Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

৭৫ বর্গ কিমির দেশে একটি পরিবারের বাস

Share on Facebook

একটি দেশের আয়তন ৭৫ বর্গ কিলোমিটার। আর সেখানে বসবাস করে মাত্র একটি পরিবার। বিস্ময়কর হলেও এটিই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ। আর এই দেশটির জনসংখ্যা ২৬ জন।

দেশটির নাম ‘প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভার’। এ দেশের নিজস্ব মুদ্রা, নিজস্ব পাসপোর্ট, ভিসা-সবই রয়েছে। তবে প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভার নিজেকে দেশ ঘোষণা করলেও অস্ট্রেলিয়ার বাকি দেশগুলো কিন্তু একে দেশ হিসাবে মানতে নারাজ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

৫১ বছর আগে এক বিশেষ কারণে সরকারের একটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই ওই ভূখণ্ডকে দেশ হিসাবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন লিওনার্দ ক্যাসলে নামে এক ব্যক্তি। যেখানে তিনি থাকতেন, সেই পুরো ভূখণ্ডই আসলে লিওনার্দের সম্পত্তি ছিল। চাষের জমি ছিল তার। যা থেকে প্রতি বছর ৪ হাজার হেক্টর গম উৎপাদন হত। কিন্তু প্রশাসন গম কেনাবেচার নতুন নিয়ম চালু করে দেয়। যার ফলে ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল নয়, মাত্র ৯৯ একর জমিতে যে ফসল ফলত, তা তিনি বিক্রি করতে পারতেন।

প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বদলের জন্য অনেক দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। তার পরই তিনি নিজের ভূখণ্ডকে আলাদা দেশ হিসাবে ঘোষণা করে দেন। নাম রাখের প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভার।

নিজেকে রাজা ঘোষণা করেন। দেশের জন্য আলাদা মুদ্রা চালু করেন। নাম দেন হাট রিভার ডলার। এক হাট রিভার ডলারের মূল্য এক অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সমান রাখেন।

দেশের জন্য আলাদা পতাকা তৈরি করেন। সরকারি কাজকর্মের জন্য আলাদা সিলমোহর। এ ছাড়া পাসপোর্ট, ভিসা সবই আলাদা করে ফেলেন।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বাকি দেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশও প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভারকে স্বতন্ত্র দেশ মানতে চায় না। স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তাই ১৯৭০ সালে ২১ এপ্রিল দেশটির প্রতিষ্ঠা দিবসে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে আমন্ত্রণ জানান তিনি।

কারণ ব্রিটেনের রানী তখন অস্ট্রেলিয়ারও রানী ছিলেন। রানি যাননি কিন্তু তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ওই চিঠিই হাতিয়ার হয়ে যায় লিওনার্দের।

বিষয়টি পড়তে যতটা সহজ, বাস্তব তেমন ছিল না। প্রচুর আইনি জটিলতার মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়েছিল। এ দিকে তার নামে বকেয়া সরকারি করের বোঝাও বাড়ছিল। কারণ প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভারকে আলাদা দেশ হিসাবে কোনও দিনই মানেনি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।

ফলে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত আইন তার উপর প্রযোজ্য ছিল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নাগরিকদের কর দিতে হয় সরকারকে। লিওনার্দের নামেও সেই কর বরাদ্দ করা হত। ফলে বারবারই বিচার চেয়ে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল তাকে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। তবে হাল ছাড়েননি লিওনার্দ।

২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি নিজে রাজা ছিলেন। তারপর তার ছেলে গ্রেমির মাথায় রাজ মুকুট পরিয়ে দেন। ওই বছরই সুপ্রিম কোর্ট তাকে নোটিস পাঠিয়ে বকেয়া ২৭ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার কর দ্রুত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যত দিন যাচ্ছিল, আরও আইনি জটিলতায় ফেঁসে যাচ্ছিলেন লিওনার্দ।

২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় তার। কিন্তু এ সবের মধ্যে একটাই লাভ হয়েছিল প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভারের। পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করেছিল স্বঘোষিত বিশ্বের ছোট দেশটি দেখার জন্য।

প্রতি বছর এর থেকেই মোটা অর্থ উপার্জন হতে শুরু করে লিওনার্দ এবং তার পরিবারের। এ দেশের ঢুকতে গেলে আলাদা ভিসা নিতে হত পর্যটকদের। কিন্তু লিওনার্দের মৃত্যুর পর থেকে দেশের অর্থনীতি ক্রমে ক্ষতির মুখ দেখতে শুরু করে। পর্যটকদের আনাগোনাও কমতে শুরু করেছিল। তার উপর অতিমারির ধাক্কা দোসরের মতো কাজ করে। ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি লিওনার্দের বংশধরেরা দেশের সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা করেন।

পরিস্থিতি এমনই যে, দীর্ঘ ৫১ বছর ধরে করের যে বোঝা প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভারের উপর চাপানো হয়েছে, তা পরিশোধ করতে গেলে পুরো দেশটাকেই বেচে দিতে হতে পারে।

এই দেশে সে ভাবে ঘুরে দেখার কিছু নেই। একটি অফিস, চার-পাঁচটি বাড়ি এবং বিস্তৃত চাষের জমি। তবে দেশটি নিজেই একটি স্বতন্ত্র ইতিহাসের সাক্ষী। সে কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা আসতেন।

তবে বিশ্বের আর কোনও দেশ একে দেশ হিসাবে মনেই করে না। ২০০৮ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল হাট রিভারের জনতার পাসপোর্টকে ‘ফ্যান্টাসি পাসপোর্ট’ উল্লেখ করেছিল।

অস্ট্রেলিয়ার শহর পারথের ৫১৭ কিলোমিটার উত্তরে হাট নদীর তীরে অবস্থিত প্রিন্সিপ্যালিটি অব হাট রিভারের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আজও ভরসা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ওই চিঠিটুকুই।

সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০৪, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ