Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সরকারি কর্মকর্তা ।এমন স্লোগান দিতে পারেন না: ব্যারিস্টার সুমন

Share on Facebook

লেখক: মানসুরা হোসাইন।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন) ফেসবুক লাইভে চারপাশের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে প্রায়ই আলোচিত হন। সম্প্রতি তাঁকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়ার পর আবার আলোচনায় এসেছেন তিনি।

যুবলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সায়েদুল হকের বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শবিরোধী এবং অরাজনৈতিক আচরণের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে এবং এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়েছে। তবে সায়েদুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি দলের সুনাম নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ বা বক্তব্য কখনোই দেননি।

সোমবার মুঠোফোনে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন সায়েদুল হক। শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন স্লোগান দেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে স্লোগান দেওয়ার ভিডিও দেখে সায়েদুল হক ফেসবুক লাইভে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ওসি এ ধরনের স্লোগান দিতে পারেন না। এরপরই সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতির চিঠি পান তিনি।

গত শুক্রবার ফেসবুক লাইভে সায়েদুল হক বলেন, ‘…মায়ের চেয়ে যখন মাসির দরদ বেশি হয়, তখন বুঝে নেবেন আপনার অবস্থা কিন্তু ভালো না। ’৭৫ সালের আগে বঙ্গবন্ধুর মায়ের মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি কান্নাকাটি করছিল বর্তমানে সারা বিশ্বে যে বেইমান হিসেবে পরিচিত, বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিত সেই খন্দকার মোশতাক। তার কান্নায় নাকি বোঝা যাচ্ছিল না যে বঙ্গবন্ধুর মা মারা গেছেন নাকি খন্দকার মোশতাকের মা। এর পরের ইতিহাস তো আপনারাই জানেন। এই মোশতাকই ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করেছে।’

অনেক ওসি ও পুলিশ কর্মকর্তা দলমতের ঊর্ধ্বে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। এই ওসির (আক্তার হোসেন) কর্মকাণ্ডের কারণে তাঁদের অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, এ নিয়েও প্রশ্ন করেন সায়েদুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওসি যে এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন, সেখানকার জনগণ ভাবতে পারেন ওসি সাহেব তো নিজেই আওয়ামী লীগার।

সায়েদুল হক বলেন, ‘যমুনা টেলিভিশনে দেখলাম, ওসি সাহেব শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে স্লোগান দিচ্ছেন। এটি কোনো সরকারি অনুষ্ঠান ছিল না। এটি ছিল রাজনৈতিক অনুষ্ঠান। ওসি সাহেব জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানের পর বলেন, আমরা সবাই মুজিব সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা। সরকারি কর্মকর্তা এমন স্লোগান দিতে পারেন না। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্লোগান দিয়ে ওসি সাহেব সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ লঙ্ঘন করেছেন। আমি এ কথাটাই বলেছিলাম।’

সায়েদুল হক সংগঠন থেকে অব্যাহতির বিষয়টিকে দেখছেন তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে। এ অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘একদল ফেসবুকে প্রচার করেন আমি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানের বিরোধিতা করেছি। অথচ বিষয়টি তেমন ছিল না। আমি ওসি সাহেবের স্লোগান দেওয়া বেমানান এবং তা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলেই বলেছি। আমি লাইভে এটাও বলেছি, আওয়ামী লীগে আর কোনো নেতা কি নেই যে তাঁকেই স্লোগান ধরতে হবে? অথচ বলা হচ্ছে, আমি জয় বাংলার বিরোধিতা করেছি।’

দল থেকে সাময়িক অব্যাহতির চিঠি পাওয়া প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর সায়েদুল হক বলেন, সংগঠনের এই সিদ্ধান্তকে তিনি ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন। তবে তাঁকে ঠিক কোন ঘটনায় বা কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা চিঠিতে উল্লেখ নেই।

তিনি বলেন, ‘তারপরও বলব, আমি এ পর্যন্ত যা বক্তব্য দিয়েছি, তা ঠিক দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা হাইকোর্টের একটি রায়ের কথাও উল্লেখ করেছেন। তবে আমি বলছি, হাইকোর্টের অর্ডারে সরকারি অনুষ্ঠান শেষে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করার কথা বলা আছে। ওসি সাহেব যে অনুষ্ঠানে স্লোগান দিয়েছেন, তা কিন্তু সরকারি কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। আর ওসি সাহেবকে আমি চিনি না, ব্যক্তিগতভাবে কোনো শত্রুতাও নেই বা এত আলোচনা-সমালোচনার পর আমি নিজে বা ওসি সাহেব এ নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি।’

সায়েদুল হক জানান, ২০০১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্‌দীন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপরেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, ‘জীবন-যৌবন শেষ করলাম দলের জন্য। সত্য কথা বলি, তাই আমার শত্রুও বেশি। আমি চাইলে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারি, তবে তা করব না। আমি মনে করি, ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দলের স্বার্থ বড়। দলের প্রয়োজনে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, দলের প্রয়োজনে ছেড়ে দিয়েছে। দল চাইলে স্থায়ীভাবেও আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করতে পারে।’
সায়েদুল হকের সঙ্গে কথার বিভিন্ন পর্যায়ে ঘুরেফিরে ওসির স্লোগানের প্রসঙ্গ আসে।

সায়েদুল হক সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯–এর কথা উল্লেখ করে বলেন, এতে সরকারি কর্মচারীর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে বলা হয়েছে। কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে তার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না, অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারেই সহায়তা করতে পারবেন না তা স্পষ্ট করেই বলা আছে। আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, জনসম্মুখে বেতার বা টেলিভিশনে কোনো বক্তব্য বা এমন বিবৃতি বা মতামত প্রকাশ করবেন না, যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারে। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত করতে পারবেন না সরকারি কর্মচারীরা।

৭ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্যাডে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সই করা চিঠিতে সায়েদুল হককে দলীয় আদর্শ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘আপনার বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শবিরোধী এবং অরাজনৈতিক আচরণের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে; যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট করেছে।’ এ ছাড়া এর আগে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে জবাব সন্তোষজনক বলে বিবেচিত না হওয়ায় সাম্প্রতিক কার্যকলাপের আলোকে গঠনতন্ত্রের ২২ (ক) ধারা অনুযায়ী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশক্রমে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলেও অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। অব্যাহতিপত্র পাওয়ার পরও সায়েদুল হক ফেসবুকে ভিডিওতে তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন।

সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং অরাজনৈতিক আচরণের অভিযোগে সায়েদুল হক সংগঠনের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছিলেন গত ২৮ জুন। এতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসের কর্মসূচি, দলীয় কর্মকাণ্ড এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানানো হয়েছিল। চলতি বছরের ৫ জুলাই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আইন সম্পাদক হিসেবে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে সায়েদুল হক বলেছিলেন, পদটিতে দায়িত্ব পাওয়ার পর সিলেট বিভাগের বিভিন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণের চেষ্টা করেছেন। দলের ভাবমূর্তি সব সময় রক্ষা করে চলবেন বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগই বাংলাদেশের প্রথম যুব সংগঠন, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান পদে আসেন শেখ মনির বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ। আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আসেন মাইনুল হোসেন খান নিখিল। নিখিল আগে যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ছিলেন। তবে ফজলে শামস পরশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। ক্যাসিনো–কাণ্ডে যুবলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশের পর ভাবমূর্তি–সংকটে পড়া সংগঠনটির নেতৃত্বে আনা হয়েছিল তাঁকে। এরপর কমিটিতে আইন সম্পাদক করা হয়েছিল তরুণদের মধ্যে আলোচিত সায়েদুল হককে।

সায়েদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর দুই বা এক বছর পর আর এ কমিটি থাকবে না। কমিটিতে না থাকলেও আমি বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করব।’

যাঁর স্লোগানকে কেন্দ্র করে এত আলোচনা, পালং মডেল থানার সেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেকোনো অনুষ্ঠানে স্লোগান দেওয়া যাবে বলে হাইকোর্টের একটি রুল আছে। আমি পুলিশে চাকরি করি এটা ঠিক। তবে আমি তো এ দেশের নাগরিক। সেই অনুষ্ঠানে এমপিসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। আমি পুলিশের পোশাকে সে অনুষ্ঠানে ছিলাম না। সিভিল পোশাকে ছিলাম। আমি মনে করি, আমি কোনো নীতিমালা লঙ্ঘন করি নাই।’

গত বছরের ১০ মার্চ হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, ‘জয় বাংলা’ হবে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। আদেশে বলা হয়, জাতীয় দিবসগুলোয় উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী ও রাষ্ট্রীয় সব কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান যাতে উচ্চারণ করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি শেষে ছাত্র-শিক্ষকেরা যাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণ করেন, সে জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন হাইকোর্ট।

২০১৯ সালের ৩০ মার্চ প্রথম আলোতে ‘সেতু’ আর ‘লাইভ’ নিয়ে আছেন যে ব্যারিস্টার শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সায়েদুল হক এ প্রতিবেদনে বলেছিলেন, চারপাশের সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ফেসবুকে লাইভ দেওয়ার কারণে আইনজীবী পরিচিতির চেয়েও মানবাধিকারকর্মী বা মানুষের বন্ধু হিসেবে তাঁর পরিচিতি বেড়েছে। অনেকে আড়ালে বা সামনেই তাঁকে ‘পাগল’ বলেও ডাকেন। গণমাধ্যমে কিশোর আদালতে বিচারাধীন কোনো শিশুর নাম-পরিচয় প্রকাশ না করাবিষয়ক রিটসহ জনস্বার্থে বেশ কিছু রিটও করেছেন সায়েদুল হক।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ১০, ২০২১
.

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ