Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাঘের মতো দু’দিন বেঁচে থাকাও ভালো – টিপু সুলতান

Share on Facebook

টিপু সুলতান (২০শে নভেম্বর,১৭৫০ – ৪ঠা মে,১৭৯৯) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তিনি একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে ভারতের বীরপুত্র বলা হয়। তিনি বিশ্বের প্রথম রকেট আর্টিলারি এবং বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করেছিলেন।

দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান ৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন ৷ শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রামে কাবেরী নদীর একটি ব-দ্বীপে নির্মিত একটি দুর্গ থেকে রাজ্য শাসন করতেন৷ বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রাম দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মান্ডিয়া জেলার অন্তর্গত৷ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে যুদ্ধে ১৭৯৯ খ্রীস্টাব্দে নিহত হন। টিপুর এক সেনাপতি মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মেলান৷ পরে তাঁর পরিবারের লোকজনকে ভেলোরের দুর্গে বন্দী করে রাখে ব্রিটিশ শাসকরা৷

টিপু সুলতানকে ডাকা হতো শের-ই-মহীশূর; উপাধিটা ইংরেজদেরই দেওয়া। তাঁর এই বাঘ (শের) হয়ে ওঠার পিছনে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত ছিল। মূল কারণ ছিল তাঁর অসাধারণ ক্ষিপ্রতা, দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা আর কৌশলপূর্ণ রাজ্য পরিচালনা – বাবার সুযোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন টিপু সুলতান। বাবা হায়দার, ১৭৪৯ খ্রীস্টাব্দে টিপু নামে এক ফকিরের দোয়ায় এক পুত্রসন্তান লাভ করেন এবং আনন্দচিত্তে ঐ ফকিরের নামেই ছেলের নাম রাখেন “টিপু”। মহীশূরের স্থানীয় ভাষায় (কানাড়ী ভাষা) ‘টিপু’ শব্দের অর্থ হলো বাঘ। হয়তো তাঁকে ‘শের-ই-মহীশূর’ ডাকার পিছনে এটাও একটা কারণ ছিল।

ছোটবেলা থেকেই টিপু বাঘের গল্প শুনতে ভালোবাসতেন। বাবাই তাঁকে বাঘের গল্প শোনাতেন। কিশোর বয়সে টিপু সুলতান বাঘ পুষতে শুরু করেন। বাঘ নিয়ে তাঁর ব্যগ্রতার শেষ ছিলো না। বাবার মৃত্যুর পর তিনি যখন সিংহাসনে আরোহণ করলেন, তখন বাবার পুরানো সিংহাসনটি তিনি ঠিক পছন্দ করলেন না। তাই তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠ কারিগর দিয়ে কাঠের ফ্রেমের উপর সোনার পাত বসিয়ে তার উপর মণিমুক্তা ও রত্নখচিত একটি সিংহাসন বানিয়ে নিলেন, যাকে “ব্যাঘ্রাসন”ই (Tiger throne) বলা যায়। কারণ আট কোণা ঐ আসনটির ঠিক মাঝখানে ছিল একটি বাঘের মূর্তি। ৮ ফুট চওড়া আসনটির রেলিংয়ের মাথায় বসানো ছিল সম্পূর্ণ স্বর্ণে তৈরি দশটি বাঘের মাথা, আর উপরে উঠার জন্য ছিলো দুধারে, রূপার তৈরি সিঁড়ি। আর পুরো ব্যাঘ্রাসনটাই ছিল বাঘের শরীরের মতো ডোরাকাটা।

টিপু সুলতানের উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন পন্ডিত পুরণাইয়া।টিপু সুলতান সামরিক তালিম নেন সরদার গাজী খান এর কাছ থেকে। টিপু সুলতান ছিলেন বহুভাষায় পারদর্শী।

টিপু সুলতানের রাজ্যের প্রতীক ছিল বাঘ। এই বাঘ ছিল তাঁর অনুপ্রেরণার মতো। তাঁর রাজ্যের পতাকায় কানাড়ী ভাষায় লেখা ছিলো “বাঘই ঈশ্বর”। তিনি সিংহাসনে বসে মাঝে মাঝেই বলতেন:

“ভেড়া বা শিয়ালের মতো দু’শ বছর বাঁচার চেয়ে বাঘের মতো দু’দিন বেঁচে থাকাও ভালো।”

তাঁর সমস্ত পরিধেয় পোষাক ছিল হলুদ-কালো রঙে ছাপানো আর বাঘের শরীরের মতো ডোরাকাটা। তিনি যে তলোয়ার ব্যবহার করতেন, তার গায়েও ছিলো ডোরা দাগ এবং হাতলে ছিল খোদাই করা বাঘের মূর্তি। তাঁর ব্যবহৃত রুমালও ছিল বাঘের মতো ডোরাকাটা। তাঁর রাজ্যের সমস্ত সৈনিকের পোষাকে থাকতো বাঘের ছবি। সৈন্যদের ব্যবহার্য তলোয়ার, বল্লম, বন্দুকগুলোর নল, কুদো, হ্যামারেও আঁকা থাকতো বিভিন্ন আকারের বাঘের প্রতিরূপ কিংবা মূর্তি। এমনকি তিনি তাঁর রাজ্যের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে, বাড়ির মালিকদেরকে বাড়ির দেয়ালে বাঘের ছবি আঁকার নির্দেশ জারি করেছিলেন। তখনও তাঁর বাঘ পোষার বাতিক যায়নি এবং রাজবাড়িতে বেশ কয়েকটি পোষা বাঘ ছিল। তার কয়েকটি আবার তাঁর ঘরের দরজার সামনে বাঁধা থাকতো।

১৭৮১ খ্রীস্টাব্দে ইংরেজ সেনাপতি হেক্টর মুনরো ও তাঁর বাহিনীর কাছে দ্বিতীয় মহীশূর যুদ্ধে টিপু ও তাঁর বাবা মারাত্মক নাজেহাল হন এবং টিপুর রাজ্যে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়, নিহত হয় অনেক সৈন্য। এমনিতেই তিনি প্রচন্ড ইংরেজ বিরোধী ছিলেন, তদুপরি এই পরাজয়ে তিনি আরো বেশি তেজদীপ্ত হয়ে ওঠেন। ঘটনাক্রমে ১৭৯৩ খ্রীস্টাব্দে হেক্টর মুনরোর একমাত্র পুত্র সুন্দরবনের সাগর দ্বীপে বাঘ শিকার করতে গিয়ে বাঘ আক্রমণে নিহত হয়। এই সংবাদ পেয়ে টিপুর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। তিনি এই ধারণা কাজে লাগিয়ে একটি বিচিত্র খেলনা বানিয়েছিলেন, যা সারা দুনিয়ায় “টিপু’স টাইগার” (Tipu’s Tiger) নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। ফরাসি যন্ত্রকুশলীদের দ্বারা নির্মিত প্রমাণ আকারের এই খেলনাটিতে ক্লকওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছিল। খেলনায় দম দিয়ে ছেড়ে দিলে এর সাথে লাগনো একটি অর্গান পাইপ থেকে রক্ত হিম করা বাঘের প্রচণ্ড গর্জন, আর এক ইংরেজের প্রচণ্ড গোঙানির আওয়াজ বের হতো। পুরো খেলনাটি ছিলো এরকম: একজন ইংরেজ একটি বাঘের থাবার মধ্যে অসহায়ভাবে পড়ে গোঙাচ্ছে আর একটা বাঘ প্রচন্ড আওয়াজ করে সেই ইংরেজের বুকের উপর চেপে গলা কামড়ে ধরতো। তখন ইংরেজটি তার হাত উঠিয়ে চেষ্টা করতো বাঘের মাথাটি এদিক-ওদিক সরিয়ে দিতে। ভিতরকার অর্গান থেকে আরো বেরিয়ে আসতো মহীশূর সুলতানের প্রিয় গজলের সুর। “টিপু’স টাইগার” বানানোর পিছনে একদিকে যেমন ছিলো তাঁর ইংরেজদের প্রতি উষ্মা, তেমনি অন্যদিকে ছিল প্রচন্ড ব্যাঘ্রপ্রীতি। সময় পেলেই তিনি বাঘটিতে দম দিতেন; কখনও কখনও রাতের পর রাত একই জিনিস দেখে গায়ের জ্বালা মেটাতেন।

টিপু সুলতানের ৪ জন স্ত্রী, ১৫ জন পুত্র এবং কমপক্ষে ৮ জন কন্যা সন্তান ছিল। কন্যাদের পরিচিতি অজানাই রয়ে যায়।

সূত্র: সংগৃহিত ( সৌজন্যে : উইকিপিডিয়া)
তারিখ : নভেম্বর ২০, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ