নাগরিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এখন পুতিন যদি সম্ভাব্য সব উপায়ে তাঁর উদ্দেশ্য সাধন করতে চান, তাহলে পুতিন দুই অসন্তুষ্ট পক্ষের মাঝে আটকা পড়বেন। প্রথম পক্ষটি হলো রাশিয়ার অসন্তুষ্ট সাধারণ নাগরিক, সামাজিক চুক্তি ভেঙে তাদের তিনি যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। দ্বিতীয় পক্ষটি হলো রাশিয়ার অভিজাত সম্প্রদায়, যারা কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তাদের আদেশ পূরণ হোক, সেটা প্রত্যাশা করে। তারা নিজেদের ব্যর্থ হিসেবে দেখতে চায় না।

এ বিষয়গুলো যে ঘটছে, তার আলামত ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। রাশিয়ার আইনসভার সদস্য ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান জেনারেল আন্দ্রে কার্তাপলোভ সম্প্রতি সরকারের উদ্দেশে প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন, ইউক্রেনে সামরিক ব্যর্থতা সম্পর্কে জনগণের কাছে মিথ্যা বলা বন্ধ করতে হবে। কার্তাপলোভ বলেন, ‘আমাদের জনগণ বোকা নয়। তারা দেখতে পাচ্ছে যে তাদের সত্যটা বলা হচ্ছে না। ফলে আস্থাহীনতার জন্ম দিচ্ছে।’
পুতিন এখন কী করবেন

যে ভজঘট পরিস্থিতি পুতিন নিজেই তৈরি করেছেন, তা থেকে কীভাবে এখন তিনি মুক্ত হতে পারবেন? একমাত্র বাস্তবসম্মত পথ হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধে জেতা কিংবা কমপক্ষে ইউক্রেনের অনেকটা অংশ নিজেদের দখল বজায় রাখতে পারা। যাহোক, সেটা ঘটা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। কেননা, পুতিন এখন বলছেন, রাশিয়ার যুদ্ধটা শুধু ইউক্রেনের সঙ্গে নয়, ন্যাটোর সঙ্গেও।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো, যুদ্ধক্ষেত্র হোক আর আলোচনার টেবিল হোক, ইউক্রেন কোনোভাবেই পুতিনকে মেনে নেবে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন, রাশিয়ার ‘নতুন প্রেসিডেন্টের’ সঙ্গেই কেবল আলোচনা করা যেতে পারে। জেলেনস্কি তাঁর যুদ্ধের লক্ষ্যকেও এখন বাড়িয়েছেন। তিনি এখন নিজ ভূখণ্ডকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করতে চান।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখন আর কোনো আশা দেখতে পাচ্ছে না। নিয়োজিত বাহিনী ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং তারা পশ্চাৎপসারণ করেই চলেছে। নিরুপায় হয়ে পুতিন এখন সিরিয়া ও চেচনিয়ায় নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য দায়ী জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি এসেই ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকের বসতি ও স্থাপনা এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে নির্বিচারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছেন। এ হামলা পুতিনের জন্য হিতে বিপরীত হচ্ছে। একদিকে ইউক্রেনীয়দের লড়াইয়ের সামর্থ্য আরও প্রখর হচ্ছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠছে।

এ পরিস্থিতিতে নিজের মুখ কীভাবে রক্ষা করবেন পুতিন? এ বিষয়ে সম্প্রতি ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে তিনটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

প্রথমত, তুরস্কের কূটনীতিকেরা ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার ‘বড় দেনদরবার’ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এটা নিশ্চিতভাবেই পুতিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। এই প্রস্তাবের মূল বিষয়টি হলো রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সংলাপ। এ সংলাপ প্রক্রিয়ায় ইউক্রেকে বাইরে রাখা হয়েছে। ফলে সেটি আলোর মুখ দেখার সুযোগ ক্ষীণ।

দ্বিতীয়ত, স্পেস-এক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের পক্ষ থেকে স্পষ্টত আরেকটি ইঙ্গিত এসেছে। টুইট করে তিনি ইউক্রেনের জন্য একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার ক্রিমিয়া অঞ্চলে কৃষ্ণসাগর যদি হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করে বসতে পারে। যদিও মাস্ক অস্বীকার করেছেন, পুতিনের পক্ষ হয়ে তিনি প্রস্তাবটি দিয়েছেন কি না। কিন্তু মাস্কের প্রস্তাব পুতিনের আগের করা দাবির সঙ্গে মিলে যায়।

তৃতীয়, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের পক্ষ থেকে আরেকটি প্রস্তাব এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে জো বাইডেনের সঙ্গে পুতিন শান্তি আলোচনা শুরু করতে পারেন।

ক্রেমলিনের এই তিন ইঙ্গিতের একটি সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত পশ্চিমারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। চূড়ান্ত অর্থে ইউক্রেনে যদি শান্তি স্থাপন হয়, সেটার উদ্যোগ পুতিনকেই নিতে হবে। অন্যথায় ইউক্রেনের সেনারা যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে শিগগিরই সেই উপলব্ধিতে পৌঁছাতে তাঁকে বাধ্য করবেন।

**** ম্যাথিউ সাসেক্স অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স স্টাডিজ সেন্টারের ফেলো
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: অক্টোবর ২০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ