Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কে মোড় পরিবর্তনের সময় কি এখন ! (২০২০)

Share on Facebook

লেখক: আলতাফ পারভেজ

আজকাল অনেক ভাষ্যকারের কলমেই বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের আলোচনা শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। কিন্তু পূর্ব বাংলার প্রধান রাজনীতিবিদদের অন্তত দুজন একাধিকবার গণচীন সফর করেছেন ১৯৭০ সালের আগেই। আবার বাংলাদেশে তরুণদের একাংশের মধ্যে মাও সে তুংয়ের রাজনৈতিক আদর্শের চর্চার শুরু তারও আগে থেকে।

যেকোনো দুটি জনপদের সম্পর্ক অবশ্যই দূতাবাস খোলার চেয়েও বেশি কিছু। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক পরিচয়ের শুরুও ১৯৭৬ সালের জানুয়ারির আগেই। ১৯৬৭ সালে মাওলানা ভাসানীকে দেওয়া মাও সে তুংয়ের ট্রাক্টরটি পারস্পরিক ওই পরিচয়ের প্রতীকীচিহ্ন হয়ে টাঙ্গাইলে এখনো টিকে আছে। বঙ্গবন্ধুর ১৯৫২ সালের চীন সফরের বিস্তারিত বিবরণও বেশ মনোযোগ কেড়েছে সম্প্রতি।

এসব সফর কোনো সাধারণ ভ্রমণ ছিল না; বরং দুই জনপদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিল তাতে। ছয়-সাত দশকের পরিক্রমা শেষে বাংলার সঙ্গে চীনের সেই সম্পর্ক আজ নতুন এক সন্ধিক্ষণে উপস্থিত।

সেই তুলনায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন অবশ্যই আরও পুরোনো, ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসের প্রায় প্রতি অধ্যায়ে ভারতীয় ছোঁয়া আছে। তার চিরদিনের সাক্ষী হয়ে আছেন খোদ রবীন্দ্রনাথ-নজরুল। কিন্তু এ সম্পর্কের গাঁথুনিতে হঠাৎ কোথাও যেন টান পড়েছে। অচেনা এই কম্পনের উৎস খুঁজতে গিয়ে কেউ পাচ্ছেন আগ্রাসী এক ড্রাগনের ছায়া, কেউ দেখছেন মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছার প্রয়োজনীয় সিঁড়ি।

প্রচারমাধ্যমের ভুল বার্তা

বাংলাদেশ-ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে ধারাভাষ্যকারদের নাটকীয় লেখালেখি বিশেষ গতি পেয়েছে গত ১৮ আগস্ট ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বাংলাদেশ সফরে। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা কেন এলেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠকের ছায়ায় অনানুষ্ঠানিক আলাপে কী আদান-প্রদান হলো, তার সামান্যই জানা গেছে। আবার যতটুকু জানা গেল, সেই তুলনায় গল্পগুজব তৈরি হলো শতগুণ বেশি। অথচ আরেকটু পেছনে ফিরে তাকালেই আমরা দেখব ২০১৩ সালে চীন যখন বিআরআই প্রকল্পে সবাইকে আহ্বান করে, ভারত তখনই ঘোষণা করে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতি। অর্থাৎ ঢাকার সামনে ভূরাজনীতির নাটকীয়তা হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার এই সফরের বহু আগেই তৈরি হয়ে আছে।

বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জটি আসলে অন্য রকম। চীন-ভারত উভয়ের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। ডলার গুনতে আগ্রহী যেকোনো সরকার এই অবস্থা বদলাতে চাইবে। কিন্তু পত্রিকাগুলো মনোযোগ সরাতে চাইছে অন্যদিকে, যা জনগণকে ভুল বার্তা দেয় এবং সরকারের জন্য মানসিক চাপ বাড়ায়।
একতরফা ভালোবাসায় সম্পর্ক গভীরতা পায় না

ভারতে যদি এই প্রশ্ন তোলা হয়, নিকট প্রতিবেশী কোন দেশে তাদের প্রভাব এ মুহূর্তে বেশি, নিঃসন্দেহে তাতে এক-দুটি নামের মধ্যেই বাংলাদেশ থাকবে। এখানে রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতির পরিসরেও তাদের গর্ব করার মতো প্রভাবের পরিসর আছে। হিন্দির উপস্থিতি আজ শ্রেণিনির্বিশেষে ঘরে ঘরে। বইয়ের দোকানগুলোয় দেশের বই ছাপিয়ে আছে ভারতীয় প্রকাশনা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একাংশ যদি হয় বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, একমাত্র ভারতীয়দের সঙ্গেই বাংলাদেশিদের সেটা কিছুটা আছে। মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও সহায়তা সেই যোগাযোগের ভিত্তি হয়ে আছে। স্বর্ণালি সেই ঐতিহ্যে ভারতীয়রা আজ আর পুরো ভরসা রাখতে পারছে না বলেই মনে হয়। দেশটির সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক ভাষ্যগুলোয় সেই মনোজাগতিক সংকটের ছাপ মেলে হামেশা।

সেই তুলনায় চীনের ভাষা-সাহিত্য-মুভির প্রভাব ঢাকায় বিরল। চীনপন্থী দল-উপদল-গণসংগঠন বলে এখন আর স্পষ্ট কিছু নেই এখানে। আমাদের সাহিত্যে কলকাতার মতো ঐতিহাসিক কোনো চীনা ভরকেন্দ্র নেই। ইট-সিমেন্ট-বালু-রডের গাঁথুনি এবং মাওবাদ ছাড়া বেইজিং বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশেষ কিছু দিতে পারেনি এখনো। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রেও চীন থেকে আমরা ভবিষ্যতে ঠিক কী নিতে পারব, বলা মুশকিল। সঙ্গে রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের তিক্ত স্মৃতি।

অথচ এর বিপরীতে তুলনা করা যায় মুক্তিযুদ্ধে আহত-নিহত ভারতীয় যোদ্ধাদের অবদানের কথা, শরণার্থীদের প্রতি আসাম-ত্রিপুরা-পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সহমর্মিতার স্মৃতি। যুদ্ধোত্তর দিনগুলোতেও ভারত অবশ্যই নবীন রাষ্ট্রে বড় ভরসা ছিল। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্পর্ককে ‘রক্তের বন্ধন’ বলে ভুল বলেননি। গত দশকে স্থল ও সমুদ্রসীমানা নিয়ে বোঝাপড়ায় সামান্য অপূর্ণতাসহ অনেকখানি ঝামেলা মেটানো গেছে দুই দেশের মধ্যে। কোভিডের আগ পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানিও বেড়েছে কিছু। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে এসব গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। ভারতের ভিসা পাওয়ার ব্যবস্থাপনায়ও বড় ধরনের সংস্কার ঘটেছে। বাংলাদেশিদের বছরে প্রায় ১৫ লাখ সফর হয় ভারতে। ভিসা ব্যবস্থাপনার সংস্কারে লাভবান হয়েছে উভয় পক্ষ।

তবে ভারত যে সময় যতটা দিয়েছে, ঢাকার প্রতিদান ছিল বহুগুণ বেশি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে ভারত যে অগ্রাধিকার পেল, ভারতীয় ভাষ্যকারদের কলমে তার কিন্তু কোনো প্রশংসা পাওয়া গেল না। এর আগে উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতির সহায়তায় নিজের সীমানা দিয়ে স্থল ও নৌপথে সর্বাত্মক যোগাযোগ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। একই অঞ্চলের নিরাপত্তাসংকট সামলাতেও ভারতের চাওয়া পূরণ হয়েছে। নয়াদিল্লির বড় প্রত্যাশা ছিল এসব। বন্ধুত্বকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশ তা মিটিয়েছে। এভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অডিট করলে বাংলাদেশের আন্তরিকতার ছাপই বেশি নজরে পড়ে। কিন্তু ছোট প্রতিবেশীকেই কেন বেশি দিতে হবে? কেন ভুলে যাব, ইতিহাসে কোনো নিবেদনই চিরস্থায়ী নয়। আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কে বন্ধুত্ব ও দূরত্বও স্থায়ী কিছু নয়।

একতরফা ভালোবাসায় সম্পর্ক গভীরতা পায় না। পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে নির্বাচনকালে বাংলাদেশবিরোধী যেসব কদাকার প্রচারণা চলে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বন্ধুত্বকে গভীরতা দেওয়া দুরূহও বটে। এসব রাজনৈতিক প্রচারণা বাংলাভাষীদের মনস্তত্ত্বকে ১৯৪৭ পেরিয়ে সামনে এগোতে দিচ্ছে না। গুজরাল-ডকট্রিন থেকে বহুদূর সরে গেছে সম্পর্কের লক্ষ্মণরেখা। আন্তনদী সংযোগ প্রকল্পগুলো যে বাংলাদেশের হৃদয়ে কতটা উদ্বেগ তৈরি করেছে, ভারতের হৃদয় তা কতটা বুঝতে চেয়েছে? ‘বাংলাদেশিরা হলো উইপোকার মতো’—এমন অভিধার জন্যও সীমান্তের ওপার থেকে কেউ দুঃখ প্রকাশ করেনি। ধারাবাহিক এসব দূরত্ব ও বন্ধ্যত্বের মধ্যেই চীনের আবির্ভাব।

সূত্র: প্রথম আলো
আলতাফ পারভেজ: দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক ( আংশিক)
তারিখ: সেপ্টম্বর ০১, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ