Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাশিয়া-ইউক্রেন তুমুল যুদ্ধ কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:লিয়াম কলিনস।

সম্প্রতি ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়া অধিকৃত খেরসনে পাল্টা আঘাত হেনেছেন। এ ঘটনা থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই তাঁর আগের অনেক রাজনৈতিক নেতার মতো এই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যে যুদ্ধ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আগে থেকে যেটা ধারণা করা হয়, তার থেকেও দীর্ঘস্থায়ী হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। কিন্তু শুরু থেকেই পুতিন ও তাঁর সেনানায়কেরা ইউক্রেনে অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। ২৮ আগস্ট খেরসনে পাল্টাহামলার ঘটনাটি বিবেচনা করা যাক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ এ ঘটনাকে ‘শত্রুকে পিষে ফেলার জন্য ধীর হামলা’ বলে অভিহিত করেন।

প্রকৃতপক্ষে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে আফগানিস্তান, ইরাক, বসনিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। ২০০৮ সালের জর্জিয়া যুদ্ধ ও ২০১৪ সালের ইউক্রেন যুদ্ধের মাঠপর্যায়ের গবেষণার সুযোগ হয়েছে।

আমার বিবেচনায় রাশিয়া এই যুদ্ধে প্রাথমিক যে কৌশল নিয়েছিল, তা ভুল পরিকল্পনা, তার চেয়েও খারাপ প্রয়োগকৌশল ও ইউক্রেনীয়দের শক্ত প্রতিরোধের কারণে তা ভেস্তে গেছে। রাশিয়া পরিকল্পনা করেছিল, তাদের সেনাবাহিনী খুব দ্রুত কিয়েভ দখল করবে এবং দেশটির সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করবে।

অনেকে ভেবেছিলেন, রাশিয়ার হামলায় কয়েক মাসের মধ্যেই কিয়েভের পতন হবে। কিন্তু সেই ভাবনা ভুল প্রমাণ করে রাশিয়ার সেনাদল মার্চ মাসেই কিয়েভ অঞ্চল থেকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য হয়েছে।

এ ছাড়া কিয়েভের নিকটবর্তী খারকিভের আশপাশের বড় একটা এলাকা পাল্টাহামলা চালিয়ে ইউক্রেনের সেনারা ফিরিয়ে নিয়েছেন। ইউক্রেনের উত্তর–পূর্ব প্রদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দেশটির তৃতীয় জনবহুল শহর খারকিভ।

যুদ্ধকৌশলের পরিবর্তন

যুদ্ধ যতই প্রলম্বিত হয়, ততই সেটা ভিন্ন চরিত্র ধারণ করে। ইউক্রেন যুদ্ধও এর ব্যতিক্রম নয়। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরুর সপ্তাহগুলো ছিল ম্যানুভার বা সামরিক কৌশল যুদ্ধ। শত্রুর অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে ইউক্রেনের সেনারা যেখানে যেমন প্রয়োজন, সেখানে তেমন আক্রমণ করেছেন।

এটা স্পষ্ট যে সামরিক কৌশলের যুদ্ধে রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেন সমরশক্তিতে অনেক ছোট হওয়া সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত ভালো করেছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার সামরিক বাজেট ছিল ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাজেট ৪৭০ কোটি ডলার। ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার বাজেট ১০ গুণ বেশি। সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, সক্রিয় সেনাবাহিনী ও সাঁজোয়া যানের দিক থেকে ইউক্রেনের চেয়ে অনেক এগিয়ে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনাসংখ্যা যেখানে ৯ লাখ, সেখানে ইউক্রেনের সেনাসংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার। রাশিয়ার সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৫৭, ইউক্রেনের ৩ হাজার ৩০৯।

সামরিক কৌশল যুদ্ধ ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করতে হলে একটি সুপ্রশিক্ষিত ও সুদক্ষ বাহিনী প্রয়োজন। গত ছয় বছরে পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তায় এ ধরনের যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত বাহিনী গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন। এ ধরনের যুদ্ধের অংশ হিসেবে যেখানে প্রতিরোধ গড়ার দরকার (যেমন কিয়েভ), সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। আবার যেখান থেকে পশ্চাৎপসারণ করা দরকার, সেখান (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

শুরুর দিনগুলোতে ভজকট অবস্থা পাকিয়ে ফেলার পর রাশিয়ার সেনানায়কেরা এখন বুঝতে পারছেন, একটি ম্যানুভার ধরনের যুদ্ধে জেতার মতো দক্ষতা তাঁদের নেই। ফলে তাঁরা যুদ্ধের ধরন পাল্টে ‘ওয়ার অব অ্যাটরিশন’ বা ক্ষয়ের যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছেন তাঁরা। এ ধরনের যুদ্ধে সেনাবাহিনী ও সামরিক সরঞ্জামের নড়াচড়া সীমিত করে ফেলা হয়। নির্দিষ্ট কিছু এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু করে সেনাবাহিনী ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়, যাতে করে শত্রুপক্ষকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা যায়।

‘ওয়ার অব অ্যাটরিশন’ যুদ্ধের লক্ষ্য হচ্ছে, শত্রুকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়া। এ ধরনের যুদ্ধের বড় দৃষ্টান্ত হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। বিশাল গোলন্দাজ বাহিনী থাকা সত্ত্বেও সেনাদলের অগ্রসরতা ছিল ধীরগতির। কেননা দুই পক্ষই পরিখা খুঁড়ে অবস্থান নিয়েছিল এবং তাতে করে সেনাবাহিনী আর অগ্রসর হতে পারছিল না।

রাশিয়ার এখন ‘ওয়ার অব অ্যাটরিশন’ যুদ্ধের কৌশল বেছে নেওয়ার কারণ হলো, তাদের বিশাল সেনাবাহিনী রয়েছে।

ইউক্রেনের প্রতিরোধ ও শহরাঞ্চলের যুদ্ধ

২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল, সে সময় ইউক্রেনের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দনবাস অঞ্চলের যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এবারের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ও কিয়েভ রক্ষার ক্ষেত্রেও স্বেচ্ছাসেবকেরা একই ভূমিকা পালন করেন। হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক হাতে রাইফেল কিংবা ধারেকাছে যে যা অস্ত্র পেয়েছেন, সেটাই তুলে নিয়েছেন। অনেকে রাশিয়ার সেনাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র হাতেই রাজধানী রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

রাশিয়ার অধিকৃত এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা, চোরাগোপ্তা হামলা ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। বন্দর শহর মারিউপোলের যুদ্ধ তিন মাসের মতো স্থায়ী হয়েছে। এ যুদ্ধে ইউক্রেনের কয়েক হাজার সেনা দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে তাঁদের চেয়ে ১০ গুণ বড় একটা বাহিনীকে মাসের পর মাস ঠেকিয়ে রাখা যায়।

শহরাঞ্চলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ার পরও রাশিয়ার সেটা এড়ানোর কোনো উপায় নেই। স্থানীয় সরকার ও রাজনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি এসব শহর। যদি ইউক্রেনের ভূমি অধিকারে নেওয়া ও সেটা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাশিয়া এ যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে তাদের বাহিনীর শহরাঞ্চলের লড়াই এড়ানোর সুযোগ নেই। সুপ্রশিক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ প্রতিরোধযোদ্ধাদের একটি শহরে লুকিয়ে যুদ্ধ চালানোর মতো অসংখ্য জায়গা রয়েছে।

তাহলে কী ঘটবে

রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখন যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে কিয়েভ অধিকারে নিতে তাদের অন্তত এক দশক লেগে যাবে। প্রতিনিয়ত যেভাবে অর্থ ও লোক ক্ষয় হচ্ছে, তাতে রাশিয়া এত দিন পর্যন্ত এই যুদ্ধ টেনে নিয়ে যেতে পারবে বলে মনে হয় না। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, দুই পক্ষের এক পক্ষ পরিপূর্ণ পরাজিত কিংবা বিধ্বস্ত হওয়ার আগপর্যন্ত এ ধরনের যুদ্ধ চলতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ব্যাপ্তি কয়েক বছর পর্যন্ত হতে পারে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত অপর পক্ষকে হারাতে পারবে, এমন সক্ষমতা দেখাতে পারেনি। এর ফলাফল হলো, এ যুদ্ধও রাশিয়ার জন্য আরেকটি বিপর্যয়কর যুদ্ধ হতে যাচ্ছে। এর আগে, আফগানিস্তানে ১০ বছরব্যাপী যুদ্ধের ক্ষেত্রেও তাদের একই দশা হয়েছিল। আবার রাশিয়ার অধিকৃত কোনো অঞ্চল ছেড়ে দিতে ইউক্রেন সম্মত হবে বলে মনে করি না। আরেকটি বিষয় হলো, যত সময় গড়াবে, ততই এ যুদ্ধ ইউক্রেনের পক্ষে যেতে পারে। কেননা পশ্চিমাদের কাছ থেকে নতুন নতুন যুদ্ধসরঞ্জাম পাচ্ছে।

**** এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ মনোজ দে
লিয়াম কলিনস প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, মডার্ন ওয়ার ইনস্টিটিউট, ইউনাইটেড স্টেট মিলিটারি একাডেমি ওয়েস্ট পয়েন্ট।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ